শীতে ব্যথা-যন্ত্রণা দূরে রাখে পেঁপের বীজ

প্রকাশ | ০৩ জানুয়ারি ২০২৩, ০৯:১৫ | আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:১৬

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

শীতের ঠান্ডায় এমন অনেক কিছুই পাওয়া যায় যা শরীরকে সহজেই সুস্থ রাখতে পারে। তবে শীতকালে এমন অনেক ফল আছে যেগুলো পুষ্টিগুণে ভরপুর। আর এই তালিকা সবার প্রথমে যে ফলের নাম আসে তা হলো পেঁপে। কাঁচা অবস্থায় সবজি এবং পাকা অবস্থায় ফল হিসেবে এটা খুবই উপকারী। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, লিভারের যত্ন নেওয়া— পেঁপের ভূমিকা অনবদ্য। এতে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টের পরিমাণ অনেক বেশি। ফলে প্রতিদিনের পাতে পেঁপে রাখার কথা বলে থাকেন চিকিৎসক থেকে পুষ্টিবিদ।

চিকিৎসকদের মতে, পেঁপে যেমন স্বাস্থ্যকর, ঠিক তেমনই পেঁপের বীজও কম উপকারী নয়। পেঁপে কাটার সময় বেশির ভাগই পেঁপের বীজ ফেলে দেন। অনেকেই হয়তো জানেন না, পেঁপের বীজ ঠিক কতটা স্বাস্থ্যগুণ। এতে রয়েছে ভিটামিন, ফসফরাস, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালশিয়ামের মতো কিছু জরুরি উপাদান। এই বীজ ফ্ল্যাভোনয়েডের অন্যতম সমৃদ্ধ উৎস, যা হজমক্ষমতা বাড়াতে দারুণ কাজ করে।

ওজন কমাতে চেষ্টার শেষ রাখেন না কেউই। শরীরচর্চা, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, জিমে যাওয়া তো রয়েছেই। এত কিছু করেও যে সব সময় সুফল মেলে তা নয়। তবে রোগা হওয়ার একটি সহজ উপায় হতে পারে পেঁপের বীজ। এই বীজের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে পরিপাকক্রিয়া ভাল থাকে। হজমের সমস্যা থাকলে এই ঘরোয়া উপায়ে তা দূর করতেই পারেন। হজমশক্তি ভাল হলেই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। প্রদাহ কমাতেও পেঁপের বীজ দারুণ কার্যকর। শরীরের যে কোনও সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত রাখে এই বীজ। আর্থারাইটিসের সমস্যায় যাঁরা ভুগছেন, ঘরোয়া উপায়ে ব্যথা-যন্ত্রণা থেকে দূরে থাকে ভরসা রাখতে পারেন পেঁপের বীজে। পেঁপের বীজ ফেলে দেওয়ার আগে একবার দেখে নিন তার অজানা আশ্চর্য সব গুণ।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে পেঁপের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য! ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলেই শরীরের প্লেটলেটের সংখ্যা কমতে শুরু করে। এই সময় নিয়মিত পেঁপে বীজ এবং পেঁপে পাতা খেতে পারলে প্লেটলেট কাউন্ট ফের স্বাভাবিক মাত্রায় ফিরে আসে।

শরীরের মধ্যে প্রোটিন ফাইবারকে ভেঙে বিপাক প্রক্রিয়াকে স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে পেঁপের বীজ।

যকৃত বা লিভারের সমস্যায় পেঁপের বীজ খেতে পারলে দ্রুত উপকার পাওয়া যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, সামান্য পানি আর দইয়ের সঙ্গে পেঁপে বীজ মিশিয়ে নিয়মিত খেতে পারলে যকৃতের স্বাস্থ্য ভাল থাকে।

ঋতুস্রাবের সময় অসহ্য যন্ত্রণার সম্পূর্ণ উপশমের জন্য পেঁপের বীজ অত্যন্ত কার্যকরী! পিরিয়ড বা ঋতুস্রাব চলাকালীন পেঁপে বীজের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খান ১ চামচ করে খেতে পারলে ব্যথা অনেক কম বোধ হবে।

পেঁপে বীজে রয়েছে প্রোটিওলাইটিক নামের উৎসেচক যা আমাদের শরীরে বাসা বাধা নানা ক্ষতিকর জীবাণুকে মেরে ফেলে। এছাড়া শরীরে প্রোটিনের বিপাকে সাহায্য করে।

ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা প্রতিরোধ করতে পেঁপের বীজের জুড়ি মেলা ভার। ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না। এছাড়াও ত্বককে উজ্জ্বল এবং মোলায়েম রাখতেও সাহায্য করে পেঁপের বীজ।

প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে পেঁপের বীজ। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এতে থাকা ভিটামিন সি, অলকালয়েডস এনং ফ্ল্যাভোনয়েডস আর্থারাইটিসের সমস্যা কম করতে সাহায্য করে।

যারা ওজন কমানোর চিন্তায় নাজেহাল, তাদের জন্য় দারুণ উপকারী পেঁপের বীজ। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, দ্রুত ওজন কমানোর জন্য পেঁপের বীজের জুড়ি মেলা ভার। নিয়মিত খাবারের তালিকায় রাখলে দ্রুত ওজন কমবে।

হৃৎপিন্ডের জন্যও দারুণ উপকারী পেঁপের বীজ। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস। যা বিভিন্ন হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। নিয়মিত পাঁকা পেঁপে খেলে রক্তচাপ কমে, রক্তনালিতে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল জমতে বাধা দেয়। তাই হৃদস্বাস্থ্যের সুরক্ষায় এবং উচ্চরক্তচাপ এড়াতে পেঁপে খেতে পারেন নিয়ম করে।

 

যেভাবে খাবেন

পেঁপে খাওয়ার আগে বীজগুলো ফেলে না দিয়ে সেগুলো একটা পাত্রে তুলে রোদে শুকিয়ে নিন। এ বার সেই বীজগুলো গুঁড়ো করে একটি কাচের পাত্রে ভরে রাখুন। এই বীজের স্বাদ তিতা হয়। যে কোনও সালাদ কিংবা স্মুদি বানানোর সময়ে এই গুঁড়া ব্যবহার করতে পারেন, পুষ্টিগুণও পাবেন আর তিতাও লাগবে না।

ঢাকাটাইমস/০৩ জানুয়ারি/আরজেড)