মর্গের দরজা ছোট: ‘মরচুয়ারি ক্যাবিনেট’ পড়ে আছে হাসপাতালের বারান্দায়

প্রকাশ | ২৭ জানুয়ারি ২০২৩, ১৪:৩১ | আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২৩, ১৫:৪৩

জুনাইদ কবির, ঠাকুরগাঁও

ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালের বারান্দার পড়ে আছে মর্গের জন্য বরাদ্দ দেওয়া মরচুয়ারি ক্যাবিনেট। হাসপাতালের লাশকাটা ঘরটি (মর্গ) জরাজীর্ণ ও ৪৪ বছরের পুরনো। মর্গের দরজাটিও ছোট। ওই দরজা ভেঙে বড় করতে গেলে ভবনের ছাদ ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালে বরাদ্দ দেওয়া ‘মরচুয়ারি ক্যাবিনেট’ (মৃতদেহ সংরক্ষণের হিমঘর) যন্ত্রটি সেখানে স্থাপন করা যায়নি। মৃতদেহ সংরক্ষণের যন্ত্রটি পড়ে আছে হাসপাতালের বারান্দায়।

ঠাকুরগাঁওয়ের জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মৃতদেহ সংরক্ষণের জন্য গত বছর ৮ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় ঔষধাগারে একটি মরচুয়ারি ক্যাবিনেট বরাদ্দের আবেদন করেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ফিরোজ জামান জুয়েল। বরাদ্দ পেয়ে ১২ সেপ্টেম্বর ঢাকায় গিয়ে যন্ত্রটি নিয়ে আসেন হাসপাতালের ভান্ডাররক্ষক মাহবুবুর রশিদ।

মাহবুবুর রশিদ বলেন, কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে সরবরাহ করা কাগজপত্রে দেখা যায়, মরচুয়ারি ক্যাবিনেটের দাম ২৪ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। এতে চারটি চেম্বার রয়েছে। যেখানে একইসঙ্গে চারটি মরদেহ সংরক্ষণ করা যায়, কিন্তু জায়গা সংকটের জন্য যন্ত্রটি স্থাপন করা যাচ্ছে না।

লাশের ময়নাতদন্তের জন্য ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালের দেড় কিলোমিটার দূরে একটি মর্গ রয়েছে। তবে সেখানে মৃতদেহ সংরক্ষণের জন্য কোনো মরচুয়ারি ক্যাবিনেট ছিল না। ইটের গাঁথুনির ওপর ছাদ দেওয়া মর্গের ভবনটি ১৯৭৮ সালের তৈরি। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় ভবনটি জরাজীর্ণ। কিন্তু যন্ত্রটির তুলনায় মর্গের কক্ষের দরজা ছোট হওয়ায় সেখানে সেটা স্থাপন করা যায়নি।

সরেজমিন দেখা যায়, পুরনো হাসপাতালের নিচ তলায় ওষুধ বিতরণের কাউন্টারের সামনে খোলা জায়গায় মরচুয়ারি ক্যাবিনেটটি রাখা। পলিথিনে মুড়িয়ে রাখা হলেও সেটাতে ধুলো-ময়লার আস্তরণ পড়েছে। কোনো কোনো জায়গার পলিথিন ছিঁড়ে গেছে।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ফিরোজ জামান বলেন, যন্ত্রটি বরাদ্দ পেয়ে তা স্থাপনে ব্যবস্থা নিতে গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে চিঠি দেওয়া হয়। গণপূর্ত বিভাগ হাসপাতালের মর্গ পরিদর্শন করেছেন। কিন্তু যন্ত্রটির তুলনায় দরজা ছোট হওয়ায় সেখানে তা স্থাপন করা যাচ্ছে না। আবার দেয়াল ভেঙে দরজা সম্প্রসারণ করে যন্ত্রটি স্থাপন করতে গেলে ঝুঁকিপূর্ণ ছাদ ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

গণপূর্ত বিভাগ ঠাকুরগাঁও কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী জিয়াউর রহমান জানান, হাসপাতালের পুরনো মর্গটি ঝুঁকিপূর্ণ। মর্গের বর্তমান দরজা দিয়ে মরচুয়ারি ক্যাবিনেটটি ভেতরে ঢোকানোর সুযোগ নেই। এ কারণে ভবনের দেয়াল ভেঙে দরজা সম্প্রসারণ করতে হবে। আবার তা করতে গেলে ভবনটি ভেঙে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে। এ জন্য সেখানে যন্ত্রটি স্থাপনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হয়েছে। এখন হাসপাতালেই একটি উপযোগী ঘর নির্বাচন করে যন্ত্রটি স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ কাজের জন্য দ্রুত দরপত্র আহ্বান করা হবে।

এ বিষয়ে সিভিল সার্জন নুর নেওয়াজ আহমেদ বলেন, মরচুয়ারি ক্যাবিনেট স্থাপনে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করি, দ্রুততম সময়ের মধ্যে যন্ত্রটি ব্যবহার শুরু করা যাবে।

(ঢাকাটাইমস/২৭জানুয়ারি/এলএ/এসএ)