যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ নিকোলস হত্যার চাঞ্চল্যকর ভিডিও

প্রকাশ | ২৮ জানুয়ারি ২০২৩, ১৭:৪৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

চলতি মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের মেমফিসে পুলিশের নির্যাতনের কারণে মারা যায় টায়ার নিকোলস নামে ২৯ বছর বয়সী এক কৃষ্ণাঙ্গ যুবক। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তার হিংসাত্মক সংঘর্ষের একটি ভিডিও সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে।

পুলিশদের নির্যাতনের ভিডিওটি শুক্রবার সন্ধ্যায় শহরের ভিমিও সাইটে পোস্ট করা হয়েছিল। এর পরদিনই অফিসারদের বিরুদ্ধে দ্বিতীয়-ডিগ্রি হত্যা, হামলা, অপহরণ, অফিসিয়াল অসদাচরণ এবং নিপীড়নের অভিযোগ আনা হয়।

ভাইরাল হওয়া ফুটেজে দেখা গেছে কৃষ্ণাঙ্গ অফিসাররা ট্রাফিক সিগনালে থাকা একটি গাড়ির মধ্য থেকে নিকোলসকে টেনে বের করে তাড়িয়ে তাড়িয়ে মারধর করে। তিন মিনিট ধরে তার ওপর অত্যাচার চালানো হয়।

গাড়ির চালকের আসন থেকে টেনে নিয়ে যাওয়ার সময় নিকোলসকে চিৎকার করে বলতে শোনা যায়, ‘ধুর, আমি কিছু করিনি... আমি শুধু বাড়িতে যাওয়ার চেষ্টা করছি।’ পুলিশরা তাকে জোর করে মাটিতে শুইয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয় এবং তার পেটে টিজার গান দিয়ে হামলা করে তারপর তার মুখে মরিচের স্প্রে করে দেয়।

এক অফিসার আরেক অফিসারকে চিৎকার করে বলছিল, ‘তাকে তাড়া করো, মাটিতে শুইয়ে দাও।’ তারপর তাকে ধস্তাধস্তি করে ফুটপাতে শুইয়ে দেওয়া হলে সে শান্তভাবে বলে, ‘ঠিক আছে, আমি মাটিতে আছি।’

একজন অফিসার চিৎকার করে গালি দিয়ে বলেন, ‘আমি তোমার (গালি জাতীয় শব্দ) ভাঙার আগে তোর হাত তোর পিঠের পিছনে রাখ।’ এর পরে আরেক অফিসার চিৎকার করে বলেন, ‘আমি সেগুলি ভাঙ্গার আগে তোর হাত আপনার পিঠের পিছনে রাখ’।

জবাবে নিকোলাস উচ্চস্বরে বলে, ‘আপনারা এখন বেশি করে ফেলছেন। আমি শুধু বাড়িতে যাওয়ার চেষ্টা করছি। থাম, আমি কিছু করছি না।’

এরপর নিকোলাস উঠে পালাতে গেলে অফিসাররা তাকে টেজার গান মারে এবং পাকড়াও করে ফেলে। তারপর সবাই মিলে তাকে লাথি, কিল, ঘুষি মারতে থাকে। এমনকি একজন রড দিয়েও পিটাতে দেখা গেছে।

মারধরের পরে যখন নিকোলাস আহত হয়ে লুটিয়ে পরে তখন অফিসাররা প্রায় কয়েক মিনিটের জন্য হাওয়া হয়ে যায়। আহত হয়ে তিন দিন পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

৭ জানুয়ারির সংঘর্ষের পর গত শনিবার ওই পাঁচ কর্মকর্তাকে পুলিশ বিভাগ থেকে বরখাস্ত করা হয়।

ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পর বিক্ষোভকারীরা মেমফিসের একটি পার্কে জড়ো হয়েছে এবং ঘটনার ন্যায় বিচারের দাবিতে তারা অবস্থান নিয়েছে।

বিক্ষোভের পূর্বাভাস পেয়ে নিউ ইয়র্ক সিটি, ফিলাডেলফিয়া, আটলান্টা, ওয়াশিংটন, ডিসি, মেমফিসসহ পুলিশ বিভাগগুলি তাদের সকলেই তাদের পুলিশ বাহিনীকে উচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে নির্দেশ দিয়েছে।

হোয়াইট হাউস বলেছে, তারা ফুটেজের প্রত্যাশিত প্রকাশের জন্য ফেডারেল প্রস্তুতি সম্পর্কে তাদের ব্রিফ করার জন্য বেশ কয়েকটি শহরের মেয়রদের সঙ্গে একটি করফারেন্স কল করেছে এবং মেয়রদের আগামী দিনে নিয়মিত যোগাযোগে থাকতে বলেছে।

(ঢাকাটাইমস/২৮জানুয়ারি/এসএটি)