৩০তম সম্মেলন: ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদক হতে চান ২৫৫ নেতা
প্রকাশ | ০৫ ডিসেম্বর ২০২২, ২৩:২৫ | আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২২, ২৩:২৮
আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৩০তম সম্মেলন মঙ্গলবার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনকে ঘিরে ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
দীর্ঘ বিরতির পর সম্মেলন হওয়ায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উচ্ছ্বসিত। সর্বশেষ, সংগঠনটির ২৯তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৮ সালের মে মাসে। সেবার সভাপতি হিসেবে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী দায়িত্ব পান। পরবর্তীতে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপর তাদেরকে ২০২০ সালের ৪ জানুয়ারি ভারমুক্ত করা হয়। জয়-লেখক ২ বছর ১১ মাস দায়িত্ব পালন করেন।
জয়-লেখক বিতর্ক
বিভিন্ন সময় ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে সাংগঠনিক বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেবার অভিযোগ রয়েছে জয়-লেখকের বিরুদ্ধে। এ বছরের আগস্টের পূর্বে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে চিঠির মাধ্যমে শত শত নেতাকে বিভিন্ন পদে পদায়ন করেছেন জয়-লেখক। পদায়নের এ ধারা এখনও চলমান রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, যত্রতত্র কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদায়নের কারণে বর্ধিত কমিটির পদধারীদের কোনো সুনির্দিষ্ট হিসেব নেই। বিষয়টি নিয়ে খোদ ছাত্রলীগেই রয়েছে অসন্তোষ।
সম্মেলনের মাধ্যমে বিভিন্ন ইউনিটের কমিটি দেবার নিয়ম থাকলেও সে নিয়মের তোয়াক্কা না করে প্রেস রিলিজের মাধ্যমে কমিটি দিতে থাকেন জয়-লেখক। এ বিষয়টিও বিতর্কের জন্ম দেয়।
এছাড়াও, সম্মেলনের তারিখ ঘনিয়ে আসলেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটের কমিটি দিতে পারেননি তারা। এরই জেরে গেল রবিবার রাতে কমিটির দাবিতে ঢাকা কলেজের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিক্ষুব্ধ হয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের গাড়িবহর অবরোধ করতে দেখা যায়।
সম্মেলনের প্রস্তুতি সম্পন্ন
মঙ্গলবার সাড়ে ১০টায় সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবার কথা রয়েছে। সে লক্ষ্যে এরইমধ্যে সম্মেলনের পূর্বপ্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে। নতুন নেতৃত্বের জন্য উন্মুখ নেতাকর্মীরা। সম্মেলনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ইতোমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেইটগুলোতে হিউম্যান স্ক্যানার বসানো হয়েছে। কয়েক স্তরের নিরাপত্তা পেরিয়ে প্রবেশ করতে হবে সম্মেলনস্থলে। কোন অঞ্চলের নেতাকর্মীরা কোন ফটক গিয়ে সমাবেশস্থলে ঢুকবেন তারও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে সম্মেলনস্থলে প্রবেশের জন্য খুলে দেওয়া হবে গেইট এবং বেলা ১১টা পর্যন্ত প্রবেশ করা যাবে সম্মেলনস্থলে।
সম্মেলন উদ্বোধন করবেন ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সঞ্চালনা করবেন সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। বিশেষ অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও উপস্থিত থাকবেন।
নেতা হতে চান কতজন?
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দুই শীর্ষ পদের জন্য মনোনয়নপত্র বিতরণ ও সংগ্রহ করা হয় ১ ডিসেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ছাত্রলীগ সূত্র বলছে, ২৫৫ জন প্রার্থী এবার মনোনয়নপত্র কিনেছেন। মনোনয়নপত্র কিনতে তিন হাজার টাকা করে দিতে হয়েছে প্রার্থীদের।
কেন্দ্রীয় সম্মেলনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি রেজাউল করিম সুমন ঢাকাটাইমসকে জানান, ‘এবারের সম্মেলনে সর্বোমোট ২৫৫ জন নেতৃত্ব প্রত্যাশী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে সভাপতি পদের জন্য ৯৬ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য ১৫৯ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।’
বন্ধ থাকবে যেসব সড়ক
ছাত্রলীগের ৩০তম সম্মেলন উপলক্ষে মঙ্গলবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আশেপাশের এলাকাসমূহে রাস্তা বন্ধ/রোড ডাইভারশন দেয়া হবে।
ডিএমপি সূত্র জানায়, যানজট পরিহারের জন্য রাজধানীর কাটাবন ক্রসিং, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ক্রসিং, কাকরাইল মসজিদ ক্রসিং, কাকরাইল চার্চ ক্রসিং, ইউবিএল ক্রসিং, হাইকোর্ট ক্রসিং, দোয়েল চত্বর ক্রসিং, ঢাবি মেডিকেল সেন্টার, জগন্নাথ হল ক্রসিং, ঢাবি ভাস্কর্য ক্রসিং, উপাচার্য ভবন ক্রসিং এলাকায় সম্মেলন শেষ না হওয়া পর্যন্ত ট্রাফিক ডাইভারশন চলবে।
সমাবেশ স্থলের আশেপাশের অঞ্চলে চলাচলের জন্য নগরবাসীকে এসব রাস্তা এড়িয়ে ভিন্ন রাস্তা ব্যবহারের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/০৬ডিসেম্বর/এসকে/কেএম)