ফের রাজনীতিতে সক্রিয় মোহাম্মদপুরের সেই মিজান

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০২৩, ১০:১১ | প্রকাশিত : ২০ জানুয়ারি ২০২৩, ০৯:১৯

ক্যাসিনোকাণ্ডে জড়িত থাকার অপরাধে তিন বছরের বেশি সময় জেল খেটেছেন। জেল থেকে বের হওয়ার পরে আবার রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন। এলাকায় প্রচণ্ড প্রভাবশালী নেতাও তিনি। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের আলোচিত সমালোচিত সাবেক কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজান ওরফে পাগলা মিজান তিনি।

গত বছরের ৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসায় ওঠেন পাগলা মিজান। বর্তমানে সেখানেই পরিবারের সঙ্গে বসবাস করছেন।

গত ১০ ডিসেম্বর বিএনপির গণবিক্ষোভের সময় নেতাকর্মী নিয়ে নিজ এলাকা মোহাম্মদপুরে অবস্থান করতে দেখা গেছে পাগলা মিজানকে। এছাড়া তাকে নানা রকম কর্মসূচিতেও প্রকাশ্যে অংশ নিতে দেখা যায়।

মোহাম্মদপুর এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জামিনে মুক্ত হওয়ার পরে মিজান প্রকাশ্যে রাজনীতিতে নেমেছেন। তিনি এলাকায় সব ধরনের রাজনৈতিক সভা সমাবেশে থাকছেন।

২০১৯ সালে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের সময় ভারতে পালানোর চেষ্টাকালে ১১ অক্টোবর শ্রীমঙ্গলে র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন পাগলা মিজান। গ্রেপ্তারের পর প্রথমে মৌলভীবাজার কারাগারে পাঠানো হয় তাকে। পরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার হয়ে সবশেষ কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে যান। সেখান থেকে তিন বছর ২৭ দিন জেল খাটার পর জামিনে মুক্তি পান।

টেন্ডারবাজি-চাঁদাবাজি, ভূমি দখল, মোহাম্মদপুর বিহারি ক্যাম্পে মাদক ও চোরাই গ্যাস-বিদ্যুতের ব্যবসার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে প্রভাবশালী সাবেক এই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে।

৩২ নম্বরে হামলার আসামি মিজান

১৯৮৯ সালের ১০ আগস্ট মধ্যরাতে ফ্রিডম পার্টির সদস্য কাজল ও কবিরের নেতৃত্বে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর রোডে বঙ্গবন্ধু ভবনে হামলা চালায় একটি চক্র। তারা সেখানে গুলি করে এবং বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এ সময় শেখ হাসিনা বাড়ির ভেতর অবস্থান করছিলেন। বাড়ির নিরাপত্তাকর্মীরা পাল্টা গুলি চালালে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ধানমন্ডি থানায় মামলা হয়।

ওই মামলায় ৯৭ সালে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ১৬ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেয়। অভিযোগপত্রে মিজানুর রহমান ওরফে পাগলা মিজানকে হামলার পরিকল্পনাকারীদের একজন হিসেবে উল্লেখ করা হয়। হামলাকারীদের মধ্যে ছিলেন মিজানের ছোট ভাই মোস্তাফিজুর রহমানও, যিনি ৯৫ সালে দুষ্কৃতকারীদের গুলিতে মারা যান।

কতদূর এগোলো পাগলা মিজানের মামলার বিচার?

হাবিবুর রহমান মিজান অর্থপাচার এবং অবৈধ অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যান। অস্ত্র মামলায় আদালতে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু চার্জ গঠন হয়েছে কি হয়নি সেটা নিয়ে কারো পরিষ্কার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। আর অর্থপাচারের মামলায় অভিযোগপত্র জমা পড়েছে আদালতে।

লাপাত্তা কাউন্সিলর মিজানের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ

মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানের বিরুদ্ধে রয়েছে হত্যা, মাদকের কারবার, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগ। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিজান ওরফে পাগলা মিজান তার এলাকার মানুষের কাছে ছিলেন মূর্তমান ত্রাস।

তার বিরুদ্ধে শ্রীমঙ্গল থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা করে র‌্যাব। এছাড়া রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় অর্থপাচার আইনে আরেকটি মামলা করে র‌্যাব।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল থানায় করা অস্ত্র মামলায় অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। মামলাটি বর্তমানে মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন।

ক্যাসিনো কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগে মিজানের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনের একটি মামলা করে র‌্যাব। ওই মামলাটি তদন্ত করে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। মামলাটি বর্তমানে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯-এ বিচারাধীন।

মামলার বিষয়ে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আবু ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে। তবে কোনো পর্যায়ে রয়েছে তা নথি না দেখে বলতে পারব না।’

(ঢাকাটাইমস/২০জানুয়ারি/এএ/এফএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিশেষ প্রতিবেদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :