আদালত অবমাননার অভিযোগে জাপানি নাগরিক ও তার সহযোগীর বিরুদ্ধে মামলা
আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দুই নাবালিকা মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগে জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকো ও তাঁর সহযোগী নাসরিনের বিরুদ্ধে আদালত অবমানার অভিযোগে ঢাকা মহানগর মূখ্য হাকিমের আদালতে (সিএমএম) একটি মামলা করেছেন মেয়েদের বাবা ইমরান শরীফ। বৃহস্পতিবার তাদের মা এরিকো এবং তার সহযোগিতাকারী নাসরিন নাহারের বিরুদ্ধে একটি ফৌজদারি মামলা করেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, নাবালিক মেয়েদের বাবা ইমরান শরিফের করা মামলা নম্বর সি.আর. ৪৮৯২/২২। ফৌজদারি আইন ৩৬৫/৪২০/৩৪২/১০৯ ধারায় আদালতে এই মামলা করেন। ২১ নম্বর আদালত থেকে সরকারি তদন্তর জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চলতি বছরের ২৩ ডিসেম্বর জাপানি নাগরিক এরিকো নাকানো দুই নাবালিকা মেয়ে সন্তানকে নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অমান্য করে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে ২৯ ডিসেম্বর মেয়েদের বাবা ইমরান শরিফ মাতা এরিকো এবং তাঁর সহযোগিতাকারী নাসরিন নাহারের বিরুদ্ধে সি.এম.এম. কোর্টে ফৌজদারি মামলা করেন।
বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার রাত একটার দিকে আদালতের আদেশ অমান্য করে দুই মেয়েকে নিয়ে বিমানবন্দর থেকে এরিকোর পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা বানচাল করে দেয়া হয়। এতে এরিকো দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এবং পারিবারিক আদালত, দুই আদালতের আদেশই অমান্য করেছেন। পালানোর সময় দুই মেয়ে তাদের মায়ের হেফাজতে ছিল। মেয়েদেরকে তিনি বিমানবন্দরে যাওয়ার পরে জানান যে তারা জাপানে চলে যাচ্ছে। মেজ মেয়ে লাইলা তা শুনে ভীষণ বিচলিত হয়ে যায়। আর ভাবে যে সে আর কোনদিনও তার বাবাকে দেখতে পারবে না। পরে লাইলা এয়ারপোর্টের পার্কিংয়ের জায়গায় তার বাবাকে দেখতে পেলে দৌড়ে বাবার গাড়িতে উঠে পড়ে। বাবা ইমরান বলেন যে তাঁর মেয়েকে তিনি এই প্রচণ্ড অমানবিক পরিস্থিতে আশ্রয় দিয়েছেন এবং এখন তিনি নিজেও এই মামলার মাধ্যমে আদালতের আশ্রয় নিয়েছেন।
জাপানের কালো পারিবারিক আইন ৮১৯ ধারার জন্য জাপানকে "সন্তান অপহরণের কাল গর্ত" বলা হয়। জাপানি মা তাঁর সন্তানকে নিয়ে বেআইনিভাবে জাপানে উধাও হয়ে যাচ্ছিলেন, ইমরানের এতদিনের সেই আশঙ্কা এতে প্রমাণিত হল। ইমরান এখন আশঙ্কা করছেন যে এরিকো জাপানি দূতাবাসে মেয়ে সন্তানদেরকে নিয়ে ঢুকে যাবেন। আর দ্বিতীয়বারের জন্য তিনি আবারও মেয়েদেরেেক হারানোর সম্মুখীন হতে পারেন।
২০২২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নির্দেশ অনুযায়ী পারিবারিক আদালত মামলা নম্বর ২৪৭/২১ এর আওতায় হেফাজতির রায় জানুয়ারিতে হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
(ঢাকাটাইমস/২৯ডিসেম্বর/এএ/কেএম)