দুই যুগ পর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৩ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:৫৪

দীর্ঘ দুই যুগ ধরে নিজের নাম ও ঘন ঘন পেশা পরিবর্তন করেও রক্ষা পাননি মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার চাঞ্চল্যকর নবু প্রামাণিক হত্যা মামলার পলাতক যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি মো. মজিবর।

সোমবার রাতে ঢাকার মোহাম্মদপুর থানার আদাবর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

র‌্যাব-৪, সিপিসি-৩ এর কোম্পানি কমান্ডার লে. কমান্ডার মোহাম্মদ আরিফ হোসেন মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেপ্তার মো. মজিবর (৬০) মানিকগঞ্জের সদর উপজেলার নারীকুলী গ্রামে বসবাস করতেন। তিনি দুই মেয়ে ও এক ছেলের জনক।

র‌্যাব জানায়, গ্রেপ্তার মজিবুর ও ভিকটিম নবু প্রামাণিক উভয়ই মানিকগঞ্জের নারীকুলী গ্রামে বসবাস করতেন। সেই সুবাদে তাদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক ছিলো। ১৯৯৮ সালের ১৬ই নভেম্বর বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ফুটবল খেলা নিয়ে ভিকটিম নবু প্রামাণিকের ছেলে মো. বাদশার সঙ্গে আসামি মজিবরের চাচাতো শ্যালক মো. বরকতের বিরোধ বাঁধে। এ ঘটনার পর নবু প্রামাণিকের স্ত্রী নুর নাহারের সঙ্গে মজিবরের স্ত্রী জুলেখার মধ্যে কথা কাটাকাটি ও চুল টানাটানি হয়। এক পর্যায়ে মজিবর, ছমির, আলতাফ, লেবু, জামাল ও আব্বাছ দাঁ, লাঠি, শাবলসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নবু প্রামাণিকের উপর অতর্কিতভাবে আক্রমণ করে। মজিবরের হাতে থাকা নৌকার কাঠের বৈঠা দিয়ে নবু প্রামাণিককে আঘাত করে গুরুতর জখম করেন এবং অন্যান্য আসামিদের হাতে থাকা লাঠি দিয়ে এলোপাথাড়ি মারধর করে নবু প্রামাণিকের মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান।

নবু প্রামাণিককে উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সেদিনই নব প্রমাণিকের স্ত্রী নুর নাহার বাদী হয়ে মো. মজিবরসহ সাতজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা হওয়ার পর থেকেই মজিবর আত্মগোপনে চলে যান। অন্যান্য আসামিরা তিনমাস হাজত খেটে জামিনে বের হয়ে তারাও আত্মগোপনে চলে যায়। এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলার তদন্ত শেষে মজিবরকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। বাকি ছয়জন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় চার্জশীট থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। পর্যাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণ ও উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে নবু প্রামাণিক হত্যাকান্ডে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার অপরাধে মজিবরকে যাবজ্জীবন সাজা প্রদান করেন আদালত।

লে. কমান্ডার মোহাম্মদ আরিফ হোসেন জানান, ঘটনার পর থেকেই আসামি মো. মজিবর ২৪ বছর ধরে আত্মগোপনে ছিলেন। তিনি তার নাম মো. মজিবর পরিবর্তন করে মো. কালাম নাম ব্যবহার করে প্রথমে আব্দুল্লাহপুর, উত্তরা, মোহাম্মদপুরসহ ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপনে ছিলেন। ক্রমাগতভাবে তিনি তার পেশাও পরিবর্তন করেন। প্রথমদিকে তিনি দিনমজুর, রিকশাচালক হিসেবে কাজ করলেও পরে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। সোমবার রাতে তাকে মোহাম্মদপুর থানার আদাবর এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়। আসামি মো. মজিবরকে মানিকগঞ্জ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/০৩জানুয়ারি/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :