তাড়াশে চলতি বছরে ধান-চাল সংগ্রহে হোঁচট

শায়লা পারভীন, তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ)
 | প্রকাশিত : ১৬ জানুয়ারি ২০২৩, ১৪:০৪

বাজারে দাম বেশি পেয়ে সরকারের খাদ্য গুদামে ধান চাল দিচ্ছেন না কৃষক ও মিল মালিকরা। তাই শস্য ভান্ডার খ্যাত সিরাজগঞ্জের তাড়াশে চলতি বছরে ধান-চাল সংগ্রহে হোঁচট খেয়েছেন সরকার।

ফলে গত দুই মাসে সরকারি খাদ্য গুদামে সংগ্রহের পরিমাণ শূন্য রয়েছে। কৃষক ও মিল মালিকরা আমন ধান বিক্রি করতে চাল সরবরাহে কোনো আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

উপজেলায় চলতি মৌসুমে ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে ৭৩২ মেট্রিক টন ধান এবং ১৩৪ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল সংগ্রহ অভিযানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।

ধান-চাল সংগ্রহের জন্য আমন ধানের সরকারি ক্রয়মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি কেজি ২৮ টাকা এবং চালের মূল্য প্রতি কেজি ৪২ টাকা।

কিন্ত বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে ব্রি-৯০, প্রতিমণ এক হাজার ৯০০ টাকা, কাটারীভোগ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৪০০ থেকে এক হাজার ৪৮০ টাকা, ব্রি-৪৯ জাতের ধান বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৪৫০, ব্রি-৫১ জাতের ধান এখন বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৪৭০ টাকা, স্থানীয় জাত আব্দুল গুটি বর্তমান বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৯০০ টাকায়।

এ ছাড়া বোনা আমন ধান সর-সরিয়া, সাদা দিঘা, মাটিয়া গরল প্রকার ভেদে এক হাজার ৩০০ থেকে এক হাজার ৩৫০ টাকা।

উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, চলতি রোপা আমন ও আমন মৌসুমে উপজেলার আটটি ইউনিয়নে এক হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে সরসরিয়া, সাদা দিঘা, মাটিয়া গরল, ব্রি-৯০, কাটারীভোগ ব্রি-৪৯ ব্রি-৫১ স্থানীয় জাত আব্দুল গুটিসহ প্রায় ১২ থেকে ১৪ জাতের ধানের আবাদ করা হয়। অক্টোবরে ধান কাটা শুরু হয়।

কৃষকেরা জানান, প্রতিমণ ধান সরকারি ক্রয় মূল্য এক হাজার ১২০ টাকা হলেও হাট বাজারে কৃষকের ধানের দাম অনেক বেশি। ধান-চালের সরকার নির্ধারিত এই দাম বাজার মূল্যের চেয়ে অনেক কম। ফলে তারা সরকারিভাবে ধান-চাল বিক্রি করলে আর্থিকভাবে লাভবান হবেন না। তাই বাজারে বেশি দামে ধান বিক্রি করে তাদের বেশি লাভ হচ্ছে।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা যায়, তাড়াশ উপজেলায় ১২ জন মিলার রয়েছেন। কিন্তু চলতি আমন মৌসুমে একমাত্র রাবেয়া চাউল কল মালিক ছাড়া কোন মিলার খাদ্য গুদামে চাল দিতে চুক্তিবদ্ধ হননি। যে কারণে গত দুই মাসে তাড়াশ উপজেলার সরকারি খাদ্য গুদামে এক ছটাক চাল সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি।

মিলার রফিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে বাজারের চালের যে দাম তাতে করে চুক্তি বদ্ধ হলেও চাল সহবরাহ করা এখনও সম্ভব হয়নি। ধানের দাম কমলে চুক্তি অনুযায়ী সরকারি খাদ্য গুদামে চাল সহবরাহ করবো।

তাড়াশ উপজেলার চাউল কল সমিতির সভাপতি মো. বাবলু মিয়া বলেন, বর্তমানে মোটা ধানই এক হাজার ৩০০ থেকে এক হাজার ৩৫০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ সরকারি ক্রয় মূল্য তার চেয়ে অনেক কম। আবার বর্তমানে প্রতি কেজি চাল তৈরি করতে একজন মিলারকে প্রতি কেজিতে খরচ করতে হচ্ছে প্রায় ৪৫ টাকা। আর সরকারি চালের দর প্রতি কেজি ৪২ টাকা। এ কারণে শস্য ভান্ডার খ্যাত তাড়াশে গত দুই মাসে ধান চাল সংগ্রহের পরিমাণ শূণ্য আছে। এরপরও কোন পদক্ষেপ নেই সংশ্লিষ্ট বিভাগের।

তাড়াশ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. ইয়াছিন আলী বলেন, বর্তমানে বাজারে ধান চালের দাম বেশি। তবে ধান চালের দাম যেহেতু উঠা নামা করে সেহেতু ধান চালের দাম কমলে হয়তো ধান চাল সংগ্রহ করা সম্ভব হবে।

(ঢাকাটাইমস/১৬জানুয়ারি/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :