হলুদ শাড়িতে সেজেছে প্রকৃতি
এসেছে শীত, বইছে শীতল হাওয়া। তারই তালে তালে দোল খাচ্ছে চোখ ধাঁধানো হলদে সরিষা ফুল। সবুজে ঘেরা বাংলাকে নতুন রুপে সাজাতে মাঠে মাঠে ফুঠে থাকে সরিষা ফুলের সমাহার। মাঠের পর মাঠ সরিষা ফুলের হলুদ রশ্মিতে হলুদ বর্ণ ধারণ করে গ্রাম বাংলা। বাংলার প্রতিটা মাঠে সরিষা ফুলের সৌন্দর্য্য মন ভোলানোর মতো। সবুজের মাঝে হলুদের ছাপ, তার সৌন্দর্য্যের যেন কোনও কমতি নেই। এ যেন প্রকৃতি আজ হলুদ শাড়ি গায়ে জড়িয়ে আছে। যার সৌন্দর্য্য সত্যিই অতুলনীয়।
শেরপুরে চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সরিষা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক ফলনের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। চাষিরা তাদের সরিষার এমন ভালো ফসল দেখে বেজায় খুশি। অত্র জেলার কৃষকেরা বিগত সময়ের চেয়ে অনেক বেশি জমিতে সরিষা চাষ করেছে। কারণ অল্প খরচে অধিক লাভজনক হওয়ায় বিগত সময়ের চেয়ে অনেক বেশি জমিতে সরিষা চাষ করেছে কৃষকেরা।
ইতোপূর্বে অনেক কৃষক স্বল্প খরচে অল্প সময়ে অধিক লাভজনক ফসল উৎপাদনের প্রতি আগ্রহ ছিল না। কৃষকরা অন্য কৃষকের কাছ থেকে সরিষা উৎপাদনের লাভের বিষয়টি জানতে পেরে অনেক কৃষক এ বছর সরিষা চাষ করেছে।
যে কারণে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এ বছর সরিষা উৎপাদন অনেক বেশি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। যদি কৃষকরা সরিষা ঠিক সময়ে ঘরে তুলতে পারে তাহলে কৃষকরা যেমন লাভবান হবে, তেমনি তেলের চাহিদা পূরণ করতে যুগান্তকারী সহায়ক ভূমিকা রাখবে এই উৎপাদিত সরিষা। যা বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে সহায়ক হবে। অর্থাৎ বিদেশ থেকে তেল আমদানী নির্ভরতা কমে আসবে।
এই জন্য অত্র জেলার কৃষকেরা সরিষা চাষের জন্য আগাম জাতের আমন ধান চাষ করেছে। আমন ধান কেটে দ্রুততম সময়ে ঐ জমিতে সরিষা চাষ করেছে। এতে একদিকে যেমন কৃষকরা লাভবান হবে অপরদিকে দেশের তেল উৎপাদনের সহায়ক ভূমিকা রাখবে। প্রতিমণ সরিষা বাজার মূল্য চার-পাঁচ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি একর জমিতে ১২-১৫ মণ সরিষা উৎপাদন হবে বলে কৃষকের কাছে থেকে জানা যায়। আগামী ১-২ সপ্তাহের মধ্যে সরিষা মাড়াই শুরু হবে। শেরপুর জেলার পাঁচটি উপজেলায় এ বছর ব্যাপক আকারে কৃষকেরা সরিষা চাষাবাদ করেছে। বেসরকারি হিসাব মতে পাঁচটি উপজেলায় প্রায় ২৫ হাজার একর জমিতে সরিষা চাষাবাদ হয়েছে।
এ ব্যাপারে ঝিনাইগাতী উপজেলা কৃষি উপ-সহকারি কর্মকর্তা খন্দকার মঞ্জুরুল ও আল-আমিনের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক পরিমাণের সরিষা উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। বিগত সময়ের চেয়ে এ বছর অত্র এলাকায় ব্যাপক আকারে সরিষা চাষ করেছে কৃষকেরা। উৎপাদিত সরিষায় লাভবান হবে কৃষকের ও দেশের।
(ঢাকাটাইমস/২৬ডিসেম্বর/এসএ)