উইঘুর মুসলিমদের দমন-পীড়নের প্রতিবাদে ছাত্র ইউনিয়নের বিক্ষোভ

প্রকাশ | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২০:৩৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিম নির্যাতনের প্রতিবাদে খুলনায় মানববন্ধন ও মিছিল সমাবেশের আয়োজন করেছে ছাত্র ইউনিয়ন। রবিবার খুলনার রয়্যালের মোড়ে এই মানববন্ধন ও প্রতিবাদী মিছিল সমাবেশ কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটি।

খুলনা মহানগর ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জয় বৈদ্যের সঞ্চালনায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর সভাপতি অর্চিস্মান দেবনাথ। বক্তব্য রাখেন জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সহ-সভাপতি হুজাইফা আল আমিন, মহানগরের সহকারী সাধারণ সম্পাদক রুমি রহমানসহ আরো অনেকে।

মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশটি উইঘুরের ঐতিহাসিক ঘুলজা গণহত্যা স্মরণে আয়োজন করা হয়। এ সময় উইঘুরদের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানানো হয়।

সমাবেশে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জয় বৈদ্য বলেন, ‘৫ ফেব্রুয়ারি ঘুলজা গণহত্যা দিবস। ১৯৯৭ সালের এই দিনে চীনের জিনজিয়ান প্রদেশে আন্দোলন শুরু করলে দমন পীড়ন করে সেখানকার সরকার। এতে বহু উইঘুর স্বাধীনতাকামীকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়। জেলে ঢোকানো হয় হাজারো আন্দোলনকারীকে। স্বাধীনতাকামী উইঘুরদের ওপর নির্যাতন ও নিপীড়ন এখনো চলছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘জাতিসংঘের দাবি অনুযায়ী, চীনের বন্দীশালায় বর্তমানে নারীসহ ১০ লাখ উইঘুর মুসলমান আটক আছেন। চীনে নির্যাতনের শিকার সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমরা নিজেদের স্বাধীনতার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্য চেয়েছেন। বিশ্বের শোষিত এবং নিপীড়িত মানুষের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘বিশ্বের বহু অংশে এখনো অবিচার ও নিপীড়ন চলিতেছে। দুনিয়ার যেখানেই মজলুম মানুষ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করবে, আমরা নিশ্চয়ই তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়াবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘নীতি ও আদর্শ অনুযায়ী বিশ্বের প্রতিটি নির্যাতিত ও নিপীড়িত মানুষের পক্ষে কথা বলবে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন। মুক্তিকামী উইঘুর সংখ্যালঘুদের যৌক্তিক আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী রাষ্ট্র চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে সংখ্যালঘু উইঘুর নির্যাতন বন্ধের দাবিতে আমরা দাঁড়িয়েছি।’

সংগঠনের সভাপতি অর্চিস্মান দেবনাথ বলেন, ‘বিশ্বের সকল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার আদায়ে আন্দোলন ও সংগ্রাম করে যাচ্ছে ছাত্র ইউনিয়ন। চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে বসবাসরত সংখ্যালঘু উইঘুরদের ওপর প্রতিনিয়ত নির্যাতন-নিপীড়ন চালানো হচ্ছে। চীন সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে উইঘুরদের ধর্মীয়, রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। সম্প্রতি উইঘুরদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ডোপা টুপি ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে যা মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। বিএনপির শাসনামলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাৎবার্ষিকী ১৫ আগেস্ট চীন দূতাবাস কর্তৃক খালেদা জিয়াকে জন্মদিনের উপহার পাঠানোর মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছিল যে, চীন বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধকে আজও পর্যন্ত মেনে নিতে পারেনি। একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী চীনের আগ্রাসন অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। সংখ্যালঘু উইঘুর সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। পূর্ব তুর্কিস্তান তথা উইঘুরদের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে হবে। অন্যথায় বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন চীন দূতাবাস ঘেরাওসহ দেশব্যাপী আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবে।’

প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল জাতিসংঘ শিশু পার্কে গিয়ে শেষ হয়।

(ঢাকাটাইমস/০৫ফেব্রুয়ারি/এমএইচ)