জাতীয় ঈদগাহ ময়দান চায় বিএনপি

সেখানে সমাবেশের নজির আছে? প্রশ্ন পুলিশের

প্রকাশ | ০৬ ডিসেম্বর ২০২২, ১০:৫১ | আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২২, ১১:৪১

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

গণসমাবেশের জন্য নয়াপল্টনের বিকল্প হিসেবে জাতীয় ঈদগাহ ময়দান চায় বিএনপি। তবে এখন পর্যন্ত তারা পুলিশের কাছে লিখিত কোনো আবেদন করেনি। মৌখিক আশ্বাস পেলে আনুষ্ঠানিক চিঠি দেবে দলটি।

এর আগে নয়াপল্টনের বিকল্প হিসেবে বিএনপি রাজধানীর আরামবাগ মোড় ব্যবহারের মৌখিক অনুমতি চেয়েছিল। কিন্তু সরকার ও পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, উন্মুক্ত মাঠ ছাড়া কোনো সড়ক ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।

এর পর সোমবার সন্ধ্যায় মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) হায়াতুল ইসলাম খানের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। বৈঠকে ঈদগাহ মাঠের মৌখিক অনুমতি চান তিনি।

শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, ‘আমরা নয়াপল্টনের বিকল্প হিসেবে আরামবাগ মোড় ব্যবহারের অনুমতি চেয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ অনুমতি দেয়নি। পরে উন্মুক্ত স্থান হিসেবে হাইকোর্টের ঈদগাহ মাঠ ব্যবহারের বিষয়ে আলোচনা হয়।’

এ বিষয়ে মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) হায়াতুল ইসলাম খান মঙ্গলবার সকালে ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘বিএনপি এখন পর্যন্ত লিখিত কোনো অনুমতি চেয়ে আবেদন করেনি। আর অনুমতি দেবেন পুলিশ কমিশনার।’
 
জাতীয় ঈদগাহে সমাবেশ করার বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আলোচনায় তো কত ধরনের কথাই হয়েছে। তবে লিখিতভাবে কোনো আবেদন এখনও পাইনি।’

জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে সমাবেশের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে সমাবেশ করার নজির আছে? কখনো কেউ ঈদগাহে সমাবেশ করেছেন? তবে এখানে প্রধান বিচারপতির একটি বিষয় তো রয়েছেই।’

এদিকে সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হয়, তারা আর পুলিশ কিংবা সরকারের কাছে বিকল্প মাঠ ব্যবহারের প্রস্তাব নিয়ে যাবে না। সরকার অনুমতি না দিলে তারা নয়াপল্টনেই সমাবেশ করবে।

সভায় নেতারা বলেন, নয়াপল্টনের বিকল্প প্রস্তাব দিয়ে বিএনপি উদারতা দেখিয়েছে। কিন্তু সরকার তাতে সাড়া না দিয়ে শান্তিপূর্ণ সমাবেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।

ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশের চার দিন বাকি থাকলেও সমাবেশস্থল নিয়ে সংকট এখনো কাটেনি। স্থান নিয়ে সরকারের কঠোর মনোভাবের মধ্যে রবিবার বিকল্প স্থানে সমাবেশ করতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন দলটির নেতারা।

সোমবার সমাবেশের বিষয়ে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সাথে আলোচনা করেছেন শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। তিনি পুলিশের সঙ্গেও কয়েক দফা আলোচনা করেন।

বিএনপির নীতিনির্ধারকরা বলেছেন, কোনো অবস্থাতেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ব্যবহার করবেন না তারা। নয়াপল্টনের আশপাশে উপযুক্ত কোনো স্থানের অনুমতি দিলে তাদের আপত্তি নেই। তারা বলেন, সরকার উন্মুক্ত মাঠ ব্যবহারের কথা বলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু সোহরাওয়ার্দী উদ্যান উন্মুক্ত কোনো মাঠ নয়। এটি পার্ক।

স্থান নিয়ে এমন অনিশ্চয়তার মধ্যেই বিএনপি সমাবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছে। দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নতুন করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি, বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে গ্রেপ্তার এবং নতুন মামলা দেওয়া হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতেও দূরের জেলা থেকে কিছুসংখ্যক নেতাকর্মী ঢাকায় প্রবেশ করেছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে আরও নেতাকর্মী ঢাকামুখী হবেন বলে নেতারা জানান।

এসব বিষয়ে গতকাল রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় আলোচনা হয়। সেখানেও কমিটির সদস্যরা বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির আলোকে তাদের পরামর্শ তুলে ধরেন।

জানতে চাইলে ঢাকার সমাবেশের প্রধান উপদেষ্টা, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘এটা সরকার পতনের সমাবেশ নয়। তাহলে কেন সমাবেশের মাঠ নিয়ে সরকারের এত ভয়? আমরা বিকল্প উপযুক্ত স্থানেরও কথা বলেছি। তাতেও সরকার সাড়া দিচ্ছে না। ’

(ঢাকাটাইমস/০৬ডিসেম্বর/এএ/এফএ)