শরীর থেকে টক্সিন দূর করে ডিটক্স ওয়াটার

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৫ ডিসেম্বর ২০২২, ০৮:৫৪

গতিশীল জীবনে ফাস্টফুডের চাহিদা বাড়ছে দিনদিন। সেই সঙ্গে অনেকেই ফলের বদলে কৃত্রিম ফ্রুট জুস খাচ্ছেন। বেড়েছে নরম পানীয়ের চাহিদাও। কৃত্রিম পানীয়, ফাস্ট ফুড, মাফিন-বার্গারের মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণ লুকনো চিনি, লবণ। যা অজান্তেই আমাদের প্রদাহ জনিত সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। সেই সঙ্গে শরীরে আসে অস্বস্তিও। শরীরে বিষের পরিমাণ বেড়ে যায়।

অনিয়মিত খাওয়া-দাওয়া, শরীরচর্চার অভাব আর স্ট্রেসের ফলে শরীরের যে অঙ্গ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তা হল লিভার। আর সুস্থ থাকার জন্য লিভার সুস্থ রাখাই সবচেয়ে জরুরি। তার ওপর শুরু হয়ে গিয়েছে পার্টি, বিয়ের মরসুম। তাই খাওয়া দাওয়া, মদ্যপান সবই চলবে লাগামছাড়া। এই সময় লিভার সুস্থ রাখার জন্য তাই প্রতিদিন পান করুন এই লিভার ডিটক্স ওয়াটার বা ডিটক্স জুস।

শীতে হাইড্রেটেড ও ফিট থাকতে বিভিন্ন ফল বা সবজি দিয়ে ডিটক্স ওয়াটার বা ডিটক্স জুস নিজেই বানিয়ে নিন। এগুলো আমাদের শরীর থেকে টক্সিন দূর করতে কাজ করে। এটি আমাদের শরীরকে ডিটক্সিফাই করে। সুস্থ ও ফিট থাকার জন্য ডিটক্স পানীয় একটি খুব সহজ এবং স্বাস্থ্যকর বিকল্প।

শরীরের ভেতরে থাকা সব দূষিত উপাদান বের করে দেওয়ার জন্যই ডিটক্স ওয়াটার-এর ব্যবহার। কোনো ধরনের রাসায়নিক পদার্থ ছাড়া বানিয়ে নেওয়া যায় ডিটক্স ড্রিংকস। এক্ষেত্রে পানি, বিভিন্ন ধরনের ফল, পুদিনা পাতা, আদা এই ধরনের উপাদান ব্যবহার করা হয়। তবে কিছুক্ষেত্রে সবজিও ব্যবহার করা হয়। এগুলোর বিভিন্ন ধরনের হেলথ বেনিফিটস আছে। এগুলো আমাদের পরিপাকতন্ত্র পরিষ্কার রাখে। এটি ত্বককে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। ওজন দ্রুত কমে যায়। এতে ক্যালরির পরিমাণ খুবই কম। এটি কিডনি এবং লিভার পরিষ্কার করে। এগুলো পরিপাকতন্ত্রকে সুস্থ রাখে। এটি আপনাকে হাইড্রেটেড রাখে। এতে আপনার মেটাবলিজম দ্রুত কাজ করে।

সারাদিনে দুই লিটার ডিটক্স ওয়াটার পান করতে পারেন। সকালে ঘুম থেকে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে খালি পেটে সাধারণ পানির পরিবর্তে ডিটক্স ওয়াটার পান করুন। সঙ্গে সঙ্গে শক্তির মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। প্রতি এক ঘণ্টায় এক গ্লাস পানি পান করুন। আপনি চাইলে প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের ডিটক্স ওয়াটার তৈরি করতে পারেন। গরমে এই পানি আপনাকে ভিতর থেকে ঠান্ডা রাখে। প্রতিদিন সকালে তাজা পানি দিয়ে বয়ামটি পূরণ করতে এবং তাজা ফল এবং ভেষজ ব্যবহার করতে ভুলবেন না। এই ডিটক্স ওয়াটার শরীরের পিএইচ সিস্টেম ঠিক থাকে, হজমশক্তি ভালো থাকে।

বিট ডিটক্স ওয়াটার

রক্তাল্পতা ও রক্তচাপের সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করতে কাজে আসতে পারে বিট। এ ছাড়াও থাইরয়েড ও হৃদ্‌যন্ত্রের সমস্যা থেকে বাঁচতেও বিট দারুণ কাজ করে। বিটে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকে। ফলে বাড়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। কোলেস্টরলকেও নিয়ন্ত্রণে রাখে এই সব্জি। নিয়ম করে বিটের রস পান করতে হবে সকালে। ভাল করে পরিষ্কার করে ব্লেন্ডারে ঘুরিয়ে তৈরি করে নিতে পারেন বিটের স্মুদিও।

আপেল ডিটক্স ওয়াটার

প্রতিদিন একটি আপেল খেলে রোগ-ব্যাধি দূরে থাকে। প্রয়োজন পড়ে না চিকিৎসকের। আপেলে থাকা ফাইবার স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে উপকারী। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। তা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। আপেলে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টের উপস্থিতির কারণে কোষগুলো থেকে ক্ষতিকর পদার্থ সহজেই নির্গত হয়। বিটের মতো আপেল দিয়েও একই রকমের পানীয় তৈরি করে ফেলতে পারেন। তবে ডায়াবিটিস রোগীদের ক্ষেত্রে একটি সামলে খেতে হবে আপেলের তৈরি পানীয়।

গাজর ডিটক্স ওয়াটার

শীতের বাজারে প্রচুর পাওয়া যায় গাজর। গাজরে থাকে বিটা ক্যারোটিন। আমাদের শরীর এই ক্যারোটিনকে ভিটামিনে রূপান্তরিত করে। এই উপাদান চোখ ভাল রাখতে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অত্যন্ত কার্যকর। ভিটামিন এ শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বার করে দিতে সাহায্য করে। তাই সকালে এক কাপ গাজরের রস পান করতে পারেন সকাল সকাল।

লেবু ডিটক্স ওয়াটার

লেবু ডিটক্স ওয়াটার হজমশক্তি উন্নত করতে এবং ওজন কমানোর জন্য সেরা ঘরোয়া প্রতিকার। লেবু মানে ভিটামিন সি। লেবু ধুয়ে তিন থেকে চারটি পাতলা করে কেটে নিন। একটি কাচের পাত্রে পরিষ্কার জল ভরে তাতে এই টুকরোগুলি মিশিয়ে নিন। লেবুর টুকরো সহ দুই-তিনটি পুদিনা পাতা দিন। সারাদিন ধীরে ধীরে চুমুক দিয়ে এই জল পান করুন। এটি শরীরকে হালকা করে, ভিটামিন সি-এর ঘাটতি দূর করে, ডায়েট করতে সাহায্য করে, ত্বককে উজ্জ্বল করে এবং শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে। শক্তির মাত্রা বৃদ্ধি পায়।

শসা ডিটক্স ওয়াটার

শসার ডিটক্স ওয়াটারে প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ভিটামিন বি পাওয়া যায়। এটি প্রস্তুত করতে, এক গ্লাস জলে কিছু শসার টুকরো রাখুন, এবার লেবুর রস, কালো লবণ এবং কিছু পুদিনা পাতা যোগ করুন, একটি চামচ দিয়ে মিশিয়ে পান করুন।

কমলা ডিটক্স ওয়াটার

শীতে শরীর সুস্থ রাখে কমলা লেবু। কমলার ডিটক্স ওয়াটারে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া যায়। এটি শরীরের চর্বিকে শক্তিতে রূপান্তর করতে সাহায্য করে, তাই এটি শরীর থেকে টক্সিন দূর করে এবং ওজন কমায়। কমলালেবুর টুকরোগুলো পানিতে কয়েক ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখেই পান করতে পারেন। তাতেই মিলবে সব পুষ্টিগুণ।

দারুচিনি ডিটক্স ওয়াটার

ডায়েটিশিয়ানরাও ডিটক্স ওয়াটারে এক টুকরো দারুচিনি যোগ করার পরামর্শ দেন। দারুচিনি ও আদার ডিটক্স ওয়াটার শরীরের মেটাবলিজম ঠিক রাখে, প্রদাহ দূর করে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও দারুচিনি রক্তে শর্করার ভারসাম্য বজায় রাখে।

(ঢাকাটাইমস/৫ ডিসেম্বর/আরজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

ফিচার এর সর্বশেষ

যে পাঁচ সমস্যায় আক্রান্তরা গুড় খাওয়ার আগে একবার ভাবুন, নইলে...

সাজেদুর রহমান শাফায়েতের স্বপ্ন পৃথিবী ঘুরে দেখা

খাওয়ার পরপরই চা পান উপকার না ক্ষতি? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা

জ্বরের মধ্যে যে পাঁচ খাবার খেলেই বিপদ! জানুন, সাবধান হোন

গরমে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে ডায়াবেটিস রোগীদের! সুস্থ থাকবেন যেভাবে

মুখে দুর্গন্ধের কারণে হা করতেও অস্বস্তি লাগে? সমাধান কী জানুন

লিভার ভালো রাখে লাউ! ওজন এবং উচ্চ রক্তচাপও থাকে নিয়ন্ত্রণে

কিডনি ভালো রাখে আমের পাতা! উচ্চ রক্তচাপও থাকে নিয়ন্ত্রণে

ইফতার ও সাহরিতে বাহারি আয়োজন ধানমন্ডির দ্য ফরেস্ট লাউঞ্জে

বারবার ফোটানো চা খেলেই মারাত্মক বিপদ! বাঁচতে হলে জানুন

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :