তাজ ইসলামের কবিতা
প্রকাশ | ২৫ জানুয়ারি ২০২৩, ১৪:০৪

নগর যাযাবর
মাসের শেষ দিন
কিংবা প্রথম দিন
নগরবাড়ির অসংখ্য গেটে
বাসা বদলের গাড়ির আনাগোনা।
মরু বেদুইন যেন তাবু গুটিয়ে
ছুটে চলছে অন্য এক মরুদ্যানের সন্ধানে।
একটি এপার্টমেন্ট কিংবা একটি বাসা
ভাড়াটিয়ার কাছে অচেনা নগরুদ্যান।
ভাড়া নিয়ে তারা তাবু গাড়ে
কর্মময় জীবন যাপন প্রত্যাশায়।
অস্বস্তিবোধ হলেই ছেড়ে ছুঁড়ে
ছুটে চলে অন্য বাসায় ভিন্ন স্বস্তির আশায়।
এভাবেই যাপন করে নাগরিক তার
নগর যাযাবর ভাড়াটিয়া জীবন।
আঙুলগোত্র ও গর্জে ওঠা তর্জনী বৃত্তান্ত
আঙ্গুলগোত্রের নেতৃস্থানীয় বৃদ্ধাঙ্গুল
নেমে পড়ে দিত যখন দাসখতে টিপসহি
আঙ্গুলগোত্র থেকে গর্জে ওঠে তর্জনী
আপনি ভুল পথে নত হচ্ছেন
দাসখতের পথ কভু হতে পারে না সহি।
তর্জনী গর্জে ওঠলেই তার সাথে একাত্ম
ও অনুগত হয় আঙ্গুলগোত্রের মধ্যমা, এবং সংঘবদ্ধ হয় কনিষ্ঠা ও অনামিকা
বৃদ্ধাঙ্গুল তখন বুকে ফিরে পায় হিম্মত
সমস্ত আঙুলেরা জোটবদ্ধ শক্তিতে মুষ্টিবদ্ধ হয়ে নেমে আসে ময়দানে।
তর্জনী তখন তস্করের নাম ধরে ধরে মাইক্রোফোনের সামনে লাফাতে লাফাতে শাসায়।
আর সমস্ত অন্যায্য দাবীর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে
সাহসে, সক্রোধে ভাটি বাঙলার বাম বৃদ্ধাঙ্গুল
ওষ্ঠের কাছাকাছি নিয়ে বলে ‘তোমারে চেট্যা দিমু।
পারলে তুমি আমার কিছু ছিড়্যা ফালাইও।’
যে কোন হুংকারের বিপক্ষে
একবার তর্জনী গর্জে ওঠলে
আঙুলগোত্র ঐক্যবদ্ধ হয়ে
রাজপথে নেমে পড়ে গগনবিদারী
মুষ্টিবদ্ধ শ্লোগান নিয়ে।
দাবীর ঢেউ আঁচড়ে পড়ে পাষাণ প্রাচীরে
এবং একদিন সত্যি সত্যি জয় হয় মানুষের ন্যায্য দাবীর।
মাতৃভাষা
ক.
ভাষা আছে পাখিদের, নদীদের
বৃক্ষের ডালদের
ভাষা আছে পাতাদের,ফলদের
ফুল শাদা লালদের।
কুলুকুলু,রিনিঝিনি, ছলছল,গড়গড়
এইসব ভাষা বুঝে কেউ কী
ধুপ্পুর, ধপ্পাস,চিউচিউ,ঘেউঘেউ
নদী তার কূলে এসে কী যে
বুঝে দেখে ঢেউ কী
মানুষের সুখ আছে
বুক ভরা শোক আছে
প্রেম আছে প্রীতি আছে
আছে কত আশা
আকুলতা প্রকাশের আছে তার ভাষা।
রাগ আছে, দুঃখ আছে
আছে ভালোবাসা
প্রকাশে সহায় তার মাতৃভাষা।
খ.
ফাগুন মাসের আগুন রাঙা ফুল
রাঙিয়ে তোলে তোমার কালো চুল
ফুলরা এসে কালো চুলের
খোঁপায় বাঁধে বাসা
মনে তখন উঁকিঝুঁকি
এই বুঝি হয় এই বুঝি হয়
তোমার আমার গভীর ভালোবাসা।
গ.
মাতৃভাষা বাংলা আমার
বাংলা ভাষা প্রিয়
এই ভাষাতে মাকে বলি
আদর আমায় দিও।
মাতৃভাষা মায়ের ভাষা
আমার প্রাণের ভাষা
এই ভাষাতে প্রকাশ করি
মনের সকল আশা।