শরীরে পানির ঘাটতি পূরণ করে যেসব পানীয়

প্রকাশ | ২৮ জানুয়ারি ২০২৩, ০৯:৩৬ | আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:৩০

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

পানির কোনো বিকল্প নেই। পানির অপর নাম জীবন। সমস্ত ধরনের প্রাণের বেঁচে থাকার জন্য পানি অপরিহার্য। পৃথিবীতে ৭০.৯% অংশ জুড়ে পানির অস্তিত্ব রয়েছে। পানি ছাড়া পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব থাকা সম্ভব না। একজন মানুষ পানি ছাড়া গড়ে মাত্র তিন দিন বেঁচে থাকতে পারে। শরীর সুস্থ রাখতে, চুলের সমস্যা বা ত্বকের কিংবা পাচনতন্ত্রের, সবকিছু পারফেক্ট রাখতে সঠিক পরিমাণে পানি খাওয়া খুবই জরুরি। শরীরে পানির ঘাটতি তৈরি হলে নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। হজমের গোলমাল থেকে প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া— শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি না থাকলে এই সমস্যাগুলো দেখা যায়।

শরীরে পানির ঘাটতি তৈরি হলে প্রাথমিকভাবে যেসব উপসর্গগুলো দেখা যায়। যেমন সব সময় খিদে পায়। প্রস্রাব হলুদ হয়ে যায়। প্রস্রাব করার সময় জ্বালা করতে পারে। শ্বাসের মধ্যে দুর্গন্ধ থাকে। মাথা ব্যথা। কোষ্ঠকাঠিন্য। দুর্বলতা। ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া। অস্থিসন্ধিতে ব্যথা। মোটা হয়ে যাওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি। লো ব্লাডপ্রেসারের সমস্যা। কিডনির সমস্যা ইত্যাদি। এ ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে নিজে খেয়াল করে দেখুন আপনি কী পরিমাণ পানি পান করছেন। কম হলে আজই পানি পান বাড়িয়ে দিন। শরীর চাঙ্গা রাখতেও পানির ভূমিকা কম নয়। তবে শীতকালে পানি পান করার প্রবণতা তলানিতে এসে ঠেকে। তেষ্টা না পেলে পানি পান করার কথা মনেও থাকে না। সেই কারণে শীতকালে অল্পেতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন অনেকে। কিন্তু পানি পান করার কথা যদি একেবারেই মনে না থাকে, তা হলে সুস্থ থাকতে ভরসা রাখতে পারেন কয়েকটি পানীয়ের উপর।

 

গ্রিন টি

অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ গ্রিন টি শরীর সুস্থ রাখতে দারুণ কার্যকর। ওজন কমাতে গ্রিন টি-র জুড়ি মেলা ভার। তবে মেদ ঝরানো ছাড়াও গ্রিন টি ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। এতে থাকা পলিফেনলস স্তন এবং মূত্রাশয়ের ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। গ্রিন টি ডায়াবিটিসের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। টাইপ ২ ডায়াবিটিসের রোগীদের গ্রিন টি খাওয়ার কথা বলে থাকেন চিকিৎসকরা।

 

লেবুর পানি

শরীরে জমে থাকা টক্সিন বাইরে বার করে দিতে লেবুর পানির ভূমিকা অনবদ্য। এই পানীয় হজমের গোলমাল কমানো থেকে শুরু করে লিভার সুস্থ রাখা— সবেতেই লেবুর জল দারুণ উপকারী। এই পানীয় ভিটামিন সি-র সমৃদ্ধ উৎস। ওজন ঝরাতেও লেবুর পানির উপর ভরসা রাখতে পারেন। তবে লেবুর রস সব সময়ে উষ্ণ পানির সঙ্গে মেশাবেন। তা হলে বাড়তি উপকার পাবেন।

 

স্যুপ

সর্দি-কাশি যেন শীতের ছায়াসঙ্গী। একবার হানা দিলে সহজে কমতে চায় না। এই সময়ে শরীরের আর্দ্রতা যেন আরো কমে যায়। তাই সুস্থ থাকতে স্যুপ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন পুষ্টিবিদরা। নানা রকম সবজি দিয়ে তৈরি স্যুপ সর্দি-কাশির সময়ে স্বস্তি দেয়। পালংশাক দিয়েও স্যুপ তৈরি করে নিতে পারেন। শরীরের আর্দ্রতা বজায় ভরসা রাখতে পারেন স্যুপে।

 

ফলের রস

পানির অন্য একটি বিকল্প হতে পারে ফলের রস। তবে বাইরে থেকে ফলের রস কিনলে আলাদা কথা। কারণ, এই ধরনের পানীয়ে শর্করার পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। তবে বাড়িতে ফলের রস করে খেলে সবচেয়ে উপকারী। ফলের রসে ভরপুর পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ থাকে। সুস্থ থাকতে আপেল, গাজর, পালং শাকের মতো স্বাস্থ্যকর সব্জিগুলোতে ভরসা রাখতে পারেন।

 

হলুদ দুধ

রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস হলুদ দুধ খাওয়ার অভ্যাস কমপক্ষে স্বাস্থ্যকর। শরীরকে ভেতর থেকে উষ্ণ রাখে। ঘুমও ভালো হয়। এর অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণ শরীরে প্রদাহ দূর করে। শরীরের আর্দ্রতা ধরে রাখতেও হলুদ দুধ সত্যিই উপকারি। তবে হলুদ সরাসরি শরীরের আর্দ্রতা ফেরাতে পারে না। দুধ সেই কাজটি করে। তবে সার্বিক সুস্থতার জন্য হলুদ কার্যকরী। কম ফ্যাটযুক্ত কিংবা ফ্যাটবিহীন দুধ শরীরে পটাশিয়াম ও ক্যালসিয়াম সরবরাহ করে। এ দুটি উপাদানই উচ্চ রক্তচাপ কমানোর সহায়ক হিসেবে কাজ করে।

ঢাকাটাইমস/২৮ জানুয়ারি/আরজেড)