পি কে হালদারের কুমিরের খামার দখল করে অডিটোরিয়াম বাণিজ্যকেন্দ্র

প্রকাশ | ১৬ জানুয়ারি ২০২৩, ১১:৩২ | আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:০৯

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

দেশের আর্থিক খাতের অন্যতম জালিয়াত, চারটি আর্থিক লিজিং কোম্পানি থেকে অন্তত ১০ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া পি কে হালদারের বেশ কিছু সম্পদ গোপনে দখল হয়ে যাচ্ছে। যেসব সম্পদ আদালতের নির্দেশে ক্রোক করে রেখেছে দুদক। কিন্তু তার ভিতরও একটি চক্র তার সেই সম্পদ বিক্রি করে দিচ্ছে। কোনো কোনো সম্পদ দখল করে বানানো হচ্ছে অডিটোরিয়াম, পর্যটন জোন। দুদকের অনুসন্ধানে এমন তথ্যই বেরিয়ে আসছে।

প্রাপ্ত তথ্য বলছে, ময়মনসিংহের ভালুকায় পি কে হালদারের জমিতে তিনি কুমিরের খামার গড়ে তুলেছিলেন। এটা করেছিলেন তিনি আত্মসাৎ করা অর্থ জায়েজ করার জন্য।

যা হোক, সেই খামারের সবটুকু জমি ক্রোক করা ছিল। কিন্তু আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে সেখানে তৈরি করা হয়েছে একটি অডিটোরিয়াম। এমনকি পর্যটন ও বাণিজ্যকেন্দ্রও চালু করা হয়েছে। কুমির খামার পরিদর্শনের জন্য দর্শনার্থী প্রবেশ ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫০ টাকা। গত এক বছর ধরে একটি চক্র এ কাজটি করে যাচ্ছে। এই পর্যটন কেন্দ্র থেকে প্রাপ্ত আয় সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে চক্রের সদস্যরা আত্মসাৎ করছেন। কুমির খামার পরিচর্যার নামে ঋণের বাকি টাকাও আত্মসাৎ হচ্ছে বলে জানা গেছে।

দুদক জানায়, দুদকের মামলার জব্দ তালিকা অনুযায়ী খামারে তিন হাজার কুমির থাকার কথা। কিন্তু বাস্তবে এখন তা নেই। আবার কুমির খামার পরিচালনার কথা বলে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকে ঋণ নেওয়ার সময় জমা দেওয়া কাগজপত্রে উল্লেখ ছিল কুমিরের সংখ্যা দেড় হাজার,  অথচ এখন বাস্তবে তার কোনো অস্তিত্ব নেই। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, কাগজে-কলমে মাইনাস করার পর এই দেড় হাজার কুমিরের এখন বাজার মূল্য আট থেকে ১০ কোটি টাকা- এমন কিছু কুমির বিক্রির সঙ্গে জড়িতদের বের করার চেষ্টা চলছে।

এদিকে দুদকের তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জব্দ করা পি কে হালদারের ফার্মের আট হাজার মুরগিও বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। বিক্রিকৃত টাকাও সরকারি কোষাগারে জমা হয়নি। তাও সিন্ডিকেটের পেটে চলে গেছে।

জানা গেছে, ফার্ম থেকে মুরগি বিক্রির জন্য ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের বোর্ড সভা থেকে কোনো অনুমোদন নেওয়া হয়নি। প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত এমডি এককভাবে এসব করছেন কি না তদন্ত চলছে।

দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ক্রোক করা কোনো সম্পদ আদালতের নির্দেশ ছাড়া কেউ বিক্রি করতে পারে না। যারা করেছে দুদক তাদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেবে।

(ঢাকাটাইমস/১৬জানুয়ারি/এমএম)