দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন

ভোট ব্যালটে নাকি ইভিএমে, সিদ্ধান্ত হয়নি

এমএস নাঈম, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৯ জানুয়ারি ২০২৩, ১১:০৩ | প্রকাশিত : ০৯ জানুয়ারি ২০২৩, ০৭:৫৭

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইভিএমে নাকি ব্যালটের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে, সে সিদ্ধান্তে এখনও পৌঁছতে পারেনি নির্বাচন কমিশন। তারা বলছেন, আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য।

ইভিএমে ভোটগ্রহণের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন নীতিগত সিদ্ধান্ত নিলেও বাজেট জতিলতায় তা কার্যকর হবে কি না, এ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। কমিশন সরকারের কাছে বড় অঙ্কের বাজেট চেয়েছিল ইভিএমসহ যাবতীয় কেনাকাটা ও আনুষঙ্গিক ব্যয় মেটানোর জন্য। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে অর্থ ছাড় বা কমিশনের দেওয়া বাজেট অনুমোদন হয়নি। গতকাল সংশোধিত বাজেট পুনরায় মূল্যায়নের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। তবে এতে এখনও আশা দেখছেন না নির্বাচন কমিশনসংশ্লিষ্টরা।

এদিকে রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন এবং গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে ইভিএমে ভোটগ্রহণ সংক্রান্ত মূল্যায়ন সভা করেছে কমিশন। গতকাল সকালে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন ভবনের সম্মেলন কক্ষে দেশের বিশিষ্ট নাগরিকদের নিয়ে কমিশন এ মতবিনিময় সভা করে। সূত্র জানায়, ওই সভায় ইভিএম ছাড়াও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) পরিষেবা কমিশনের হাতে থাকবে কি না সে বিষয়টি গুরুত্বসহ আলোচনায় ওঠে আসে।

সভায় বিশিষ্টজনরা তাদের অভিমত ব্যক্ত করেন। তারা বলেন, এনআইডি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হাতে থাকলেও ইভিএমে ভোটগ্রহণের ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব পড়বে না। এ ক্ষেত্রে তাদের যুক্তি হচ্ছে- এনআইডি ইউনিক থাকলে তা যেখানেই যে দপ্তরের অধীনে থাক, তাতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। টেকনিক্যাল ফিচারগুলো সঠিকভাবে ম্যানেজ হলে কোনো সমস্যা নেই।

অপরদিকে কমিশন মনে করে, এনআইডি স্বাধীন এই সংস্থার হাতেই থাকা উচিত। কোনো নাগরিক বা ভোটার ভোট দিতে গিয়ে ভোগান্তির স্বীকার হবেন না। তবে এ বিষয়ে কমিশন বৈঠক করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।

এছাড়া কমিশন সভায় ত্রুটিযুক্ত ইভিএম দিয়ে ভোটগ্রহণ না করার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।

গতকাল নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা সাংবাদিকদের বলেন, ‘জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) নতুন প্রকল্প পাস না হলে ১৫০ আসনে ব্যালট পেপারে ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি নিতে হবে। সময়মতো হলে তো ভালো। না হলে যা আছে তা নিয়েই ভোটগ্রহণ করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইভিএম প্রকল্প খুব একটা এগিয়েছে বলে মনে হয় না। প্রকল্পের অর্থ প্রাপ্তি সাপেক্ষে সর্বোচ্চ ১৫০ আসনে ইভিএম ব্যবহার করব বলে আমরা বলেছিলাম। এ ক্ষেত্রে প্রকল্প পাস না হলে আমাদের কাছে বর্তমানে যা আছে তা দিয়েই ভোট করব।’

ইসি রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘এসব নিয়ে নীতি নির্ধারকদের (মন্ত্রণালয়/সরকার) সঙ্গে কথা হয়নি। এটার রীতিও নেই। ইসি সচিবালয় হয়তো কথা বলবে। আমাদের সক্ষমতা যা আছে তাই করব। আমাদের সক্ষমতা তো জানা মতে, ৭০ থেকে ৮০টি আসনে ইভিএম ব্যবহার করার মতো আছে। এখন কী আছে জানি না।’

এদিকে গতকাল আবারও মূল্যায়নের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয় নির্বাচন কমিশনের আলোচিত ইভিএম কেনার সংশোধিত প্রকল্প প্রস্তাব। এরই মধ্যে ইভিএমের উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (ডিপিপি) পরিকল্পনা কমিশনের চাওয়া বিভিন্ন বিষয়ের ব্যাখ্যা প্রস্তুত করেছে ইসি।

এই প্রকল্পের আওতায় কেনা জিনিসপত্র পরবর্তী প্রকল্পে ব্যবহার হবে কি না, টেকনিক্যাল কমিটির দ্বারা যাচাই করা ইভিএমের বিভিন্ন টেকনিক্যাল স্পেসিফিকেশন, বাজার কমিটির মূল্যায়ন, মূল্যায়ন প্রতিবেদন, গাড়ি কেনা হবে, নাকি ভাড়া নেওয়া হবে সেই ব্যাখ্যা, ইভিএমের মূল্য কীভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে, জনবল কমিটির প্রতিবেদন এবং প্রকল্পের এক্সিট প্ল্যানসহ পরিকল্পনা কমিশনের পর্যবেক্ষণের আলোকে প্রতিবেদন তৈরি করেছে ইসি।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবিত ইভিএম কেনার প্রকল্পটি নির্ধারিত সময়ে বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান নিশ্চিত করতে অর্থ বিভাগের সঙ্গে আলোচনার পরামর্শ দেয় কমিশন। পাশাপাশি প্রকল্পে নির্বাচনসংশ্লিষ্ট খাতগুলো ঠিক রেখে অন্য খাতে ব্যয় কমানোর পরামর্শও দেওয়া হয়। ইভিএম প্রকল্পে জনবল, গাড়ি কেনা, ইভিএম সংরক্ষণে ওয়্যার হাউস তৈরি করাসহ কয়েকটি খাতে বিশাল ব্যয়ের প্রস্তাবের ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। একই সঙ্গে এসব খাতে ব্যয় কমানো যায় কি না, তা বিবেচনা করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

আগামী সংসদ নির্বাচনে কমপক্ষে ১৫০টি আসনে ইভিএম মেশিন ব্যবহার করতে চায় ইসি। এ লক্ষ্যে গত বছরের ১৯ অক্টোবর ইভিএম প্রকল্পের উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) পরিকল্পনা কমিশনে পাঠায় নির্বাচন কমিশন। এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয় ৮ হাজার ৭১১ কোটি টাকা। এ প্রকল্পের আওতায় নতুন করে ২ লাখ ইভিএম মেশিন কেনা হবে। নির্বাচন কমিশনের ইভিএম কেনার প্রকল্পটি চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) সবুজ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিল না। জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় গত বছরের ২৬ অক্টোবর চলতি অর্থবছরের নতুন প্রকল্পের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

(ঢাকাটাইমস/০৯জানুয়ারি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

পালিয়ে আসা সেনাসহ ২৮৮ জনকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠাল বিজিবি

উপজেলা নির্বাচনের প্রচারে এমপি নামলে ব্যবস্থা: ইসি আলমগীর

‘মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে নেমে পরিবহন চাদাঁবাজরা সরকারের আস্থাভাজন হতে চায়’

রানা প্লাজা ধসের ১১ বছরেও ক্ষতিপূরণ পাননি, কাঁদলেন শ্রমিকরা

৬ বছরে ঈদ যাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৬৭৪, আহত ৪৭৬৫

হজযাত্রীর ভোগান্তি হলে এজেন্সির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা: ধর্মমন্ত্রী

নির্মাণাধীন ভবনে লার্ভা পেলেই কাজ বন্ধ: মেয়র তাপস 

সুষ্ঠু ভোট করতে প্রশাসনের উচ্চপদস্থদের সঙ্গে ইসির বৈঠক রবিবার

থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা

মিয়ানমারে কারাভোগ শেষে ফিরলেন ১৭৩ বাংলাদেশি

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :