ঠাকুরগাঁওয়ে ১৪টি মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর

প্রকাশ | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৭:৫২

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে ১৪টি মন্দিরের প্রতিমাগুলো ভাংচুর করেছে দূর্বৃত্তরা। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ওসি খায়রুল আনাম বলেন, রবিবার ভোর রাতের কোনো এক সময় উপজেলার ধনতলা, চাড়োল ও পাড়িয়া ইউনিয়নে বিভিন্ন গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।  

সরেজমিনে দেখা যায়,  ঘটনার পর থেকে উপজেলার প্রত্যেকটি মন্দিরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সেই ভাংচুর করা প্রতিমাগুলো মানুষজন ভিড় করে দেখছে। 

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিদ্যা নাথ বর্মন বলেন, রবিবার ভোর রাতে কে বা কারা উপজেলার ধনতলা ইউনিয়নে ৯টি, চাড়োল ইউনিয়নে ১টি ও পাড়িয়া ইউনিয়নে ৪টি মন্দিরের প্রতিমাগুলো ভাংচুর করেছে।  

এরমধ্যে ধনতলা ইউনিয়নের সিন্দুরপিন্ডি থেকে টাকাহারা একটি হরিবাসর মন্দির,  একটি  কৃষ্ণঠাকুর মন্দির,  মনসা মন্দির ৫টা, লক্ষ্মীমন্দির একটা ও একটি কালি মন্দিরের প্রতিমাগুলো ভাংচুর করেছে। 

এছাড়াও চাড়োল ইউনিয়নে একটি কালী মন্দির ও পাড়িয়া ইউনিয়নে একটি বুড়া-বুড়ি মন্দির, একটি  লক্ষ্মী মন্দির, একটি আমাতি মন্দির ও একটি মাসানমাঠ মন্দিরের প্রতিমাগুলো ভাংচুর করা হয়েছে।  

বিদ্যা নাথ বর্মন বলেন, দূর্বৃত্তরা প্রতিমাগুলোর হাত-পা, মাথা ভেঙে চূর্ণবিচূর্ণ করে ফেলেছে। আবার কিছু প্রতিমা ভেঙে পুকুরের পানিতে ফেলে রেখেছে। আমরা চাই প্রশাসন ঘটনাটি সঠিকভাবে তদন্ত করুক। সেইসঙ্গে প্রকৃত দোষীদের গ্রেপ্তার করা হোক।  

স্থানীয় বাসিন্দা কাসিনাথ সিংহ বলেন, হঠাৎ করে কে বা কাহারা রাতের আঁধারে প্রতিমাগুলো ভাংচুর করেছে।  এতে আমরা আতঙ্কগ্রস্ত অবস্থায় আছি।  যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তার করা হোক।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জুয়েল বলেন, যেসব মন্দিরগুলোর প্রতিমা ভাংচুর করা হয়েছে এগুলো মন্দির অনিরাপদহীন ভাবে রাস্তার পাশে ছিল।  প্রতিমা ভাংচুরের এই ঘটনাটি আসলে দুঃখজনক। এ ধরনের ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে না ঘটে এজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবে বলে আশা করি।  এছাড়াও সকলকে সজাগ থাকতে হবে।  

খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক মো. মাহবুবুর রহমান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন সহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা।  

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন,  ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আমার কাছে মনে হয়েছে ঘটনাটি উদ্দেশ্যে প্রণোদিত। বাংলাদেশে বর্তমান শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্যই পরিকল্পিত ভাবে এ ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে। এ ঘটনাটি  কে করেছে বা কারা করেছে;  এজন্য আমরা অবশ্যই মামলা নেবো; সেই সঙ্গে অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে। 

ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলাম। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সেজন্য সচেতনতা মূলক কাজ করা হবে। 

(ঢাকাটাইমস/৫ফেব্রুয়ারি/এআর)