বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় পাতাল রেল আরেকটি মাইলফলক: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৪:৫১ | প্রকাশিত : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৩:৩৭

তার সরকারের সময়ে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় পাতাল মেট্রোরেল নির্মাণকাজ শুরু করতে পারা আরেকটি মাইলফলক বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেন, ‘এমআরটি লাইন-১ নির্মাণকাজ করতে গিয়ে কোনো পরিষেবা স্থানান্তর করতে হবে না। সবকিছু স্বাভাবিক রেখেই এই পাতাল রেলের নির্মাণকাজ চলবে।’

বৃহস্পতিবার রূপগঞ্জের জনতা উচ্চবিদ্যালয় সংলগ্ন পূর্বাচল সেক্টর ৪-এ রাজউকের কমার্শিয়াল প্লট মাঠে পাতাল মেট্রোর উদ্বোধন শেষে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী জনসভা মঞ্চে মোনাজাতের মাধ্যমে এমআরটি লাইন-১ নামে চিহ্নিত বৃহৎ এ প্রকল্পের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন।

বক্তব্যের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী হলি আর্টিজান জঙ্গি হামলায় নিহত মেট্রোরেলের কাজে যুক্ত সাত জাপানি পরামর্শককে বিশেষভাবে স্মরণ করেন। ওই ঘটনার পরও জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত শিনজো আবে ও দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রতি সহযোগিতা অব্যাহত রাখায় তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গত ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেল উদ্বোধন করেছি। এই কাজ যখন শুরু করতে যাই, তখন জঙ্গির উত্থান হলো। হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় বিদেশি নাগরিকদের হত্যা করা হয়। সাতজন জাপানি নাগরিককে হত্যা করা হয়। যারা মেট্রোরেলের কাজে যুক্ত ছিলেন। আমি তাদের স্মরণ করি। এ ঘটনার পরও জাপান সরকার তাদের সহযোগিতার হাত গুটিয়ে নেননি। তাদেরকে আমি ধন্যবাদ জানাই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় আরেকটি মাইলফলক অর্জিত হলো। এর আগে মেট্রোরেল উপহার দিয়েছি। সেটি ওপর দিয়ে যাবে। এবার মাটির নিচ দিয়ে যাবে পাতাল রেল। বাংলাদেশে এ ধরনের আয়োজন প্রথম।’

অনুষ্ঠানে আগতদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক, স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছি। আমাদের স্বাধীন রাষ্ট্র দিয়েছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা সময় পেয়েছিলেন মাত্র সাড়ে তিন বছর। একটা জাতির জন্য এই অল্প সময় কিছুই না। জাতির পিতা সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন। সাড়ে তিন বছরে আর কতটুকু করা যায়।’

তার সরকারের গত ১৪ বছরে দেশের আমূল পরিবর্তন হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছি। এবার বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ করা হবে।’

অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী এবং ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমটিসিএল) এমএএন সিদ্দিক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।

পাতাল ও উড়াল মিলে মোট ৩১ দশমিক ২৪১ কিলোমিটার দীর্ঘ এমআরটি লাইন-১ মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ ২০২৬ সাল নাগাদ সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সরকারের।

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) তথ্য অনুযায়ী, মেট্রোরেলের লাইন-১ এর ডিপো নির্মাণ হবে নারায়ণগঞ্জ জেলার পিতলগঞ্জে। পুরো প্রকল্পটির কাজ ১২টি প্যাকেজের মাধ্যমে বাস্তবায়ন হবে।

এমআরটি লাইন-১ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কুড়িল, বাড্ডা, রামপুরা হয়ে কমলাপুর পর্যন্ত ১৯ দশমিক ৮৭ কিলোমিটারের পুরো অংশ হবে ভূগর্ভে। এ অংশে মোট ১২টি স্টেশন থাকবে।

স্টেশনগুলো হচ্ছে বিমানবন্দর, বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩, খিলক্ষেত, যমুনা ফিউচার পার্ক বা নর্দ্দা, নতুন বাজার, উত্তর বাড্ডা, বাড্ডা, হাতিরঝিল, রামপুরা, মালিবাগ, রাজারবাগ ও কমলাপুর।

আরেক অংশ হবে এলিভেটেড তথা উড়ালপথ। সেই অংশ নতুন বাজার থেকে কুড়িল হয়ে যাবে পূর্বাচলে। ১১ দশমিক ৩৬ কিলোমিটারের এ অংশের নতুন বাজার ও যমুনা ফিউচার পার্ক বা নর্দ্দা স্টেশন দুটি বিমানবন্দর রুটের অংশ হিসেবে পাতালে নির্মাণ হবে।

এ অংশে নতুন বাজার ও নর্দ্দা স্টেশনসহ মোট নয়টি স্টেশন থাকবে। অন্য ৭টি স্টেশন হলো বসুন্ধরা, পুলিশ অফিসার্স হাউজিং সোসাইটি, মাস্তুল, পূর্বাচল পশ্চিম, পূর্বাচল সেন্টার, পূর্বাচল পূর্ব, পূর্বাচল টার্মিনাল ও পিতলগঞ্জ ডিপো।

(ঢাকাটাইমস/০২ফেব্রুয়ারি/এলএম/ডিএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :