ত্বকের আঁচিল দূর করার ঘরোয়া উপায়

প্রকাশ | ৩০ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:১৪ | আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২৩, ১৪:২৩

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

আঁচিল নেই, এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যাবে। আঁচিল ত্বকের এক বিব্রতকর সমস্যা। মুখ, পিঠ, হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এটি হয়ে থাকে। ক্ষতিকর না হলেও এটি শারীরিক সৌন্দর্যের জন্য হানিকর। আবার একেবারে নিরীহও কিন্তু নয় এ আঁচিল। ক্যানসারের ভাইরাস লুকিয়ে থাকে এতে। তাই সচেতন হওয়া জরুরি। আঁচিল এমনিতে ক্ষতিকারক নয়। কিন্তু অনেক সময়ে তা অস্বস্তিকর হয়ে ওঠে।

আঁচিল সাধারণত দীর্ঘস্থায়ী হয়। উঠলে যেন আর যেতেই চায় না। যে সব মানুষের ওজন তুলনামূলকভাবে বেশি এবং যারা স্থুলকায় তাদের আঁচিল হওয়ার হারও অনেক বেশি। এর সাথে জিনগত একটা সম্পর্ক আছে, অর্থাৎ একই পরিবারের অন্যান্য সদস্যেরও হতে পারে।

হিউম্যানপ্যাপিলোমাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে শরীরে ক্রমশ বাড়তে থাকে এই সমস্যা। ছোট-বড় নানা আকৃতির আঁচিলে ভরে ওঠে শরীর। তবে সব ক্ষেত্রে আঁচিল সমানভাবে বড় হয় না। এক এক জনের ক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার ভিন্ন। আঁচিলের সমস্যা থেকে মুক্তি অনেকেই বিভিন্ন ওষুধ খান। কেউ আবার লেজার থেরাপিরও সাহায্য নেন। আঁচিল কমাতে এর পাশাপাশি ভরসা রাখতে পারেন ঘরোয়া কিছু টোটকায়।

 

অ্যাপল সিডার ভিনেগার

ভিনেগারে ভেজানো তুলো আঁচিলের ওপর রেখে গজ দিয়ে ঢেকে রাখুন সারা রাত। পরপর পাঁচ দিন করুন। অ্যাপল সিডার ভিনেগারে প্রচুর অ্যাসিড রয়েছে। আঁচিলের সমস্যা কমাতে দারুণ সাহায্য করে অ্যাপল সিডার ভিনেগার।

 

অ্যাসপিরিন

অনেকের বাড়িতেই এই ওষুধ থাকে। তবে আঁচিল কমাতে এই ওষুধ খেতে হবে না। প্রথমে ওষুধ গুঁড়ো করে নিন। তার পরে জল মিশিয়ে মিশ্রণ বানিয়ে নিন। সেটি আঁচিলের ওপর লাগিয়ে দিন। এবার গজ দিয়ে ঢেকে সারা রাত রেখে দিন। অ্যাসপিরিনে স্যালিসিলিক অ্যাসিড বলে একটি উপাদান আছে। সেটি সহজেই আঁচিলের বৃদ্ধি আটকে দিতে পারে। নিয়মিত এই টোটকা মেনে চললে তবেই পাবেন উপকার।

 

অ্যালোভেরা জেল

অ্যালোভেরা ত্বকের জন্য বেশ উপকারী। আঁচিলের ওপর কিছু পরিমাণ অ্যালোভেরা জেল লাগিয়ে ম্যাসেজ করুন। ত্বকে জেল শুকিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। এরপর ধুয়ে ফেলুন। এটি দিনে তিনবার ব্যবহার করলেই হবে।

 

কাস্টর তেল

আঁচিল বা তিল সরাতে কাস্টর তেল খুবই ভাল কাজ করে। এক চা-চামচ কাস্টর  তেলের সঙ্গে এক চা-চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে একটা পেস্ট তৈরি করে তা আঁচিলের উপর লাগিয়ে সারা রাত রেখে দিতে হবে, তার পর তা সকালে উঠে ধুয়ে ফেলুন। যতদিন না আঁচিল খসে পড়বে ততদিন এটি ব্যবহার করুন।

 

আনারস

আঁচিল দূর করতে অব্যর্থ হলো আনারসের রস। একটি পাত্রে সামান্য পরিমাণ আনারসের রসের সঙ্গে কিছুটা পরিমাণ সামুদ্রিক লবণ মিশিয়ে নিতে হবে। এবার ওই মিশ্রণটি আঁচিলের ওপর লাগিয়ে স্ক্রাব করুন। নিয়মিত এই উপায় মেনে চললে আঁচিলের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।

 

রসুন

ত্বকের যত্নে রসুন খুবই উপকারী। রসুনে রয়েছে অ্যালিসিন নামক উপাদান। অ্যালিসিন অ্যান্টি-মাইক্রোবায়াল উপাদান। রসুন থেঁতো করে আঁচিলের জায়গা লাগালেও বেশ উপকার পাবেন।

 

পেঁয়াজ

আঁচিল দূর করতে পেঁয়াজ বেশ কার্যকরী। পেঁয়াজ কুচি করে কেটে নিন। আধা চামচ লবণ মিশিয়ে সেই পেঁয়াজ কুচি সারাদিন ঢাকনা দিয়ে রেখে দিন। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এটি আঁচিলের উপর ব্যবহার করুন। পরদিন সকালে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। প্রতিরাতে এটি ব্যবহার করুন দেখবেন আঁচিল দ্রুত সেরে গেছে।

 

ডালিমের খোসা ও লেবুর রস

আঁচিল দূর করতে লেবুর রস চমৎকার কাজ করে। ডালিমের খোসা ৩-৪ দিন রোদে শুকিয়ে নিয়ে গুড়া করে নিন। ডালিমের খোসার গুঁড়োর সাথে কয়েকফোটা লেবুর রস মিশিয়ে নিয়ে মিশ্রণটি আঁচিলে লাগান। এভাবে কয়েকদিন লাগালে উপকার পাবেন।

 

টি ট্রি অয়েল

টি ট্রি অয়েলে অ্যান্টিসেপটিক উপাদান রয়েছে, যা ত্বকের যে কোন ইনফেকশন দ্রুত দূর করতে সাহায্য করে। প্রথমে কিছু তুলো পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এবার তুলো টি ট্রি অয়েলে ভিজিয়ে নিয়ে আঁচিলের উপর লাগান। কয়েক ঘন্টা এভাবে রেখে দিন। তারপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি দিনে তিনবার ব্যবহার করলে বেশি উপকার পাওয়া যাবে।

 

ভিটামিন ই

ওষুধের দোকানে অল্প দামেই ভিটামিন ই ক্যাপসুল পাওয়া যায়। প্রয়োজন মতো ভিটামিন ই ক্যাপসুলের তেল বার করে সেই তেল আঁচিলের উপর লগিয়ে ব্যান্ডেজ দিয়ে বেঁধে সারা রাত রেখে দিন। এই টোটকাতেও উপকার পাবেন।

 

কলার খোসা

কলার খোসা ছাড়িয়ে আঁচিলের অংশ ঢেকে রেখে দিন সারা রাত। প্রয়োজনে কোনও কাপড় কিংবা টেপ দিয়ে আটকে রাখতে পারেন শরীরের সঙ্গে। এই টোটকাতেও আঁচিলের সমস্যা কমবে।

 

আলু

কাঁচা গোল আলু আঁচিল দূর করার দারুণ এক প্রাকৃতিক উপাদান। সতেজ একটি কাঁচা আলু গোল গোল করে কাটুন। সেটি দিয়ে দিনে কয়েকবার আঁচিলের ওপর ঘষুন। ধীরে ধীরে দূর হয়ে যাবে।

 

ঢাকাটাইমস/৩০ জানুয়ারি/আরজেড)