‘রাজনৈতিক অস্থিরতায় শঙ্কা বিরাজ করছে, সাবধান থাকতে হবে’

প্রকাশ | ১১ জানুয়ারি ২০২৩, ২১:২৪ | আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২৩, ২২:৪১

রুদ্র রাসেল, ঢাকা টাইমস

একই দিনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে ফের উত্তপ্ত রাজনৈতিক অঙ্গন। এমন পরিস্থিতিতে সংঘাতের শঙ্কাও দেখছেন সমাজ সংস্করকদের অনেকেই। সংলাপ বা যে কোনো আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চলমান সংকট ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। ঘটতে পারে নানা অঘটন।

এই সংকট থেকে উত্তরণের সম্ভাব্য পথ বা উপায় নিয়ে বুধবার রাতে কথা হয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব আবু আলম মো. শহীদ খানের সঙ্গে। অভিজ্ঞ সাবেক এই সচিব ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘রাজনৈতিক দলকে পরামর্শ দেওয়ার যোগ্যতা আমার নেই। তবে একই দিনে কর্মসূচি পালন সংঘাতময় পরিস্থিতির জন্ম দিতে পারে। এ জন্য তাদের উচিত হবে, তারা যখন কর্মসূচি দেবেন, একে অপরের কর্মসূচির প্রতি খেয়াল রাখবেন। পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দেওয়া রাজনৈতিক সংঘাতের পথ সৃষ্টি করে এবং এটি গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিরও পরিপন্থী। এই পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি যখন একটি রাজনৈতিক দলের কেন্দ্র থেকে দেওয়া হয়, তখন তৃনমূল পর্যায়ের কর্মীরা এটাকে সেভাবেই নেন যে- এটা এমন কর্মসূচি যেখানে আমাদের শোডাউন করতে হবে। এই শোডাউন করতে গিয়ে সংঘাত হতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যারা নাগরিক সমাজ, যারা শান্তি চাই, যারা দেশের গণতন্ত্র বিকশিত হোক এটা চাই, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ চাই, যে কারণে আমরা মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে একটি দেশ অর্জন করেছি- সেই লক্ষ্যের প্রতি খেয়াল রেখে আমরা মনে করি, এ ধরণের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দেওয়ার যে প্রবণতা সেটা অবশ্যই বাদ দিতে হবে। সেটা থাকা গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির সঙ্গে যায় না।’

এক প্রশ্নের জবাবে সাবেক এই সচিব বলেন, ‘সংকট সমাধানের প্রথম পথ তো সংলাপ। সেই পথটা ভালো পথ, শান্তিপূর্ণ পথ। সেই পথেই সংকটের উত্তরণ ঘটতে হবে। সংকট উত্তরণ না হলে পৃথিবীর দেশে দেশে এমনকি বাংলাদেশেও বিভিন্ন সময়ে অনেক কিছু ঘটেছে- যেটা আমাদের নজরে আছে, আমরা সবাই জানি কী কী ঘটেছে। যেমন- জনঅসন্তোষ তীব্র হতে পারে, গণঅভ্যুত্থান ঘটতে পারে, জরুরি অবস্থা জারি করার মতো পরিবশে সৃষ্টি হতে পারে, দেশে অসাংবিধানিক উপায়ে ক্ষমতা রদবদল হতে পারে। এইসব যদি আমরা না চাই, যেটা আমরা আসলেই চাই না- সেটাকে যদি অ্যাভয়েড করতে হয়, তাহলে তো সংলাপ ছাড়া শান্তিপূর্ণ কোনো পথ খোলা নেই সামনে।’

আবু আলম মো. শহীদ খান আরও বলেন, ‘নাগরিক হিসেবে আমি মনে করি- সংলাপই সর্বোত্তম পন্থা রাজনৈতিক সংকট নিরসনের ক্ষেত্রে। তবে সেটাই যে একমাত্র পন্থা হবে- সেটা নির্ভর করে রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর। এই সর্বোত্তম পন্থা যদি রাজনৈতিক দলগুলো গ্রহণ না করে সেক্ষেত্রে তো সংকট ঘনিভূত হবে। আরও সংঘাতময় হবে পরিস্থিতি এবং সেই পরিস্থিতিতে অতীতের মতো অনেক কিছুই ঘটে যেতে পারে। সেই ব্যাপারে আমাদের সাবধান থাকতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলো সে ব্যাপারে গভীরভাবে বিবেচনা করবে- এটাই প্রত্যাশা। বিশেষত সরকার, যারা ক্ষমতায় আছেন- তাদের জন্য এটা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। সরকারে যারাই থাকেন, যখন যারা ছিলেন- তাদের জন্যই এমন পরিস্থিতি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। যদি এই চ্যালেঞ্জ উত্তরণ ঘটাতে না পারে, তাহলে তো অন্য কিছু ঘটে যেতে পারে। এই ঘটনা তো আমরা কেউ চাই না।’

(ঢাকা টাইমস/১১জানুয়ারি/আরআর/ইএস)