অবৈধ সম্পদ: নাসিকের কাউন্সিলর মতি ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে চার্জশিট
জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ছয় নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান (মতি) ও তার স্ত্রী রোকেয়া রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার দুদকের একটি সূত্র ঢাকাটাইমসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ছয় নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমানের (মতি) বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করার পরে সম্পদ বিবরণীর নোটিশ জারি করা হয়। তিনি ২০২১ সালের ৭ সেপ্টেম্বর তার সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন।
দুদকের তদন্তে দেখা যায়, মতিউর রহমানের (মতি) স্থাবর সম্পদ ১১ কোটি ৩৫ লাখ ৬৭ হাজার ২৮৩ টাকা এবং অস্থাবর সম্পদ পাওয়া যায় তিন কোটি ৯৭ লাখ ৪০ হাজার ৮০৩ টাকা। মোট ১৫ কোটি ৩৩ লাখ আট হাজার ৮৬ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়। যার মধ্যে গোপনকৃত সম্পদের পরিমাণ ছয় কোটি ৬২ লাখ ৮২ হাজার ৭৫৩ টাকা। অন্যদিকে তার ১১ কোটি ৩৫ লাখ ৬৭ হাজার ২৮৩ টাকার জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়। আর বিভিন্ন ব্যাংকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় ৭৪ কোটি ৯৬ লাখ ৪০ হাজার ১১৩.৪৭ টাকা জমা করে তার থেকে পরবর্তীতে ৭৪ কোটি ১৩ লাখ ৮৮ হাজার ৬৮৮.৮৯ টাকা উত্তোলন করেন।
মো. মতিউর রহমান দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬ (২) ও ২৭(১) ধারায় এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২) ধারার শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। তার বিরুদ্ধে কমিশনের আদেশক্রমে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় গত ২০ ডিসেম্বর মঙ্গলবার আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়।
মতিউর রহমানের স্ত্রী রোকেয়া রহমানের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করার পরে সম্পদ বিবরণীর নোটিশ জারি করা হয়। একই দিনে তার সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন।
রোকেয়া রহমানের দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে অনুযায়ী স্থাবর সম্পদের মূল্য এক কোটি ৪৯ হাজার ৮৩০ টাকা ও অস্থাবর সম্পদ ২০ লাখ ২০ হাজার ৮০০টাকাসহ মোট এক কোটি ২০ লাখ ৭০ হাজার ৬৩০ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের ঘোষণা প্রদান দেন।
কিন্তু দুদক তদন্ত করে দেখেছে, তার মোট স্থাবর সম্পদ পাওয়া যায় পাঁচ কোটি ৯২ লাখ ৪৭ হাজার ৩৮৭ টাকা এবং অস্থাবর সম্পদের মধ্যে আয়কর বিভাগে বিশেষ সুবিধায় বৈধ করেছেন দুই কোটি ২২ লাখ ৩৮ হাজার ৫৩২ টাকা ও অন্যান্যভাবে মোট আট কোটি ৩৫ লাখ ছয় হাজার ৭১৯ টাকা। গোপনকৃত সম্পদের পরিমাণ দুই কোটি ৪২ লাখ ৫৯ হাজার ৩৩২ টাকা। জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের পরিমাণ আট কোটি ১৪ লাখ ৮৫ হাজার ৯১৯ টাকা ।
তদন্তকালে দেখা যায় যে, রোকেয়া রহমান দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে দুই কোটি ৪২ লাখ ৫৯ হাজার ৩৩২ টাকার সম্পদের তথ্য বা হিসাব না দেখিয়ে মিথ্যা তথ্য সম্বলিত সম্পদ বিবরণী দাখিলসহ আট কোটি ১৪ লাখ ৮৫ হাজার ৯১৯ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। আর বিভিন্ন ব্যাংকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় এক কোটি ৭৬ লাখ ১৬ হাজার ৯৪ টাকা জমা করেন। আর সেই টাকা থেকে পরবর্তীতে এক কোটি ৭৫ লাখ ২৭ হাজার ৯৮ টাকা উত্তোলনের তথ্য পাওয়া যায়।
ফলে রোকেয়া রহমান দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬ (২) ও ২৭(১) ধারায় এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ধারার শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলে জানায় দুদক। তার বিরুদ্ধে কমিশনের আদেশক্রমে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা ২০ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেওয়া হয়েছে।
ঢাকাটাইমস/২২ ডিসেম্বর/এএ/ইএস