কেবল সাধারণ মানুষই নয়, প্রধানমন্ত্রী, এমপিকেও কর দিতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৩:৫৪ | আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৮:৫৯

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

করহার নয়, করদাতার সংখ্যা বাড়ানোর তাগিদ দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। এর হাওয়া আমাদের দেশেও লেগেছে। এজন্য করহার না বাড়িয়ে করদাতার সংখ্যা বাড়াতে হবে। এতে অর্থনৈতিক চাপ কমবে।’

‘শুধু সাধারণ মানুষ বা ব্যবসায়ী নয়, প্রধানমন্ত্রীকেও কর দিতে হবে। সংসদ সদস্যদের কর দিতে হবে। নিজেরা আগে কর দিলে তবেই সবাই কর দিতে উৎসাহিত হবে।’

ঢাকার আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবন উদ্বোধন শেষে রবিবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দুদিনব্যাপী রাজস্ব সম্মেলন-২০২৩ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী।

সরকারপ্রধান বলেন, ‘স্বাধীনতা অর্জনের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের দায়িত্ব পেয়ে ১৯৭২ সালে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড গঠন করেন। এটিতে কাস্টমস, মূল্য সংযোজন কর, আয়কর, রাজস্ব নীতি পুনরায়ন, বাস্তবায়ন, কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ রাখেন। বর্তমানে রাজস্ব বোর্ড মোট রাজস্বের ৮৬ শতাংশ আহরণ করছে।’

তার সরকার বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চায় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের স্মার্ট ইকোনমি গঠনের মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করাই আমাদের লক্ষ্য। ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা এটা অর্জন করতে চাই। কাজেই সেই লক্ষ্য সামনে রেখেই জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।’

কর দিলে তা সাধারণ নাগরিকের কাজে লাগে আর এ বিষয়ে মানুষকে জানানোর তাগিদ দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘সাধারণ মানুষকে বুঝাতে হবে, আপনি যে কর দেন তা আপনার কাজেই লাগে। আজকে দেশের যে উন্নয়ন তার সবই হয়েছে করের টাকায়। তাই যারা এই সুফলটা ভোগ করছেন তাদের তো কিছু না কিছু দিতে হবে। রাষ্ট্র তো আর সব নিজ থেকে দিতে পারবে না।’

রাজস্ব সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত মেলার স্টল পরিদর্শনে প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা কর ফাঁকি দেন, বা দেয়ার চিন্তা করেন তারা সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন। কর দেওয়ার পদ্ধতি ডিজিটাল হয়ে গেলে সেটা আর পারবেন না। এখন মানুষের হাতে টাকা বেড়েছে। ফলে উপজেলা বা ইউনিয়ন পর্যায়ে করদাতা মানুষ বৃদ্ধি পেয়েছে।’

‘তাই করের বিষয়ে প্রচার বাড়াতে হবে। মানুষকে সচেতন করতে হবে যে, আপনি যে সেবাটা ভোগ করছেন তা আপনাদেরই টাকায়। সঠিক সময়ে সঠিক পরিমাণে কর দিলে সামনে সেবা আরও ভালো পাবেন।’

উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশই ছিল জাতির পিতার স্বপ্ন:

উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে জাতির পিতা যে স্বপ্ন দেখতেন সে বিষয়টি তুলে ধরে তারই কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশকে নিয়ে চিরদিনই একটা স্বপ্ন দেখেছিলেন। বাংলাদেশকে একটা উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলবেন।’

‘বাঙালি জাতি ছিল শোষিত-বঞ্চিত-নির্যাতিত। আর বাংলাদেশ ভূখণ্ড, এটা ছিল পাকিস্তানের একটা প্রদেশ। এই প্রদেশকে রাষ্ট্রে উন্নীত করে এখানকার মানুষকে উন্নত জীবন দেবেন, এটাই ছিল বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু বছরের পর বছর কারাভোগ করেছেন। অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। কিন্তু তিনি তার লক্ষ্য স্থির রেখে আমাদের এনে দেন বিজয়, স্বাধীনতা, জাতি-রাষ্ট্র। বাংলাদেশকে সারা বিশ্বের বুকে পরিচয় করিয়ে দেন।’

(ঢাকাটাইমস/০৫ফেব্রুয়ারি/পিআর/ডিএম)