ই-অরেঞ্জের সোহেলকে ফেরানোর অগ্রগতি জানাতে কড়া নির্দেশ হাইকোর্টের

প্রকাশ | ২৯ জানুয়ারি ২০২৩, ২৩:৩৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

ই-অরেঞ্জের পৃষ্ঠপোষক ও বরখাস্ত হওয়া বনানী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনার অগ্রগতির বিষয়ে তিন মাসেও জানাতে পারেনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তাই আবারও বিষয়টি নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। সোহেলকে ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ জানাতে আদালতের পক্ষ থেকে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  

 

রবিবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

 

এর আগে গত ৩ নভেম্বরও এ ব্যাপারে পদক্ষেপ জানতে চেয়ে আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। কিন্তু তিন মাসেও কিছু জানাতে পারেনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর মাঝে একবার দুই সপ্তাহ সময় নেওয়া হয়। এরপরও পদক্ষেপ জানাতে না পারায় রবিবার উষ্মা প্রকাশ করে ফের একই আদেশ দেন উচ্চ আদালত।

 

আদেশে বরখাস্ত হওয়া এই পুলিশ কর্মকর্তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ এবং ই-অরেঞ্জের লেনদেনের বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে কি না তা জানাতে স্বরাষ্ট্র সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যানকে দুই সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে।

 

আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হলফনামা করে তাদের এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। ব্যত্যয় ঘটলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন হাইকোর্ট।

 

রবিবার আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম লিটন। বিএফআইইউর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শামীম খালেদ আহমেদ। দুদকের পক্ষে আইনজীবী এ কে এম ফজলুল হক আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

 

ই-অরেঞ্জ থেকে ৭৭ কোটি টাকার পণ্য কিনে প্রতারণার শিকার ৫৪৭ জন গ্রাহকের পক্ষে মো. আফজাল হোসেন, মো. আরাফাত আলী, মো. তরিকুল আলম, সাকিবুল ইসলাম, রানা খান ও মো. হাবিবুল্লাহ জাহিদ নামে ছয়জন গ্রাহক গত বছর মার্চে হাইকোর্টে রিট করেন।

 

ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া মেহজাবিন ও তার ভাই সোহেল রানা, বিথি আক্তারসহ ই-অরেঞ্জের সঙ্গে সম্পৃক্তদের ব্যাংকসহ কার কোথায় কত ব্যক্তিগত সম্পদ আছে তা তদন্তে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) দক্ষ কর্মকর্তাদের দিয়ে কমিটি গঠনের নির্দেশনাসহ রুল চাওয়া হয় রিটে।

 

সেই রিটের প্রাথমিক শুনানির পর ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে গ্রাহক ঠকানো, টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। দুদক, বিএফআইইউ ও সিআইডিকে চার মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।

 

সেই সঙ্গে গ্রাহক নিরাপত্তা ও সুরক্ষায় ই-অরেঞ্জের সঙ্গে সম্পৃক্ত বনানী থানার বরখাস্ত পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানা, সোনিয়া মেহজাবিন ও বিথি আক্তারসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের ব্যর্থতা ও নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ব-বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা  জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

 

বাণিজ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, দুদক চেয়ারম্যান, পুলিশের মহাপরিদর্শক, বিএফআইউর প্রধান, সোহেল রানা, সোনিয়া মেহজাবিন ও বিথি আক্তারকে রুলের জবাব দিতে বলেন আদালত। 

(ঢাকাটাইমস/২৯জানুয়ারি/কেএম)