আধিপত্যের দ্বন্দ্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ঢুকে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে জখম
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শের ই বাংলা হলে ঢুকে দুই ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে জখম করেছে একদল যুবক। এতে ওই দুই ছাত্রলীগ নেতা গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
মঙ্গলবার ভোরে শের ই বাংলা হলের ৪০১৮ নম্বর কক্ষে এই ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী হলের আবাসিক ছাত্র জিয়া বলেন, মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে হঠাৎ করে ১০-১৫ জন ব্যক্তি হলে প্রবেশ করে। এরপর তারা সকল রুম বাইরে থেকে আটকে দেয়। পরে তারা ছাত্রলীগ নেতা মহিউদ্দিন আহম্মেদ সিফাতকে রুম থেকে টেনে হিচরে বের করে হাতুরি পেটা করে এবং জিএম ফাহাদের হাত ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি তাকে কুপিয়ে জখম করেছে। এরপর আহত অবস্থায় তাদের দুইজনকে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত জিএম ফাহাদ বলেন, হামলাকারীরা সকলেই হেলমেটধারী ছিল। তবুও তাদের শনাক্ত করতে পেরেছি। হামলাকারী আলীম সালেহী, অমিত হাসান রক্তিম, রিয়াজ মোল্লা, সৈয়দ জিসান আহম্মেদকে শনাক্ত করতে পেরেছি। এরা সবাই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আমাদের।
হামলার অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা রিয়াজ মোল্লা বলেন, সিফাতের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ঐক্যবদ্ধ। তারা সিফাতের অপকর্মের বিরুদ্ধে রুখে দাড়িয়ে তাকে প্রতিহত করেছে বলে আমার ধারণা। এছাড়া সিফাত বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের এলাকায় জমি দখল থেকে শুরু নানা ধরণের অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল। বহু মানুষ তার ওপর ক্ষিপ্ত। এখন মূলত কারা তার ওপর হামলা করেছে সেটা বলতে পারবো না।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর অনুসারী মহিউদ্দিন আহম্মেদ সিফাতের নানা অপকর্ম নিয়ে অতিষ্ঠ ছিল শিক্ষার্থী ও তার গ্রুপেরই ছাত্রলীগের কর্মীরা। আর শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঞ্চারিত ক্ষোভের বহিপ্রকাশ এই হামলা। কেন না সিফাতের ওপর হামলায় যাদের নাম উঠে এসেছে তাদের মধ্যে আলীম সালেহী, সৈয়দ জিসান আহম্মেদ ও রিয়াজ মোল্লা সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর অনুসারী। পাশাপাশি অমিত হাসান রক্তিম পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুখ শামীমের অনুসারী ছাত্রলীগ নেতা। এছাড়া আধিপত্য বিস্তারের একটি বিষয় রয়েছে এখানে।
এদিকে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম বলেন, আহত সিফাতের শরীরে ফুলা জখম রয়েছে এবং ফরহাদের শরীরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখমের চিহ্ন পাওয়া সহ তার হাতও ভেঙে ফেলা হয়েছে। তাদের চিকিৎসা চলছে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের দক্ষিণ বিভাগের উপ কমিশনার আলী আশরাফ ভূঞা বলেন, আহতদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা সুস্থ হলে আরও ভালোভাবে মূল ঘটনা জানতে পারবো। হামলাকারী কারা সে বিষয়টি এখনো নিশ্চিতভাবে জানাতে পারেনি আহতরা। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শের ই বাংলা হলের প্রভোস্ট আবু জাফর বলেন, গণিত বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র সিফাতও লোকপ্রশাসন ডিপার্টমেন্টের মাস্টার্সের ছাত্র ফাহাদের ওপর অতর্কিত হামলায় তারা গুরুতর আহত হয়েছে। হামলাকারীদের চিহ্নিত করা যায়নি। পুরো বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দেখছে।
(ঢাকাটাইমস/২৪জানুয়ারি/এআর)