ইয়াবা ডনদের কবলে জিম্মি টেকনাফ

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ০৯ জানুয়ারি ২০২৩, ১৯:০৫ | প্রকাশিত : ০৯ জানুয়ারি ২০২৩, ১৮:৫১

মাদকের ছোবলে জর্জরিত কক্সবাজারের টেকনাফ। ইয়াবা ডনদের কবলে জিম্মি; এ অঞ্চলের ঘরে ঘরে এখন মাদকের ছোবল। টেকনাফে মাদক কারবার জালের মতো ছড়িয়ে পড়ছে। এর ভয়াবহতা ঠেকাতে সচেতন মহল এগিয়ে এলেও মাদক কারবারিদের হুমকিতে থমকে যাচ্ছেন।

এছাড়া মাদক কারবারীদের স্থানীয় অনেক জনপ্রতিনিধিরা পৃষ্ঠপোষকতা করছেন। আর এতেই টেকনাফ হয়ে উঠছে মাদক কারবারিদের স্বর্গরাজ্য। ঢাকা টাইমসের অনুসন্ধানে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, টেকনাফে সাধারণ মানুষের মধ্যে অনেকেই মরণ নেশা মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছেন। তবে প্রশাসনের বিভিন্ন অভিযানেও থামছে না মাদক কারবার।

অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, মেজর (অব.) রাশেদ মোহাম্মদ সিনহা হত্যার পরে আত্মসমর্পণকারী ইয়াবা কারবারিরা জামিনে বের হয়ে আবারও মাদক কারবারে ফিরছেন।

টেকনাফে বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) সূত্র জানা গেছে, গত বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৫২টি মাদক মামলায় মোট ২৬৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় আরও ৩৯ জন আসামি পালিয়ে যায়। তাদেরকে মামলায় পলাতক আসামি করা হয়।

২৫২টি মামলায় মালিকবিহীন ১৫ লাখ ৪৪ হাজার ২৭০ পিস ও মালিকসহ ১৮ লাখ ৩৪ হাজার ৩৭১ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়। অভিযানে সর্বমোট ৩৩ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪১ পিস ইয়াবা জব্দ করে বিজিবি। এছাড়া হাতেনাতে ২৭ কেজি ১০৮ গ্রাম ও অজ্ঞাত অবস্থায় ৩০ কেজি ১৮৭ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ (আইস) জব্দ করা হয়। এসব মাদকের মূল্য মোট ৩শ ৮৭ কোটি ৮৩ লাখ ৮২ হাজার ৩শ টাকা।

বিচারিক প্রক্রিয়াকে সক্রিয় এবং গতিশীল করার দিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কারণ দ্রুত বিচার নিষ্পত্তি হলে মাদক কারবারিদের মধ্যে ভীতি কাজ করবে। এছাড়া সাধারণ মানুষ মাদক কারবারে উদ্বুদ্ধ হবে না।
’’ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর টেকনাফ বিশেষ জোনের সহকারী পরিচালক সিরাজুল মোস্তফা

কোস্টগার্ড সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালে কোস্টগার্ড (বিসিজি স্টেশন টেকনাফ) সদস্যরা মাদক বিরোধী অভিযানে ২৬ লাখ ৮১ হাজার ২০ পিস ইয়াবা ও ৩ কেজি গ্রাম ক্রিস্টালমেথ (আইস) জব্দ করেছে কোস্টগার্ড। যার আনুমানিক মূল্য ৯৮ কোটি ৯৩ লাখ ৬ হাজার টাকা। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর টেকনাফ বিশেষ জোনের সূত্রে জানা গেছে, গত এক বছরে ১১ লাখ ৯৫ হাজার ৭৪৭ পিস ইয়াবা ও ২ কেজি ৭৬৫ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ (আইস) জব্দ করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। এছাড়া পুরো বছরে চোলাইমদ, গাঁজা, ফেনসিডেল, বিয়ারসহ বিভিন্ন মাদক জব্দ করা হয়। যার আনুমানিক মূল্য ৫০ কোটি ৮৭ লাখ ৭৩ হাজার ১০০ টাকা। এছাড়া ১৭৩টি মামলায় ২৫১ জনকে আটক করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর; টেকনাফ বিশেষ জোনের সদস্যরা।

কক্সবাজার সিটি কলেজের প্রভাষক এহসান উদ্দিন ঢাকা টাইমসকে বলেন, মাদক করবারিদের সমাজের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি করা হচ্ছে। টাকার বিনিময়ে সম্মানের চেয়ারে মাদক কারবারিদের বসানো হয়। এছাড়া রাজনৈতিক নেতাদের পৃষ্ঠপোষকতা থাকার কারণে মাদক কারবার বন্ধ করা যাচ্ছে না।

মাদক কারবার বন্ধে সামাজিকভাবে মাদক কারবারিদের বয়কট করতে হবে এবং রাজনৈতিক নেতাদের পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়তে হবে বলে মত প্রকাশ করেন এ স্থানীয় এ শিক্ষক।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর টেকনাফ বিশেষ জোনের সহকারী পরিচালক সিরাজুল মোস্তফা ঢাকা টাইমসকে বলেন, উপর্যুপরি অভিযানেও এখনো মাদক কারবার পুরোপুরি বন্ধ হয়নি।

তিনি বলেন, এ বিষয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ করা হচ্ছে। এছাড়া রুজুকরা মামলাগুলো হালনাগাদ তথ্য তৈরির মাধ্যমে বিচারিক প্রক্রিয়াকে সক্রিয় এবং গতিশীল করার দিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কারণ দ্রুত বিচার নিষ্পত্তি হলে মাদক কারবারিদের মধ্যে ভীতি কাজ করবে। এছাড়া সাধারণ মানুষ মাদক কারবারে উদ্বুদ্ধ হবে না।

(ঢাকাটাইমস/০৯জানুয়ারি/এসএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

অপরাধ ও দুর্নীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

অপরাধ ও দুর্নীতি এর সর্বশেষ

পল্লবীতে পাভেল হত্যা: নেপথ্যে মাদক ব্যবসা, গ্রেপ্তার ৮

মাদক-ইয়াবা কারবারে বদির দুই ভাইয়ের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে সিআইডি

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের হটলাইন থেকে গ্রাহককে ফোন, অ্যাকাউন্টের টাকা হাওয়া

রাজধানীতে মাদকবিরোধী অভিযানে আটক ৮, মামলা ৬

ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি গ্রেপ্তার 

এটিএম বুথের প্রহরী হত্যা: টাকা লুটের উদ্দেশ্যে নাকি ব্যক্তিগত কারণ? কী বলছে পুলিশ?

রাজধানীতে এটিএম বুথের নিরাপত্তাকর্মীকে কুপিয়ে হত্যা

কেএনএফকে সহযোগিতা, বান্দরবান থেকে একজন গ্রেপ্তার

ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের হামলার শিকার সেই চিকিৎসকের মৃত্যু

রাষ্ট্রপতির আত্মীয় পরিচয়ে প্রতারণা, নিঃস্ব বহু ট্রাভেল ব্যবসায়ী

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :