দেশের এক চতুর্থাংশ মানুষ হাইপারটেনশনে ভোগেন: বিএসএমএমইউ উপাচার্য

প্রকাশ | ০৮ জানুয়ারি ২০২৩, ১৯:০৮

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের  (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশের এক চতুর্থাংশ মানুষ হাইপারটেনসিভ। হাইপারটেনশন যাতে না হয় সেদিকে নজর দিতে হবে।  হাইপারটেনশন হলে হার্ট এটাক হবে, কার্ডিও মাইয়োপ্যাথি হবে, নিউরোলজিক্যাল ডিস অর্ডার হয়ে স্ট্রোক হবে, চোখে রেটিনোপ্যাথি হবে, নেত্রোপ্যাথি হবে।

তিনি বলেন, যারা বয়স্ক তাদের অবশ্যই নিয়মিত ব্লাড প্রেসার মাপতে হবে। যাদের বয়স তিন থেকে দশ বছর তাদের ব্লাড প্রেসার মাপতে হবে। যারা মোটা তাদের নিয়মিত প্রেসার চেক আপ করতে হবে। যারা সুগার খান তারা মাঝে মাঝে প্রেসার চেক আপ করতে হবে। কাঁচা লবণ খাওয়া ছেড়ে দিতে হবে।

বিএসএমএমইউ "হাইপারটেনশন" মাসিক সেন্ট্রাল সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।   রবিবার সকাল নয়টার দিকে বিএসএমএমইউর এ ব্লক মিলনায়তনে সেন্ট্রাল সাব কমিটি সেমিনারের আয়োজন করে।

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএসএমএমইউর উপাচার্য মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা সেন্ট্রাল সেমিনারে জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনা করে থাকি যা সবার জন্য প্রযোজ্য। আজকের বিষয় হাইপারটেনশন। হাইপারটেনশন নিয়ে জানাশোনা কোন বিভাগের না লাগে। আমাদের এখানে ৫৭টি বিভাগের সবার এ নিয়ে জ্ঞান জানা লাগে। অপারেশন করার আগে ব্লাড প্রেসার বেশি থাকলে অপারেশন করা যায় না। যে রোগীকে ট্রিট মেন্ট দিয়ে যাচ্ছেন, সে রোগীকে কত পর্যন্ত ব্লাড প্রেসার রাখা লাগবে তা অবশ্যই চিকিৎসককে জানতে হবে। যারা মোটা তাদের প্রেসার একরকম, স্মোকারদের প্রেসার একরকম হবে।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএসএমএমইউর উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) একেএম মোশাররফ হোসেন, ইউজিসি অধ্যাপক হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ সজলকৃষ্ণ ব্যানার্জী।

সেমিনারে হৃদরোগ বিভাগের অধ্যাপক ডা. এসএম মোস্তাফা জামান ও শিশু নেফ্রোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. রনজিত কুমার রায়।

সেমিনারে বলা হয়,  শুধু বাংলাদেশ নয় সারাবিশ্বের একটি বড় বার্ডেন হাইপারটেনশন। হাইপারটেনশনসহ সকল রোগের চিকিৎসা শুরু হয় রোগ নির্ণয়ের প্যারাম্যাটার বা পরিমাপ দিয়ে। এজন্য পরিমাপটা যথাযথ হতে হয়। ব্লাড প্রেসার মাপার পূর্ব শর্ত হলো, সঠিক মাপের কাপ ব্যবহার করা। বয়সভিত্তিক কাপ ফলো করা উচিত। ব্লাড প্রেসার অবশ্যই দু’হাতের বাহুতে মাপতে হবে। যদি দুটি হাতের প্রেসারের তারতম্য থাকে তবে অবশ্যই যেটির প্রেসার বেশি সেটি সঠিক পরিমাপ হিসেবে নিতে হবে। যখন রোগীর প্রেসার মাপা হয় তখন রোগীকে অবশ্যই তার পিছনে ভরের সাপোর্ট নিয়ে বসতে হবে, পা আড়াআড়ি করে বসা যাবে না। ব্লাড প্রেসার মাপার আগে অবশ্য পাঁচ মিনিট আরামে চুপচাপ বসে থাকতে হবে। প্রেসার পরিমাপের জন্য সারা বিশ্বের বিভিন্ন গাইডলাইন আছে। এমেরিকান কলেজ ও কার্ডিওলজির গাইডলাইন মতে সাধারণ সিস্টোলিক প্রেসার ১২০মিমিএইচজি এর কম ও ডায়াস্টোলিক ৮০ মিমিএইচজি বেশি প্রেসার। এটিকে ইলেভেটেড হিসাব করা ধরা হয় সিস্টোলিক ১২০-১২৯ মিমিএইচজি এবং ডায়াস্টোলিক ৮০-৮৯ মিমিএইচজি। তবে হাইপারটেনশনের ক্ষেত্রে স্টেজ-১ এর ক্ষেত্রে  সিস্টোলিক  ১৩০-১৩৯ মিমিএইচজি এবং ডায়াস্টোলিক ৮০-৮৯ মিমিএইচজি।  হাইপারটেনশন স্টেজ-২ এর ক্ষেত্রে  সিস্টোলিক ১৪০ মিমিএইচজি এবং ৯০ মিমিএইচজি সমান বা কম প্রেসার। চিকিৎসার সময় ঠিকমত প্রেসার না মাপতে পারলে বিপর্যয় ঘটতে পারে। প্রেসার মাপার দুই ধরণের বিপি মেশিন রয়েছে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিএসএমএমইউর  সেন্ট্রাল সাব কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. বেলায়েত হোসেন সিদ্দিকী। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সেন্ট্রাল সাব কমিটির সদস্য সচিব নিউরোলজি বিভাগের সদস্য সচিব অধ্যাপক মো.  শহীদুল্লাহ সবুজ ও রেসপেরিটোরি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সম্প্রীতি ইসলাম।

সেমিনারে বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান,  বিভিন্ন স্তরের শিক্ষক,  কনসালটেন্ট, চিকিৎসক  ও রেসিডেন্টরা উপস্থিত ছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/০৮ জানুয়ারি/এএ/এলএ)