সীমান্তে হত্যাকাণ্ড বন্ধ না হওয়া দুঃখজনক: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশ | ২৪ জানুয়ারি ২০২৩, ১৯:২৬ | আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২৩, ২০:২০

লালমনিরহাট প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

সীমান্ত হত্যাকাণ্ড বন্ধ না হওয়া দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তবে ভারত-বাংলাদেশ দুই পক্ষের চেষ্টায় শিগগির এমন হত্যাকাণ্ড বন্ধ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।

মঙ্গলবার বিকালে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধার গড্ডিমারী ইউনিয়নের তিস্তা ব্যারেজ সংলগ্ন দোয়ানী এলাকায় শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে কথা বলেন মন্ত্রী। র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-১৩ (র‍্যাব) আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রায় ছয় হাজার গরিব, দুস্থ ও অসহায় মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, সীমান্তে হত্যাকাণ্ড বন্ধ হচ্ছে না, এটা দুঃখজনক। সীমান্তে হত্যাকাণ্ড বন্ধে সাধ্যমত চেষ্টা করছে বিজিবি ও বিএসএফ। আমরা দুই পক্ষই আন্তরিক এটা বন্ধ করতে। খুব শিগগির এটা বন্ধের আমাদের পরিকল্পনা। আমরা সফল হব।

তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের মন্ত্রী ও সচিব পর্যায়ে পাশাপাশি বিজিবি বিএসএফ পর্যায়ে সভা করে থাকে। আমাদের মন্ত্রী পর্যায়ে দুই বছর পর পর আলোচনা হয়ে থাকে। বাংলাদেশ ও ভারত সরকার উভয়ে সীমান্তে হত্যা বন্ধে আমরা আন্তরিক। তারা বলে থাকেন বর্ডার ক্লিং বন্ধ করবে। আমাদের বিজিবি এবং বিএসএফ আলোচনা করেন এবং আমাদের সঙ্গে কথা ছিল, তারপরও সীমান্তে হত্যা হচ্ছে এটা দুঃখজনক। তবে এটা দুই পক্ষকেই বন্ধ করা উচিত।

এসময় তিনি জানান, ভারত সীমান্তে থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কবর ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে সরকার। মন্ত্রী বলেন, ভারত সীমান্তে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কবর আছে তা ফিরিয়ে আনার জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের কবর বাংলাদেশে নিয়ে আনার বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।

যতদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেঁচে থাকবেন ততদিন বাংলাদেশের আকাশ বাতাস সবই ভালো থাকবে মন্তব্য করে মন্ত্রী আরও বলেন, জনগণ বিশ্বাস করে শেখ হাসিনার বিকল্প কিছু নেই। তার নেতৃত্বে আলোকিত হয়েই দেশ এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশের মানুষ আর কোনোদিন অন্ধকারে যাবে না। দেশের মানুষ আর কোনোদিন সন্ত্রাস জঙ্গিবাদে সমর্থন দেবে না। এখন পৃথিবীর বহুদেশে বাংলাদেশের সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ দমনের প্রসংশা করা হয়। 
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আসাদুজ্জামান খান কামাল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, আমাদের চ্যালেঞ্জ অনেক। আজকে আমরা সব চ্যালেঞ্জকে অতিক্রম করে একটা সুন্দর পরিস্থিতিতে এসেছি। আমাদের আইন শৃঙ্খলাবাহিনী ও দক্ষ প্রশাসন তাদের অভিজ্ঞতা সাহসিকতা ও দেশপ্রেম দিয়ে জনসেবা করছেন। র‍্যাব শুধু জঙ্গি দমন করে না। যখন যা প্রয়োজন র‍্যাব স্বশরীরে মানুষের কাতারে সেবা দেয়ার জন্য চলে আসেন। র‍্যাব শুধু এলিট ফোর্স নয়, তারা জনগণের সেবায় কাজ করে যাচ্ছেন। সেবার মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের হৃদয় জয় করেছে র‍্যাব। জনগণের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। সেখানে র‍্যাব বাহিনীর প্রশংসা সবার মুখে মুখে। 
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষতা, দূরদর্শিতা, নেতৃত্ব এবং তার তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের সক্ষমতার কারণে আমরা ভালো আছি। দেশের মানুষ এখন যখনই কোনো দুর্যোগ আসে, সমস্যা সংকট দেখা দেয় তখনই সবাই একসঙ্গে ঘুরে দাঁড়ায়। দেশের মানুষের জন্য যখন যা প্রয়োজন, প্রধানমন্ত্রী কখনো তা করতে না করেননি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে নো বলে কোনো শব্দ নেই।
তিস্তা সমস্যা প্রসঙ্গে আসাদুজ্জামান খান বলেন, তিস্তায় অনেক সমস্যা, পানি প্রবাহ নেই। কিন্তু তিস্তায় পানি প্রবাহ না থাকলেও ফসল যাতে হয় সেদিকে প্রধানমন্ত্রীর খেয়াল রয়েছে। তিস্তা নির্ভর এই অঞ্চলে ফসল উৎপাদনে যা যা করণীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা করে যাচ্ছেন। আমরা মনে করি এখানকার মানুষজন আরও এগিয়ে যাবে। এখানকার নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে, নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হওয়ায় সবক্ষেত্রে সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়েছে। এখন যত ষড়যন্ত্রই হোক আমাদের দুর্বার এই গতি কেউ আটকাতে পারবে না। কারণ দেশের মানুষ আর অন্ধকারে ফিরতে চান না। 
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন লালমনিরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাহার হোসেন, র‍্যাবের মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি এম খুরশীদ হোসেন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপস্) কর্নেল কামরুল হাসান, রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি মোহা. আবদুল আলীম মাহমুদ, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার নুরে আলম মিনা, র‍্যাব-১৩ এর অধিনায়ক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম প্রমুখ।
এছাড়াও লালমনিরহাট জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান, লালমনিরহাট জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক টিএমএ মুমিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

(ঢাকাটাইমস/২৪জানুয়ারি/ইএস)