খেজুর গুড় খাঁটি কি না বোঝার উপায়

প্রকাশ | ০২ জানুয়ারি ২০২৩, ১০:১২ | আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২৩, ১১:৪৭

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

শীতের ঠান্ডা আবহাওয়ায় খেজুর গুড়ের চাহিদা ঘরে ঘরে। গুড়ের মিষ্টি গন্ধ আর স্বাদ গুড়প্রেমীদের মন কেড়ে নেয়। শীতের এ সময় পিঠেপুলি থেকে শুরু করে পায়েস, সন্দেশে খেজুরের গুড়ের ব্যবহার করা হয়ে থাকে। চিনি থেকে কিন্তু খেজুরের গুড় স্বাস্থ্যের পক্ষে ভীষণ ভালো। খেজুরের গুড়ে থাকে লৌহ, ম্যাগনেসিয়াম, জিংক, সেলেনিয়াম এবং পটাশিয়াম। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ও সংক্রমণ দূরে রাখে।

খেজুরের রস থেকে তৈরি করা হয় মিষ্টি গুড়। অনেক দেশে পামের রস থেকেও গুড় তৈরি করা হয়। রস সংগ্রহ করার পরে তা বড় পাত্রে সংরক্ষণ করা হয় এবং কিছুক্ষণ স্থিরভাবে রেখে দিয়ে জ্বাল দেয়া হয়। এই রস আগুনের তাপে ফুটে ওঠে এবং গুড়ে পরিণত হয়।

দেশে আজকাল খেজুরের গুড়ে মেশানো হচ্ছে ভেজাল। খেজুরের গুড় তৈরি হচ্ছে কৃত্রিম চিনি ও রাসায়নিক রং দিয়ে। এসব খেজুরের গুড়ে স্বাদ ও গন্ধ কিছুই থাকে না। অতিমাত্রায় বাণিজ্যিক চিন্তা এবং অসাধু ব্যবসায়ীদের অতি লোভ খেজুরের ভেজাল গুড় তৈরির অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাড়তি চাহিদা সামাল দিতে এবং রং উজ্জ্বল করতে খেজুর গুড়ে চিনি, ফিটকিরি ও রাসায়নিক মেশানোর অভিযোগ রয়েছে।

বেশি মিষ্টি করার জন্য গুড়ে মেশানো হচ্ছে কৃত্রিম চিনি, কালচে রং আনতে মেশানো হচ্ছে কৃত্রিম রং। সেই গুড়ের স্বাদ থাকে না আর গন্ধও পাওয়া যায় না! চড়া দাম দিয়ে আপনিও থলি ভর্তি করে ভেজাল গুড় নিয়ে আনছেন না তো? খেজুরের গুড়ে আদৌ কোনও ভেজাল আছে কি না, তা বুঝবেন কী করে? জেনে নিন খাঁটি খেজুরের গুড় পরীক্ষা করার কয়েকটি সহজ কৌশল।

খেজুরের গুড় কেনার সময়ে একটু চেখে দেখুন। যদি নোনতা স্বাদ পান, তা হলে বুঝবেন এই খেজুরের গুড়টি মোটেই খাঁটি নয়। এতে কিছু ভেজাল মেশানো রয়েছে।

খেজুরের গুড় কেনার সময়ে গুড়ের ধারটা দুই আঙুলের মাঝে রেখে একটু চেপে দেখুন। যদি নরম লাগে, বুঝবেন গুড়টি ভালো মানের নয়। শক্ত গুড় না কেনাই বুদ্ধিমানের কাজ।

খেজুরের গুড় দেখে যদি অতিরিক্ত চকচকে মনে হয়, তা হলে বুঝবেন, খেজুরের গুড়ে প্রচুর মাত্রায় চিনি মেশানো রয়েছে।

যদি খেজুরের গুড় একটু তেতো স্বাদের হয়, তবে বুঝতে হবে গুড়টি বহু ক্ষণ ধরে জ্বাল দেওয়া হয়েছে। তাই একটু তিতকুটে স্বাদ নিয়েছে। সেই গুড় দিয়ে মিষ্টি বানালে স্বাদ বিগড়ে যেতে পারে।

খেজুরের গুড় দেখে যদি অতিরিক্ত চকচকে মনে হয়, তা হলে বুঝবেন, গুড়ে প্রচুর মাত্রায় চিনি মেশানো রয়েছে।

সাধারণত খেজুরের গুড়ের রং গাঢ় বাদামি হয়। হলদেটে রঙের গুড় দেখলেই বুঝতে হবে, তাতে অতিরিক্ত রাসায়নিক মেশানো হয়েছে। সেই গুড় কিনলে কিন্তু ঠকতে হবে। গুড় যত কালচে হবে, ততই খাঁটি সেই গুড়।

খেজুরের গুড়ে রয়েছে প্রচুর আয়রন। তাই খেজুরের গুড় খেলে শরীরে আয়রনের ঘাটতি পূরণ হয়। ফলে দূরে থাকে রক্তশূন্যতাসহ আয়রনের ঘাটতিজনিত যাবতীয় অসুখ।

যারা হজমের সমস্যায় ভুগছেন, তারা প্রতিদিন অল্প করে খেজুরের গুড় খেলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। যারা নিয়মিত খেজুরের গুড় খান, তারা এর সুফল পাচ্ছেন। এই গুড় আপনাকে কোষ্ঠকাঠিন্য, আমাশা, বদহজমের মতো অসুখ থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করবে।

খেজুর গুড় আপনার ত্বক ভালো রাখতে কাজ করে। আপনি যদি মসৃণ ত্বক চান তবে নিয়মিত খেজুর গুড় খাবেন। এতে চেহারায় সহজে বয়সের ছাপ পড়বে না। ব্রণ ও ফুসকুড়ি দূর করতেও এই গুড় কার্যকরী।

লিভার ভালো রাখতে কাজ করে খেজুর গুড়। নিয়মিত খেজুরের গুড় খেলে তা মেদ ঝরাতে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতেও কাজ করে। সেইসঙ্গে নিয়ন্ত্রণে রাখে উচ্চ রক্তচাপও। প্রতিদিনের খাবারে যোগ করুন ভেজালমুক্ত খেজুরের গুড়।

ঢাকাটাইমস/০২ জানুয়ারি/আরজেড)