পাবনায় গুলিতে রিকশাচালক নিহতের ঘটনায় দুজনকে তুলে নেয়ার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, পাবনা
 | প্রকাশিত : ০৫ জানুয়ারি ২০২৩, ২২:৫৯

পাবনার ঈশ্বরদীতে যুবলীগ নেতার গুলিতে রিকশাচালক নিহত হওয়ার ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত মামলা হয়নি। এ ঘটনায় অভিযুক্ত যুবলীগ নেতার দুই আত্মীয়কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ওই যুবলীগ নেতার গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে বৃহস্পতিবার বিকালে থানা ঘেরাও করেন নিহত রিকশাচালকের স্বজনরা।

বুধবার রাতে শহরের বিমানবন্দর সড়কের পশ্চিম টেংরি কড়ইতলা এলাকায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।

নিহত রিকশাচালকের নাম মামুন হোসেন (২৫)। তিনি শহরের পিয়ারাখানী জামতলা এলাকার মানিক হোসেনের ছেলে।

এ ঘটনায় গুলিতে আহত হন একই এলাকার শরিফ হোসেনের ছেলে রিকশাচালক রকি (২৬) ও ছুরিকাঘাতে আহত হন ওই এলাকার বাবু হোসেন ওরফে বরকি বাবুর ছেলে সুমন (২৮)।

স্থানীয়রা জানায়, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঈশ্বরদী ইপিজেড থেকে একটি ভটভটি ও লেগুনা বেপরোয়া গতিতে চলাচল করছিল। তাদের গতি কমাতে বলেন কড়ইতলার দোকানি ও স্থানীয়রা। এ নিয়ে লেগুনাচালকের সঙ্গে উপস্থিত দোকানি ও রিকশাচালকদের বাকবিতণ্ডা হয়। এর জেরে লেগুনাচালকের পক্ষে ঈশ্বরদী পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামাল উদ্দিন কামালের ছোট ভাই আনোয়ার উদ্দিন তিন-চারটি মোটরসাইকেলে দলবল নিয়ে এসে ওই দোকানি ও রিকশাচালকদের ওপর চড়াও হন। এতে উভয় পক্ষে ব্যাপক তর্কাতর্কি ও হাতাহাতি হয়। কড়ইতলা থেকে কাচারিপাড়া মসজিদ মোড় পর্যন্ত মারামারি ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। মারামারির একপর্যায়ে আনোয়ার হোসেন পিস্তল বের করে রিকশাচালক মামুন ও রকি হোসেনকে গুলি করেন। এতে মামুন লুটিয়ে পড়েন মাটিতে। পরে আনোয়ারের সঙ্গীরা সুমনকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান।

পরে স্থানীয়রা তাদের ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মামুন হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন।

তবে আহতদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে বলে পারিবারিক সূত্রগুলো জানায়।

রিকশাচালককে গুলিতে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত যুবলীগ কর্মী আনোয়ার উদ্দিনের বড় ভাই ও তার ছেলেকে ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য’পরিচয়ে আটক করা হয়েছে বলে অভিযোগ। বুধবার গভীর রাতে আনোয়ারের বড় ভাই যুবলীগ নেতা ও ঈশ্বরদী পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামাল উদ্দিন কামাল এবং আনোয়ারের ছেলে হৃদয় হোসেনকে তাদের শৈলপাড়ার নিজ বাড়ি থেকে ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোক’আটক করে নিয়ে গেছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

কাউন্সিলর কামাল উদ্দিনের স্ত্রী শারমিন সুলতানা স্বপ্না বলেন, বুধবার গভীর রাতে সিভিল পোশাকে কিছু লোক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে আমাদের বাসায় আসে। তাদের সঙ্গে পোশাক পরা পুলিশও ছিল। তারা আমার স্বামীকে ডেকে নিয়ে চলে গেছে। সেই সঙ্গে তার ভাতিজা হৃদয় হোসেনকেও ধরে নিয়ে তারা। তবে কী কারণে, কোথায় নিয়ে যাচ্ছে সেটাও বলেননি তারা। তবে ঈশ্বরদী থানা পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সংস্থা দুজনকে তুলে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন।

ঈশ্বরদী থানার ওসি অরবিন্দ সরকার বলেন, আমার জানা মতে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ কাউকে আটক করেনি। পাবনা জেলা ডিবি পুলিশের দাবি, রিকশাচালক খুনের ঘটনায় ঈশ্বরদীর বিভিন্ন এলাকায় টহল দিয়েছেন, কিন্তু কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করেনি। তবে তারা অভিযুক্ত আনোয়ারকে খুঁজতে তাদের বাড়ি গিয়েছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/০৫জানুয়ারি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :