বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ভুটান

প্রকাশ | ০৭ ডিসেম্বর ২০২২, ০০:৪৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

১৯৭১ সালের আজকের দিনে মুক্তিযুদ্ধের অগ্রগতি নিয়ে বাংলাদেশের সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্যরা উৎকর্ণ ছিলেন। কলকাতার প্রিন্সেপ স্ট্রিট থিয়েটার রোড, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র, বাংলাদেশ মিশনসহ শরণার্থী শিবির ও যুব অভ্যর্থনা কেন্দ্রের সব বাঙালি স্বাধীনতার সূর্যোদয়ের প্রত্যাশায় উদ্বিগ্ন ও উৎকর্ণ। ঠিক এ সময় ভুটান স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়।

এদিকে যুদ্ধ পরিস্থিতির বিবরণ দিয়ে জেনারেল নিয়াজি গোপন বার্তা পাঠান রাওয়ালপিন্ডি হেড কোয়ার্টারে। রিপোর্টে তিনি উল্লেখ করেন, ‘সৈন্যরা দিনাজপুর, রংপুর, সিলেট, মৌলভীবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লাকসাম, চাঁদপুর ও যশোরে প্রবল চাপের মুখে রয়েছে। গত ১৭ দিনে যেসব খণ্ডযুদ্ধ হয়েছে, তাতে জনবল ও সম্পদের বিচারে আমাদের ক্ষয়ক্ষতি বেড়ে গেছে। রাজাকারদের অস্ত্রসহ সটকে পড়ার সংখ্যা বাড়ছে। আমাদের নিজেদের ট্যাংক, ভারী কামান ও বিমান সমর্থন না থাকায় পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি ঘটেছে।’

এমন বার্তার পর হেড কোয়ার্টার থেকে সম্মুখ সমরের সৈন্যদের পিছিয়ে এনে প্রতিরোধ ঘাঁটিতে সমবেত করার পরিকল্পনা অনুমোদন করা হয়।

এদিন ভারতীয় বেতার কেন্দ্র থেকে রাত ১০টায় আকাশবাণী থেকে হিন্দি, উর্দু ও পশতু ভাষায় জেনারেল মানেকশ বাংলাদেশে দখলদার বাহিনীকে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘তোমাদের বাঁচার কোনো পথ নেই। মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনী বাংলাদেশকে মুক্ত করার জন্য তোমাদের ঘিরে রেখেছে। তোমরা যে নিষ্ঠুর আচরণ করেছ, তারা তার প্রতিশোধ নেয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। অনেক দেরি হওয়ার আগেই তোমরা আত্মসমর্পণ কর।’

এই দিনে যশোরের কেশবপুর হানাদারমুক্ত হয়। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার, আল-বদর, আশ-শামসরা মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পরাজয় বরণ করে। কেশবপুরকে শত্রুমুক্ত করে মুক্তিবাহিনী রাইফেলের আগায় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উঁচিয়ে কেশবপুর থানায় উত্তোলন করার মধ্য দিয়ে কেশবপুর বিজয় উদযাপন করে। এ সময় কেশবপুর উপজেলার সর্বস্ততের মানুষ বিজয় উল্লাসে মেতে উঠেন।

রাজাকার, আল-বদর, আশ-শামসরা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের এই বিজয় দেখে প্রাণভয়ে কেশবপুর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নেয়। আজকের এই দিনটিকে স্বরণীয় করে রাখতে কেশবপুর পৌরসভার উদ্যোগে একটি বিজয় স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে।

একের পর এক জায়গা শত্রুমুক্ত করে মুক্তিযোদ্ধারা বীরবলে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। আজকের এই দিনে জামালপুর, ময়মনসিংহ, মধুপুরও শত্রু মুক্ত হয়।

(ঢাকাটাইমস/০৭ডিসেম্বর/ডিএম)