যে হোটেলে খেতে টাকা লাগে না, ভালো কাজের বিনিময়ে মেলে খাবার

প্রকাশ | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২২:১৬ | আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২২:১৮

পুলক রাজ, ঢাকাটাইমস

রাজধানীতে ছিন্নমূল মানুষের পেটের ক্ষুধা নিবারণ হলে অপরাধ কমে আসবে এমন প্রত্যাশা থেকে একটি ভালো কাজের বিনিময়ে এক বেলা খাবার খাওয়াচ্ছে ‘ভালো কাজের হোটেল’। এই হোটেলে খেতে কোনো টাকা খরচ হয় না। দিনে একটি ভালো কাজ করলে এক বেলা খাবার খাওয়া যায়।

জানা গেছে, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে একটি ভালো কাজের বিনিময়ে একবেলা খাওয়ানো শুরু হয়। ওই সময় সপ্তাহে একদিন খাওয়ানো হতো। করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে প্রতিদিন দুপুরে ভাত খাওয়ানো শুরু হয়। বর্তমানে ‘ভালো কাজের হোটেলে’ ১১শ থেকে ১২শ মানুষকে প্রতিদিন খাওয়ানো হয়। 

রাজধানীতে ‘ভালো কাজের হোটেল’ রয়েছে পাঁচটি। এরমধ্যে কমলাপুরে প্রধান শাখা। এছাড়া বাসাবো, কারওয়ান বাজার, সাত রাস্তার মাথা, কড়াইল বস্তিতর পাশে আছে আরও চারটি হোটেল। ঢাকার বাইরে চট্রগ্রামেও এমন একটি হোটেল রয়েছে। 

ভালো কাজের প্রচেষ্টার সঙ্গে জড়িত স্বেচ্ছাসেবী রুবেল আহমেদ হিমেল ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘ভালো কাজের হোটেলে’ এর মূল উদ্দেশ্য শুধু খাওয়ানো না; মানুষের মধ্যে ভালো কাজের অভ্যাস করানো। ভালো কাজের হোটেলে খেতে কোনো টাকা লাগে না। যে কোনো একটি ভালো কাজ করলেই এখানে একবেলা খাবার খাওয়া যায়।

তিনি বলেন, যারা এখানে খাচ্ছে তাদের মধ্যে অনেকেই ছিন্নমূল। ভালো কাজ কী তা অনেকেই জানতো না। আমরা প্রতিদিন তাদের মাধ্যমে একটি করে ভালো কাজ করাচ্ছি। ধীরে ধীরে তাদের খারাপ দিক মুছে যাচ্ছে।

৪৫ বছর বয়সী আবুল কালাম ঢাকা টাইমসকে বলেন, আমি প্রতিদিন একটি ভালো কাজ করি। এবং ‘ভালো কাজের হোটেলে’ এসে দুপুরের খাবার খাই। এই হোটেলের জন্য আমার অনেক উপকার হয়েছে। খাবারের অভাবে আমি ছিনতাইয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে গিয়েছিলাম। এখন আর ছিনতাই বা অপরাধের কাজ করি না। আমি এখন মানুষের উপকার করি। দিনে তো খাবার পাই। রাতে একটু কাজকর্ম করলেই ভাত খেতে পারি।

আতিক মিয়া নামে এক পথশিশু ঢাকাটাইমসকে বলে, আমার ঘর বাড়ি নাই। রাস্তায় থাকি। ভালো কাজ করে এখানে দুপুরে খাই।

জানা গেছে, ভালো কাজের এ উদ্যোগে প্রায় দুই হাজার সদস্য আছেন। যারা প্রতি মাসে ৩০০ টাকা করে এই হোটেলে আর্থিক সহযোগীতা করেন। এর পাশাপাশি কিছু শুভাকাঙ্ক্ষীও আছেন। তাদের টাকা দিয়েই ‘ভালো কাজের হোটেল’ পরিচালনা করা হয়। এছাড়া প্রায় দেড় হাজার সদস্য প্রতিদিন ১০ টাকা করে জমা দেন। একটি ফরম পূরণ করে সহজেই যে কেউ এই উদ্যোগে অংশ নিতে পারবেন।

(ঢাকাটাইমস/০৬ফেব্রুয়ারি/পিআর/এসএম)