দ্বিতীয় পর্ব

ইজতেমায় জুমার নামাজে লাখো মুসল্লি

প্রকাশ | ২০ জানুয়ারি ২০২৩, ১৪:৩৭ | আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২৩, ১৪:৪৭

টঙ্গী-পুবাইল (গাজীপুর) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের প্রথম দিন টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে ইজতেমা মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে জুমার নামাজের বৃহত্তম জামাত। দুপুর ১টা ৫৫ মিনিটে জুমার নামাজ শুরু হয়। 

ইজতেমা মাঠে জুমার নামাজে ইমামতি করেন দিল্লির মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ কান্ধলভী।     

ইজতেমায় যোগদানকারী মুসল্লি ছাড়াও জুমার নামাজে অংশ নিতে ঢাকা-গাজীপুরসহ আশপাশের এলাকার লাখ লাখ মুসল্লি ইজতেমাস্থলে হাজির হয়েছেন। 

বেলা শুরু হওয়া পর থেকে রাজধানীসহ আশপাশের এলাকা থেকে ইজতেমা মাঠের দিকে মানুষের ঢল নামে। দুপুর ১২টার দিকে ইজতেমা মাঠ পরিপূর্ণ হয়ে যায়। বাস, ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে মুসল্লিরা ইজতেমা মাঠের দিকে ছুটে আসেন জুমার নামাজ আদায় করার জন্য। মাঠে স্থান না পেয়ে মুসল্লিরা মহাসড়ক ও বাড়ির ছাদে, শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ছাদে, অলি-গলিসহ যে যেখানে পেরেছেন হোগলা পাটি, চটের বস্তা, খবরের কাগজ বিছিয়ে জুমার নামাজে শরিক হয়েছেন।

ফলে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানবাহন চলাচল সাময়িক বন্ধ হয়ে যায়।

ঘোড়াশাল থেকে আসা মুসল্লি আবুল হোসেন জানান, বড় জামাতে নামাজ আদায় করা অনেক ফজিলত।

হারবাইদ এলাকার বাসিন্দা হাজী জামান মিয়া। তিনি এসেছেন জুমার নামাজে অংশ নিতে।

তিনি বলেন, আমার কাছে কোন ভেদাভেদ নাই, প্রথম পর্ব দ্বিতীয় পর্ব নাই। ইজতেমায় বড় জুমার জামাত হয় এজন্য এসেছি। 

ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে গাজীপুর মেট্টাপুলিটন পুলিশের কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ইজতেমা যাতে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়, সে জন্য বরাবরের মতো এবারও কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। সমস্ত মাঠ নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। প্রত্যাশা করছি, প্রথম পর্বের মতো দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমাও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে।’

শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় ইজতেমা মাঠে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

জিএমপি কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘দ্বিতীয় পর্বে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজারের মতো বিদেশি অতিথি আছেন। তাদের জন্যও নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। জুমার নামাজ আদায় করতে আশপাশের জেলার অনেক মুসল্লিরা এখানে আসেন। জুমার নামাজ উপলক্ষে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যানজট মুক্তভাবে চলাচলের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক ট্রাফিক পুলিশ রাখা হয়েছে। জুমার নামাজে অংশ নেওয়া মানুষ যাতে নিবিঘ্নে আসা-যাওয়া করতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘আগামী রবিবার মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। অংশ নেওয়া মুসুল্লি ছাড়াও অসংখ্য মুসল্লি আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে এখানে আসেন। সেটির জন্য ট্রাফিক ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। শনিবার মধ্যরাত হতে টঙ্গী ব্রিজ, কামারপাড়া ব্রিজ, ভোগড়া বাইপাস, মীরেরবাজার এলাকায় ব্যারিকেড দিয়ে ইজতেমা সংলগ্ন এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হবে। ইজতেমা শেষে যাওয়ার সময় একই ব্যবস্থাপনা অব্যাহত থাকবে। আমরা নাগরিকদের কাছে আশা করব তারা যেন সুশৃঙ্খল পরিবেশ বজায় রাখার জন্য। রাস্তায় যে ট্রাফিক পুলিশ কাজ করবে তাদের সহযোগিতা করবে।’ 

উল্লেখ্য, ১৩ জানুয়ারি শুরু হয়ে ১৫ জানুয়ারি রবিবার আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে প্রথম পর্বের (আলমি শূরার (জোবায়ের পন্থির) বিশ্ব ইজতেমার সমাপ্তি হয়েছে। মাঝে ৪দিন বিরতি দিয়ে ২০ জানুয়ারি দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাযের অনুসারী (সাদপন্থী) মুসল্লিরা বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয়পর্বে অংশ গ্রহণ করে। ২২ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে এবারের ৫৬তম বিশ্ব ইজতেমার সমাপ্তি ঘটবে।

(ঢাকাটাইমস/২০জানুয়ারি/এসএ)