মৌলভীবাজারে মনু নদীর চরে সবজি চাষে কৃষকের ভাগ্যবদল

প্রকাশ | ৩১ জানুয়ারি ২০২৩, ১১:০৪

আব্দুল বাছিত বাচ্চু, মৌলভীবাজার

মনু নদীর বেড়িবাঁধে উঠতেই চোখে পড়ে সবুজের সমারোহ। আছে হলুদের ছড়াছড়ি। এ যেন এক সবুজ আর হলুদ বিপ্লব। শত শত একর জমিতে বাধাকপি, ফুলকপি, টমেটো, বেগুন, আলু, মুলা, সরিষাসহ বিভিন্ন ধরনের ডাল সবজি। ব্যস্ত সময় কাটছে এখানকার কৃষকদের। কেউ  সবজি বাগানে পরিচর্যা করছেন। আবার কেউ ফসল তুলছেন।

সোমবার সকালে মৌলভীবাজার জেলা সদর থেকে অন্তঃত ২৫ কিলোমিটার দূরের হাজীপুর ইউনিয়নের সাধনপুর গ্রামে মনু নদীর চরে গেলে এমন চিত্র চোখে পড়ে।

শুধু হাজীপুর ইউনিয়নের নয়। জানা গেছে, কুলাউড়া রাজনগর ও মৌলভীবাজার বাজার সদর উপজেলার অন্তত ১০ টি ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী গ্রামে গ্রামে এই চিত্র।
নিজের টমেটো বাগানে কাজ করছিলেন কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের সাধনপুর গ্রামের পেশাদার কৃষক মুহিবুর রহমান।
তিনি জানান, এ ইউনিয়নের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে খরস্রোতা মনু নদী। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে থেকে আসা পাহাড়ি এই নদী হয়ে প্রতি বছর এখানে প্রচুর পলিমাটি নেমে আসে। যে কারণে চরের মাটি বেলে দোঁআশ। 
কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, এ মাটিতে কোনো ধরনের সার প্রয়োগ না করেও আখ, ধান, সরিষা, তিল তিষি ডালসহ সব ধরনের শাক সবজি লাগানো যায়। আর ফলন হয় সাধারণ জমির চেয়ে দুই তিন গুণ বেশি।
হরিচক গ্রামের কৃষক কবির মিয়া জানান, এবছর তারা দুইভাই মিলে দেড় একর জমিতে রবিশস্য লাগিয়েছেন। আছে টমেটো, বেগুন, বাধাকপি, ফুলকপি, আলু, মুলা, সরিষা।

কবির মিয়ার আশা ফসল বিক্রি করে সব খরচ পরেও লাখ দেড় লাখ টাকার মতো আয় হবে।
গ্রামের কৃষক সবুর মিয়া জানান, মনু নদীর সবজি চাষ করে কাউকাপন হরিচক সাধনপুর ফুলপুর উত্তর বাড়ইগাও দক্ষিণ বাড়ইগাও কটারকোনা মন্দিরা সহ মনু নদীর দুই পাড়ের অসংখ্য কৃষক নিজেদের অভাব গুছিয়েছেন। এমনকি অনেক কৃষক ছেলে সন্তানকে বিদেশে পাঠানো ঘরবাড়ি তৈরি ও জমি জমা ক্রয় করছেন।
সরজমিন কৃষকরা অভিযোগ করেন, এখানে সাধারণ মানুষ সরকারি সহায়তা বা পরামর্শ পায় না। কৃষি বিভাগের কর্মীরা নির্দিষ্ট কিছু লোককে সহায়তা করেন। নতুবা মনু নদীর দুই পারে ডাল গম সরিষাসহ শাক সবজির চাষে পালটে যেতো গ্রামীণ কৃষি অর্থনীতি।
মৌলভীবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজার জেলার উপ পরিচালক ডিডি শামসুদ্দিন আহমেদ এই অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, চলতি মৌসুমে মৌলভীবাজার জেলার ৭ উপজেলায় চার হাজার ৪৭৫ হেক্টর জমিতে সরিষা, দুই হাজার ৬২৭ হেক্টর জমিতে আলু, ১৪০ হেক্টর জমিতে গম ৫৩ হেক্টর জমিতে ডাল, এবং ১১ হাজার ৮৩ হেক্টর জমিতে অন্যান্য সবজি আবাদ করা হয়েছে।
এতে যেকোনো সহযোগিতার জন্য স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

((ঢাকাটাইমস/৩১জানুয়ারি/এসএ)