বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ ১২ টাকা নিচ্ছি ৬ টাকা, তাতেই অনেক চিৎকার: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১১:৫১ | আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:৫০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

এক কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে ১২ টাকা খরচ হয় জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সেখানে আমরা নিচ্ছি মাত্র ৬ টাকা। তাতেই আমরা অনেক চিৎকার শুনি। গ্যাস-বিদ্যুৎ সাপ্লাই দেওয়া যাবে যদি সবাই ক্রয়মূল্য যা হবে সেটা দিতে রাজি থাকে। তাহলে দেওয়া যাবে। তাছাড়া আর কত ভর্তুকি দেওয়া যায়।’

ঢাকার আগারগাঁওয়ে রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা বিডার নিজস্ব প্রধান কার্যালয় উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

যুক্তরাজ্যে বিদ্যুতের দাম ১৫০ ভাগ বাড়ানো হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কিন্তু এখনো সে পর্যায়ে যাইনি। তবে আমি আবারও বলবো গ্যাস-বিদ্যুৎ সাপ্লাই দেওয়া যাবে, যদি ক্রয় মূল্য যা হয় সেটি দেয়।’

‘তাছাড়া কত ভর্তুকি দেওয়া যায়। আমরা এ ক্ষেত্রে কেন ভর্তুকি দেব। ভর্তুকি দিচ্ছি কৃষি খাতে, খাদ্য উৎপাদনে। আমরা করোনা মোকাবিলা করতে বিশেষ প্রণোদনা দিয়েছি, যাতে ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-কারখানা চালু থাকে। প্রণোদনা দেওয়ার ফলেই অর্থনীতির গতিটা সচল রয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা শতভাগ বিদ্যুৎ দিতে পেরেছি। আমাদের লক্ষ্যই ছিল প্রত্যেক ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পোঁছে দেব। আমরা পৌঁছে দিয়েছি। জেনারেটরের ওপর যে ট্যাক্স ছিল, সেই ট্যাক্স আমি প্রত্যাহার করে নিয়েছি।’

শিল্প-কলকারখানায় যাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে সেই ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে শিল্প-কারখানা মালিকদের উদ্দেশে সরকারপ্রধান বলেন, ‘নিজেরা উৎপাদন করবেন, ব্যবহার করবেন এবং অন্যকেও দিতে পারবেন। ব্যবসা বাণিজ্য যাতে ভালোভাবে চলে, যাতে বিনিয়োগ আসে সেই চেষ্টাই আমরা করি।’

পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে চ্যালেঞ্জ ছিল জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ পারে, বাঙালি পারে। একটা চ্যালেঞ্জ ছিল পদ্মা সেতু নিয়ে। দুর্নীতি চেপে বসে ছিল আমাদের ওপর। আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেছিলাম আমাদের অর্থে আমরা পদ্মা সেতু তৈরি করবো এবং জয়ী হবো। এসময় তারা আমাদের বলেছে ভুয়া আরও অনেক কথা। কিন্তু প্রমাণ করতে পারেনি।’

‘আমাদের একটা কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল। কারও সহযোগিতা বা সমর্থন পাওয়া যাচ্ছিল না। কিন্তু সমর্থন আমার জনগণ দিয়েছে। ফলে আমরা সফলতার সঙ্গে পদ্মা সেতু তৈরি করেছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর চট্টগ্রাম বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর করে দিয়েছি। সিলেট বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর করে দিয়েছি। কক্সবাজারে আরেকটি নতুন বিমানবন্দর করে দিচ্ছি। মেট্রোরেল, পাতালরেলসহ বাংলাদেশের জন্য যা যা দরকার এক এক করে সব করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

সরকারপ্রধান আরো বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা। আমাদের সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বাংলাদেশ এখন ৩৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। স্বাধীনতার পরে এ পর্যায়ে আসতে পারবে কেউ ভাবতে পারেনি।’

‘আমাদের বেগ পেতে হচ্ছে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ক্রয়ক্ষমতা বাড়লে উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত সহজ হয়ে যায়। নিজেদের বাজার সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ করার ঘোষণা দিয়েছিলাম। সেটা করেছি।’

এর আগে বিডার নিজস্ব প্রধান কার্যালয় উদ্বোধন শেষে মোনাজাতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। এক একর জমির ওপর ১৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ১২তলা বিশিষ্ট নবনির্মিত ভবনটির নামকরণ করা হয়েছে ‘বিনিয়োগ ভবন’ নামে।

উদ্বোধনের পর ভবনটিতে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ-বেজা এবং জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা এনএসডিএ প্রধান কার্যালয় পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী।

(ঢাকাটাইমস/০৫ফেব্রুয়ারী/পিআর/ডিএম)