বদরুল হায়দারের তিনটি কবিতা
প্রকাশ | ১৬ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:১৮

হাইব্রিড ভাবের সাগরে
স্মৃতির পাতার বুকে জেগে থাকি সারারাত। চাঁদ
কপালে আঁতাত করি বেদনায় খরার প্রভাত।
মুছে ফেলা অপেক্ষার আলৌকিক বসন্তের খেলা
দীর্ঘশ্বাসে অবেলা দুপুরে দিলখোলা স্বপ্নের সিঁড়িতে
হাতছানি দেয় তোমার আঘাত।
বীণাপানির তরীর কিনারে বাসা বাঁধে মন। তুমি
স্বপ্ন পূরণে পরীর অপবাদে মোহনীয় হাসিবন থেকে
নির্বাসিত করো প্রয়োজন।
বাকির নামই ফাঁকি। তুমি আন্তরিক মাখামাখিতেও
নগদ বাকিতে মিনাক্ষীর হাসি মেখে বাক্যবান চোখে
খোঁজো দর্শন।
হাইব্রিড ভাবের সাগরে কল্পনার পারাপারে
মনেরা উধাও হতে চায় সাধনার পরম আঁধারে।
তোমাদের কুটচালে হই অমূল্য সম্পদ।
বখে যাওয়ার বিবাদী মোড়কে শত সংঘাত
বাদ অপবাদ হয়ে দুঃখের নামে বাতিল ও হরিলুটে
করে আবেগের রদ।
বড় প্রয়োজন স্বপ্নকে হৃদয় দিয়ে দেখা। রেখা টেনে
প্রেমায়োজনে সুজনে প্রতীক্ষার কাছে ব্যাখ্যার অতীতে
রক্ষা করা দরকার মনের দুর্ভোগ।
তুমি অবেলার দিলখোলা। আমি গড়িয়া মেলায়
রঙের অবহেলায় ভুলে থাকি নববর্ষ উপভোগ
হৃদয়ের অভিযোগে।
মালতিলতার মন
মালতিলতায় দুলে উঠে মন। ফুলে ফলে বর্ষার কপালে
উচাটন হাওয়ার অনুকূলে খুঁজি হৃদয়ের মূলধন।
শ্রীচরণ নামের অগোচরে পরমাত্মারা বানের স্নান সেরে
তোমার প্রিয়বরেণেষু নিরাপত্তার আদরে নিরাশার বাণী নিয়ে
স্মৃতির পাতায় লিখে রাখে আগাম দমন।
চমকে দেওয়া খোলামনে ভোলানাথ সেজে মহামাণ্য
অনন্যার কাছে জমা রাখি আড়িপাতা প্রলোভন।
কদম বর্ষার কাছে হলুদ বরণ শিখে ভুলে থাকি দুঃখের ব্যাকরণ
নদী মাতৃকতার অবাধ্য উপকূলে তুমি জন্ম দাও অকারণ।
খরার হৃদয় জুড়ে বৃষ্টির অসূরে ভিজে যায় আবেগের
সবুজ বাগান। ঝুমকোলতা অতিথি হয়ে কেয়ার বাসরে
গড়ে আত্মীয়তা। তুমিহীন বৃষ্টি ঝরে টুপটাপ অভিমানে।
আমি আষাঢ় শ্রাবণ ভাদ্র আশ্বিনের লতানো প্লাবনে
ভেসে ডুবে হই মা মাটি ও মানুষের প্রিয়জন।
শ্যাম কালিয়া ভাটির কন্যা তুমি বন্যা জলে ভিজে
প্রেমের সুন্দরবন। মালতিলতার প্রেমে দুলে ওঠো।
অবেলায় জীবন খেলায়
তুমি অবেলায় জীবন খেলায় মেতেছিলে দরিয়া নগরে।
দোলা দেয় মনের উতালা। পালতোলা বেদনার কাফেলায়
চলে ছলকলা। ঘোলাজলে মাকাল ফলের ফলাফল
ডুবে যায় বেলা।
বাংলা ওয়াশে নিরামিষে দোভাষীর রাশিফলে যোগ করো
কাঁচকলা। বান তুফানের আগামী উজানে শুরু হয় পথচলা।
হৃদয় প্রদেশে আগাম চুক্তির দোষে বিলবোর্ডের দৃশ্যতঃ
রোড শো’তে তুমি উপভোগ করো দুষ্প্রাপ্য অমিল।
শিথিল মনের মিলে আমি দরিয়ার দীলে ডুব দিই।
তামাবিলের হৃদয়ে প্রাণের অধিক অন্তমিলে তুমি ঝিলমিলে
রাতের মিছিলে জীবনের আলো খোঁজো।
ঢেউ খেলে মনের মাতালে। এলোমেলো ভাবনার জালে
পিপিলিকা পাখা মেলে তুমি প্রেমের প্রহরী মানো গোজামিলে।
আমি বিলিয়ন ক্ষুধা আর সুধা পান করি তোমার অতলে।