পাকিস্তানি মাল্টা চাষে সফল রাজবাড়ীর আ.লীগ নেতা, বছরে আয় ২০ লাখ

প্রকাশ | ২১ জানুয়ারি ২০২৩, ১৫:৫৩

এম মনিরুজ্জামান, রাজবাড়ী

রাজবাড়ীতে মাল্টা চাষ করে সাড়া ফেলেছেন আদর্শ কৃষক মো. আলাউদ্দিন শেখ। এখন তার মাল্টা বাগানই হয়ে উঠেছে জেলার অন্যতম দর্শনীয় স্থান। দূর-দূরান্ত থেকে অনেকেই ছুটে আসছেন তার মাল্টা বাগান দেখতে। তার দেখাদেখি অনেকেই বিষমুক্ত এই বিদেশি রসালো ফল মাল্টা বাগান করতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন। তার কাছ থেকে চারা কিনে নিয়ে অনেকে মাল্টা চাষও করেছেন। প্রথম বছর তেমন ফল না  আসলেও দ্বিতীয় বছরে আলাউদ্দিন মিয়া ১২০০ মাল্টা গাছ থেকে ২০ লাখ টাকার ফল বিক্রির আশা করছেন। 

গাছে গাছে সবুজ পাতার ফাঁকে থোকায় থোকায় ঝুলছে সুস্বাধু মিস্টি ও রসালো ফল মাল্টা। আলাউদ্দিনের বাগানের মাল্টা দেশের  অন্য জায়গার চেয়ে আকারে বেশ বড় বড়।  রাজবাড়ী সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়নের ঘোর পালান গ্রামের আর্দশ কৃষক এবং রাজবাড়ী জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা মো: আলাউদ্দিন মিয়ার ভাগ্য বদলে দিয়েছে মাল্টা চাষ। দুই বছরেই বাগান জুড়ে ১২শ’গাছেই  আসে মাল্টা।  

তিনি সাংবাদিকদের জানান, ইউটিউব ও গুগল থেকে পরামর্শ গ্রহণ করে বানিজ্যিকভাবে মালটা চাষ করে সফল হয়েছেন রাজবাড়ীর কৃষক আলাউদ্দিন মিয়া। তিনি ২০২০সালে চার বিঘা জমিতে  প্রথম বছর সাউদ আফ্রিকার মাল্টা চারা রোপন করে তেমন ফল না পেয়ে পরের বছর পাকিস্থানী জাতের মাল্টা চারা সংগ্রহ করে রোপন করে সেই বছরই ফলে সফলতা ও লাভের মুখ দেখেছেন। এ বছর বিশ লাখ টাকা মালটা বিক্রি করার আশা করছেন তিনি। আর  সাথী ফসল থেকে প্রতি সিজেনেই চার বিঘা জমি থেকে তিন লক্ষাধিক টাকার ফসল উৎপাদন করেন। আলাউদ্দিনের মাল্টা বাগানে কাজ করে স্থানীয় শ্রমিকরা খুশি।

মাল্টা চারার নার্সরীও তৈরি করছেন তিনি। প্রতিটি চারা তিনি ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি করেনে। একই সাথে তিনি মাল্টা বাগানের মধ্যে ফুল কপি, তরমুজ ও মিষ্টি কুমড়া চাষ করেও প্রচুর লাভবান হচ্ছেন। তবে কৃষি বিভাগ থেকে সে কোন সহযোগিতা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন।

আলাউদ্দিনের মত আগ্রহী কৃষকদের অসান্য উদ্যোগই বিদেশি আমদানি নির্ভর মাল্টার বাজার দখল করেছে দেশে উৎপন্ন এই সুস্বাদু মাল্টা। সংরক্ষণের  কোনো রাসায়নিক উপাদানের ব্যবহার না থাকায় দিনি দিন টাটকা ও সতেজ ফল হিসেবে  বাড়ছে বিষমুক্ত এই মাল্টার চাহিদা।
আলাউদ্দিনের এই মাল্টার বাগান দেখতে প্রতিদিনই ভীড় জমান অনেকেই।

সফলতার এই ধারাবাহিকতায় ভবিষ্যাতে বিষমুক্ত এই মাল্টা চাষ আরো সম্প্রসারণ করার পরিকল্পনা করছেন আরঅউদ্দিন শেখ। স্থানীয় কৃষিতে সম্ভাবনার এক নতুন দুয়ার খুলে দিয়েছে আলাউদ্দিনের মাল্টা বাগান। তার দেখাদেখি এখন অনেকেই ঝুঁকছেন মাল্টা চাষে। যে কারণে এখন গোটা এলাকায় ছড়িয়ে পরেছে মাল্টা চাষ।

বারোমাসী উচ্চ ফলনশীল নতুন জাতের মাল্টা চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন রাজবাড়ীর আলাউদ্দিন।
আলাউদ্দিন আরও বলেন, চারা কিনতে দেশের বিভিন্ন ফার্মার ও  বিদেশ থেকেও অর্ডার দিচ্ছেন কেউ কেউ। লাভ জনক ফসল হওয়ায় অন্যান্য কৃষকেরাও আগ্রহী দেখাচ্ছে এই জাতের মালটা চাষে।

আর চাষি আলাউদ্দিনের অভিযোগ অশিকার করে রাজবাড়ী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জনি খান বলেন, কৃষি বিভাগ থেকে মালটা চাষে কৃষককে দেওয়া হচ্ছে সব ধরনের সহযোগিতা।  

(ঢাকাটাইমস/২১জানুয়ারি/এআর)