আওয়ামী লীগের সম্মেলন, শেখ হাসিনা ভুল সিদ্ধান্ত নেন না

আয়শা এরিন
| আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২২, ১৪:৩২ | প্রকাশিত : ১৯ ডিসেম্বর ২০২২, ১৩:৩৮

প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ‘এ ট্রু লেজেন্ড’ নির্মাণ করার সময় বুঝতে পারি, একজন শেখ হাসিনা কত উঁচু স্তরের রাজনীতিক। গবেষণার নির্যাস দাবি করাচ্ছিল যে, একান্ন বছরের বাংলাদেশ ও শ্রেষ্ঠ শাসকের নামই শেখ হাসিনা।

হালে রাজনৈতিক অপশক্তি মোকাবিলায় তিনি নিজেই যখন বাংলার রাজনৈতিক আকাশে ভেসে বেড়ান, যেন কালো মেঘগুলো দূরে সরে পালিয়ে যায়। হয়তো তারা পুনঃপরিকল্পনা করে আবার ফিরে আসে কিংবা আসবে। তবে শেখ হাসিনা জানিয়ে দেন, এত সোজা নয় যে, আমাদের পতন ঘটিয়ে তোমরা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় চলে আসবে!

শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ও দেশ পরিচালনার আদ্যোপান্ত নিয়ে ইতিহাসের পাতায় একটা সময় আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে ধরা হবে। খুবই বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়ে তাঁর রাজনৈতিক আদর্শ, সিদ্ধান্ত ও নেতৃত্ব তুলে ধরতে কলম সৈনিক হয়ে লড়েও যাব। খুব স্পষ্ট করে বললে, অন্যরা যা দেখতে পায় না, আমি চেষ্টা করব শেখ হাসিনার ওপর ধারাভাষ্য দিয়ে তার শ্রেষ্ঠ কাজগুলোকে তুলে ধরার।

রাষ্ট্র সম্পর্কে দার্শনিক চিন্তন, বাস্তবতার সাথে সমন্বয়, রাষ্ট্রের প্রকৃতি, কর্মসমূহ, অবস্থান ও অভিজ্ঞতার সুসমন্বয়ে রাজনৈতিক দর্শন প্রতিফলিত হওয়া- সব মিলিয়ে উপরিউক্ত ধারাবাহিকতা ও সমন্বয় একজন শাসকের সত্যিকারের ধর্ম। শেখ হাসিনা তা প্রমাণ করেই আজকের বিশ্বে অনুকরণীয় এক মহান নেতা হিসাবে আবির্ভূত হয়েছেন।

বাংলাদেশে যে শ্রেণিটি এখন বলতে চায় যে, মানুষ ভালো নেই- তারা বাস্তবতা ও বিবেক বর্জিত একটি দুষ্টু শ্রেণি, যারা এই দেশে ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষে সুদের ব্যবসার প্রচলনকারীদের মতোই। দুর্ভিক্ষে থাকা মানুষগুলোর জন্য তারা তখনো কাঁদেনি, বরং উপলক্ষ্য দেখিয়ে ব্যবসা করে গেছে। সেই তারাই নোবেল জয় করে সারা বিশ্বে আদৃত নামও। অথচ, তারা রক্তচোষা ইতর প্রাণীর মতোই।

বিরাজনীতিকরণের মধ্য দিয়ে ওই সেই এনজিওওয়ালারা দেশের সবচেয়ে পুরোনো ঐতিহ্যবাহী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে অব্যাহতিও দিতে চায়। যা রাজনৈতিক ধৃষ্টতা ছাড়া অন্য কিছু নয়।

এদিকে সেই আওয়ামী লীগের ২২তম সম্মেলন আসছে ২৪ ডিসেম্বর। খুব স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, শেখ হাসিনার জন্য একজন রানিংমেট দরকার। যোগ্য, দক্ষ, সৎ হতে হবে তাঁকে। তাঁকেও বাংলাদেশের প্রচলিত রাজনৈতিক ধারার মধ্যে থেকে অপশক্তি মোকাবিলা করতে হবে। বৈশ্বিক রাজনীতির সাথে সমন্বয় করার যোগ্যতাও থাকতে হবে। সৈয়দ আশরাফের পর তেমন নাম এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ‘এ ট্রু লেজেন্ড’ নির্মাণ করার সময়টাতেও চুজি ছিলাম। শেখ হাসিনার ওপর কথা বলতে হলে গা ধোয়া লোক লাগবে। তাই শত বাধা পেরিয়েও জনাব লিটনকেই দেশ ও বিদেশি সংস্থা ধারাভাষ্য দেয়ার জন্য বেছে নিয়েছিল। অন্য কাউকে নেওয়া হয়নি।

বাংলাদেশে সুশীল শ্রেণির আওয়ামী ঘরানার ব্যক্তিদেরকেও আমরা ওই প্রামাণ্য চলচ্চিত্রে শেখ হাসিনার ওপর মন্তব্য করার সুযোগ দেই নাই। কারণ, তাঁদের অনেকেও রাষ্ট্রে সুবিধা চায়। অন্যদিকে অভিনয় করেও চলছে অনেকে। এই যেমন, সাধারণ সম্পাদক হতে চান এমন দুইজন রাজনীতিক অতি সম্প্রতি বলেছেন, হোক এখন সামরিক হস্তক্ষেপ! আমি সেই প্রমাণ নিয়ে রেখেছিও।

জনাব ওবায়দুল কাদেরের ছুটি হওয়া দরকার। তাঁকে অভিনন্দন! তাঁর মেয়াদে খুব খারাপ করেননি তিনি। তবে, সাম্প্রতিক সময়ে খুবই ছেলেখেলা বক্তব্য এবং শারীরিক সামর্থ্য হারিয়ে ফেলার মধ্য দিয়ে তিনি এই পদে নতুন করে এলে পুরো বাংলাদেশ অবাক হবে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মানে বাংলাদেশের মুখপাত্র হওয়াই। বরং, মাহবুব উল আলম হানিফ যোগ্যতার ভিত্তিতে জনাব লিটনের পরেই রয়েছেন। সাফ কথা, বলে নেওয়াই শ্রেয়।

মানব প্রকৃতির চলমান ধারাবাহিকতা ও জীবনের সমগ্র অনুভূতির সাথে এবং পৃথিবীর অপরাপর বিষয়ের সাথে যতবেশি সামাজিক সেতু নির্মাণ করা যাবে, তখন সেই সেতু পেরিয়েই নতুন নতুন ধর্ম, বর্ণের মানুষ জাতি হিসাবে দাঁড়িয়ে যাবে। এমন মত দার্শনিক ঈশ্বরমিত্রের।

ঈশ্বরমিত্র বলেন, ‘নিজস্ব সংস্কৃতির ওপর ভর করেই রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার মধ্য দিয়ে রাজনীতিকদের অবস্থান কেবল স্পষ্ট হয়। সাংস্কৃতিক বিরুদ্ধ একটি শ্রেণি নিকৃষ্ট শাসক হতে চাইবে, তখন সত্যিকারের রাজনীতিককে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ধরে রেখে কৌশলে সেই রাজনৈতিক অপশক্তিকে তাড়াতে হবে। প্রকৃতি তখন সাহায্যও করে। কারণ, যেকোনো সৎ শাসকের শরীরে খোদ ঈশ্বরের উপস্থিতি তোমার ভাষা, মাটির সাথে তাল মিলিয়েই উপস্থিত থাকে।’

শেখ হাসিনা যেন তেমনই এক শাসক এবং একটি দারুণ রাজনৈতিক দলের শীর্ষ চরিত্র। যে চরিত্রের এখন অন্তত একটা দশজনের বিশেষ টিম লাগে। আসন্ন জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে তা বের হয়ে আসুক। শুধুমাত্র জীবন দিয়ে দিলেই হবে না শেখ হাসিনার জন্য তাদের মেধা, প্রজ্ঞা, দূরদৃষ্টি ও দেশপ্রেম থাকতে হবে। কাজেই শেখ হাসিনায় আস্থা রেখেই বলতে হবে, তিনি ভুল করেন না। সামনের দিনগুলোকে এগিয়ে নিয়ে যেতে তিনি শ্রেষ্ঠ কর্মগুলোও দলের জন্য রাখবেন।

একটি দুষ্টু শক্তি ২৭টি কথিত পয়েন্ট নিয়ে দেশ উদ্ধারে নাকি সামিল হয়েছে! আমি বলব, রাষ্ট্রের মেরামতের যে ধুয়া তারা তুলেছে, তাও ফুঁ দিয়ে ওড়ানো যাবে। কারণ, ওরা মন থেকে বাংলাদেশকে কখনোই ভালোবাসেনি। সবই প্রহসন ও লোক দেখানো। আর ক’দিন পরেই শুরু করবে নাশকতা।

এর আগে রাষ্ট্রের মেরামতের কথা বলছে! তারা মন্দ শক্তি তো বটেই। কোভিড-১৯ ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার পরে যারা রাজনৈতিক আন্দোলন গড়ে ওঠার নামে অপরাজনীতি করার যুদ্ধে সামিল হয়েছে, তাদেরকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করে দাঁতভাঙ্গা জবাব দেওয়ার সময়ও হয়েছে। কিন্তু, অতি অবশ্যই তা ‘খেলা হবে’ স্লোগানে ভর করে সত্যিকারের রাজনৈতিক শর্ত, লড়াই ও লক্ষ্যকে পূরণ করে না।

লেখক: সাংবাদিক, গবেষক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব

সংবাদটি শেয়ার করুন

মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :