গোপন ভিডিওর ভয় দেখিয়ে বিয়ে, ডিভোর্সের পরে প্রতারণায় সেই ভিডিও

প্রকাশ | ০৬ ডিসেম্বর ২০২২, ২১:০৯ | আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২২, ২৩:২৯

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে বড় অংকের টাকা আত্মসাৎকারী চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের সাইবার পুলিশ সেন্টারের (সিপিসি) একটি দল। গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন- আবু সাঈদ রনি এবং তার প্রেমিকা তমালিকা আক্তার। এ সময়ে তাদের কাছ থেকে পর্নোগ্রাফির কাজে ব্যবহৃত দুইটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। ওই মোবাইল ফোনে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ তথ্য জানিয়েছে সিআইডি।

 

সিআইডির একটি সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) একজন চিকিৎসক সাইবার পুলিশ সেন্টারের ফেসবুক পেজে অভিযোগ করেন যে, অজ্ঞাতনাম ব্যক্তি তার এবং তার প্রাক্তন স্ত্রী মারিয়া ইসলাম নিকিতার একান্ত মুহূর্তের ভিডিও তার টেলিগ্রাম এবং তার বর্তমান স্ত্রীর ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে পাঠিয়ে ওই আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তার কাছে টাকা দাবি করে ব্ল্যাকমেইল করছে।

 

সিআইডির সিপিসি অভিযোগটির সত্যতা পেয়ে এই কাজের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে সোমবার অভিযান চালায়। অভিযানে রাজধানীর কাফরুলে একটি থেকে তমালিকা আক্তারকে এবং সিআইডি চট্টগ্রামের একটি টিমের সহায়তায় খুলসি থানা এলাকা থেকে আবু সাঈদ রনিকে গ্রেপ্তার করে। এ সময়ে তাদের কাছ থেকে পর্নোগ্রাফির কাজে ব্যবহৃত দুইটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। ওই মোবাইল ফোনে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও পাওয়া গেছে।

 

গ্রেপ্তার আসামিদের বরাত দিয়ে সিআইডি বলছে, গ্রেপ্তার তমালিকা আক্তার এবং অভিযোগকারীর প্রাক্তন স্ত্রী মারিয়া ইসলাম নিকিতা পরস্পর বন্ধু। তারা দুজনেই বিভিন্ন ব্যাক্তিদের সঙ্গে টাকার বিনিময়ে ইমো এবং ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে ভিডিও কলের মাধ্যমে আপত্তিকর আপত্তিকর মুহূর্তগুলো গোপনে ধারণ করে রাখে। এই অভিযোগকারীর সঙ্গে মারিয়া ইসলাম নিকিতা ভিডিও কলে আপত্তিকর মূহুর্তগুলো গোপনে ধারণ করে। সেই রেকডকৃত ভিডিও দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে অভিযোগকারীকে বিবাহ করতে বাধ্য করে। পরবর্তীতে তাদের মধ্যে ডিভোর্স হয়ে গেলে মারিয়া ইসলাম নিকিতা তার বন্ধু গ্রেপ্তারকৃত তমালিকা আক্তারকে একটি ভিডিওটি সরবরাহ করে। তমালিকা আক্তার  আবার এই ভিডিও চট্টগ্রামে অবস্থানকারী তার প্রেমিক আবু সাঈদ রনিকে সরবরাহ করে। আবু সাঈদ রনি এই ভিডিও অভিযোগকারী এবং তার বর্তমান স্ত্রীকে টেলিগ্রাম ও ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে পাঠিয়ে তাদের কাছে টাকা দাবি করে তাদেরকে ব্ল্যাকমেইল করে।

 

সিআইডির ভাষ্য, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আসামিরা জানিয়েছে তারা পরস্পর যোগসাজসে ঢাকা এবং চট্টগ্রামে অবস্থান করে এই অভিযোগকারী ছাড়াও আরো অনেকের সঙ্গে এইভাবে ইমো এবং ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে ভিডিও কলে আপত্তিকর মুহূর্তগুলো রেকর্ড করে রেখে তাদেরকে ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করেছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার তাদের বিরুদ্ধে রাজধানীর কলাবাগান থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনসহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করা হয়।

 

সাইবার পুলিশ সেন্টারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ রাজিব হায়দার জানান, অপরাধ সংঘটিত করার বিষয়ে অভিযোগকারীর সাবেক স্ত্রী মারিয়া ইসলাম নিকিতার সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। অপরাধের উদ্দেশ্যেই তিনি ভিডিও সরবরাহ করার প্রমাণ তদন্তে উঠে এলে মামলার চার্জশিটে উল্লেখ করবেন তদন্ত কর্মকর্তা। 

(ঢাকাটাইমস/০৬ডিসেম্বর/এএ/কেএম)