সাংবাদিক পীর হাবিবের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ, সুনামগঞ্জে নানা কর্মসূচি

প্রকাশ | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:৪৬

নিজস্ব প্রতিবেদক সুনামগঞ্জ

খ্যাতিমান সাংবাদিক ও কলামিস্ট, বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রয়াত নির্বাহী সম্পাদক সুনামগঞ্জের কৃতি সন্তান পীর হাবিবুর রহমানের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০২২ সালে ৫ ফেব্রুয়ারি চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। 

তিনি ১৯৬৩ সালের ১২ নভেম্বর সুনামগঞ্জ পৌর শহরের হাসননগর এলাকার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে তাঁর জন্ম। তাঁর বাবার নাম মোহাম্মদ রইছ আলী পীর ও মা সৈয়দা রাহিমা খানম। 

আজ রবিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকায় ও তাঁর নিজ শহর সুনামগঞ্জে নানান কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। বেলা ১১টায় সুনামগঞ্জ শহরের মাইজবাড়ীতে মরহুমের পরিবার, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল,সামাজিক সংগঠনের উদ্যোগে পীর হাবিবের কবর জিয়ারত, শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ।

এ ছাড়া শহরের বিভিন্ন এতিমখানায় খাবার বিতরণ, মসজিদে মসজিদে বিশেষ দোয়া ও কোরআন খানির আয়োজন করা হয়েছে। কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশ প্রতিদিন ও মরহুমের পরিবারের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ডায়না নাজনিন, ছেলে আহনাফ ফাহিম অন্তর, মেয়ে রাইসা নাজ চন্দ্রস্মিতা, বড় ভাই মতিউর রহমান পীর, ছোট ভাই পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ এমপি ও এক বোনসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। 

উল্লেখ্য,২০২১ সালের অক্টোবরে ভারতের মুম্বাই নগরীর জাসলোক হাসপাতালে বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশনের মাধ্যমে ক্যান্সারমুক্ত হন পীর হাবিবুর রহমান। গত বছরের ২২ জানুয়ারি তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি হন। করোনামুক্ত হওয়ার পর কিডনি জটিলতার কারণে তাঁকে ভর্তি করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্ট্রোক (মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ) করলে তাঁকে আইসিইউতে (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয় তাঁকে। ৫ ফেব্রুয়ারি ৪টা ৮ মিনিটে লাইফ সাপোর্ট খুলে দেওয়া হয় তাঁর। পীর হাবিব সুনামগঞ্জের সরকারি জুবিলী উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি উত্তীর্ণ হন। আট ভাই-বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন বাবা-মায়ের সপ্তম সন্তান।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে ১৯৮৪ সালে সাংবাদিকতায় পীর হাবিবের হাতেখড়ি। ১৯৮৬ সালে অনার্স ও ১৯৮৭ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন তিনি। ১৯৯২ সালে ‘বাংলাবাজার পত্রিকা’র সূচনা পর্ব থেকে তাঁর পেশাদারি শুরু।

তারপর দৈনিক ‘যুগান্তর’-এ সূচনা পর্ব থেকে যুক্ত ছিলেন দীর্ঘদিন। তিনি আমাদের সময়, আমাদের অর্থনীতি,মানবকণ্ঠ, বাংলাদেশ প্রতিদিনের উপসম্পাদক পদে দীর্ঘদিন কাজ করেন। সর্বশেষ ছিলেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদক। তিনি নিউজপোর্টাল পূর্বপশ্চিমবিডি.নিউজের প্রতিষ্ঠাতা। পীর হাবিবুর রহমান তাঁর বলিষ্ঠ কলামে রাজনীতির অনুপুঙ্খ বিশ্লেষণ দ্বারা লাখো পাঠকের মনে আলাদা জায়গা করে নিতে সক্ষম হন। 

তিনি ছিলেন,রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। ছিলেন ‘ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি’র নির্বাচিত সাংগঠনিক সম্পাদক। রিপোর্টার জীবনে তিনি আওয়ামী লীগ বিটের সঙ্গে সংযুক্ত ছিলেন। 

সাংবাদিকতার পাশাপাশি পীর হাবিব উপন্যাস ও কবিতা লিখতেন। জেনারেলের কালোসুন্দরী, এক্সক্লুসিভ,রাজনীতির অন্দরমহল,পোয়েট অব পলিটিক্স,বলিউডের ট্র্যাজিক প্রেম,ভিউজ আনকাট,মন্দিরা,খবরের বারান্দা,বুনোকে লেখা প্রেমপত্র,অব দ্য রেকর্ড,টক অব দ্য প্রেস ছিল তাঁর আলোচিত বই। সাংবাদিকতায় তাঁর উল্লেখযোগ্য কাজ নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে প্রামাণ্য পীর হাবিবুর রহমান’ নামে একটি গ্রন্থ।

(ঢাকাটাইমস/৫ফেব্রুয়ারি/এআর)