দেবিদ্বারে বিজয় দিবসের সরকারি অনুষ্ঠানে এমপির পিতা প্রধান অতিথি

দেবিদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
| আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২২, ১১:৪৯ | প্রকাশিত : ১৮ ডিসেম্বর ২০২২, ০৯:০২

কুমিল্লার দেবিদ্বারে মহান বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে উপজেলা চেয়ারম্যানের আপত্তির পরও বিধিবহির্ভূতভাবে এমপির পিতাকে প্রধান অতিথি করলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার।

এ নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনওর মধ্যে চলে বাকযুদ্ধ। শুক্রবার সকাল ১১টায় অনুষ্ঠানের মাঝ পথে এসে কে হবেন প্রধান অতিথি এ নিয়ে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে নিয়মবহির্ভূত অনুষ্ঠান বন্ধের দাবি জানান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান।

উল্লেখ্য, দেবিদ্বারে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত মহান বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডেইজি চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এবিএম গোলাম মোস্তফা স্টেডিয়ামে আয়োজিত জাতীয় পতাকা উত্তোলন, কুচকাওয়াজ ও শরীর চর্চা প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল কুমিল্লা-৪ (দেবিদ্বার) আসনের সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুল। বিশেষ অতিথি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম আজাদ।

রাজী মোহাম্মদ ফখরুল সড়ক দুর্ঘটনায় আঘাতজনিত কারণে চিকিৎসা নিতে থাইল্যান্ডে অবস্থান করায় তার অনুপস্থিতিতে সংসদ সদস্যের পিতা সাবেক উপমন্ত্রী এএফএম ফখরুল ইসলাম মুন্সীকে প্রধান অতিথি হিসেবে ঘোষণা করেন ইউএনও। ওই ঘোষণায় আপত্তি জানান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। নিয়মে রাষ্ট্রীয় কর্মসূচিতে এমপির অনুপস্থিতিতে উপজেলা চেয়ারম্যান উপস্থিত থাকলে চেয়ারম্যানই হবেন প্রধান অতিথি। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান উপস্থিত থাকা অবস্থায় জনগণের প্রতিনিধি নয় এমন কাউকে প্রধান অতিথি করার সুযোগ নেই। এখানে এমপির অনুপস্থিতিতে এমপির বাবা প্রধান অতিথি হতে পারেন না। এটা নিয়মবহির্ভূত।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার জবাবে বলেন, তিনি সাবেক উপমন্ত্রী এবং এমপি। সে হিসেবে তিনিই হবেন প্রধান অতিথি। উপজেলা চেয়ারম্যান আপত্তি জানানোর পরও এএফএম ফখরুল ইসলাম মুন্সীকে প্রধান অতিথি করেই অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেন ইউএনও। পরে অবশ্য ফখরুল ইসলাম মুন্সী পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত না থেকে চলে যান।

এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রোশন আলী মাস্টার, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. আবুল কাশেম ওমানী, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট নাজমা বেগম, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমল কৃষ্ণ ধর, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সফিউদ্দিন সফি, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল চৌধুরী, জেলা পরিষদ সদস্য শিরিন সুলতানা ও বাবুল হোসেন রাজুসহ সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, স্থানীয় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ।

এ ব্যাপারে দেবিদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিউদ্দিন শফি বলেন, ‘বিজয় দিবসের রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে এমপির অনুপস্থিতিতে এমপির বাবাকে প্রধান অতিথি করে ইউএনও নিয়মবহির্ভূত কাজ করেছেন।’

জানতে চাইলে দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডেইজি চক্রবর্তী ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘এমপি অনুপস্থিত থাকায় প্রধান অতিথির আসন ফাঁকা ছিল তাই তার পিতাকে করা হয়েছে।’

সংসদ সদস্যের অনুপস্থিতিতে তার পিতাকে প্রধান অতিথি করা যায় কি না এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আসলে আমার বিষয়টা জানা নেই। আমি নতুন জয়েন করেছি। অনুষ্ঠানে উপজেলা চেয়ারম্যানও ছিলেন। তিনি পতাকা উত্তোলন করেছেন।’

সংসদ সদস্য না থাকলে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রধান অতিথি হতে পারেন কি না এবং এ বিষয়ে সরকারি কোনো নির্দেশনা আছে কি না এ প্রশ্নে ইউএনও বলেন, ‘আমার এ বিষয়টা জানা নেই।

সংসদ সদস্যের অনুপস্থিতিতে তার পিতাকে প্রধান অতিথি করা যায় কি না জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা জানা নেই। তবে যদি কোনো অনিয়ম হয়ে থাকে তবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত উপজেলা চেয়ারম্যানকে প্রধান অতিথি না করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘উপজেলা চেয়ারম্যান নিয়ম অনুযায়ী যা যা করার কথা সবই তিনি করেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘একটা কথা শুনলাম, হুট করে তো আর কিছু করা যায় না। কোনো ব্যত্যয় ঘটে থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

(ঢাকাটাইমস/১৮ডিসেম্বর/এফএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :