মুসলিমরা নির্যাতিত হচ্ছে, কাশ্মীর হতে পারে আগামীর ইসরায়েল

প্রকাশ | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২৩:২২

ঢাবি প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

কাশ্মীরের মুসলমানরা নির্যাতিত হচ্ছে এবং ভারতের হিন্দুত্ববাদী নীতির কারণে কাশ্মীর আগামীতে ইসরায়েলে পরিণত হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, ফিলিস্তিনিদের মতো নিজ ভূমে পরবাস হতে পারেন কাশ্মিরি মুসলমানরা। জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে গণভোটের মাধ্যমে সংকট নিরসনের আহ্বান তাদের।

রবিবার ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও’ আন্দোলনের উদ্যোগে রাজধানীর বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদে ‘কাশ্মীর সমস্যা এবং দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এ শঙ্কা প্রকাশ করেন বক্তারা।

‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও’ আন্দোলনের সভাপতি কেএম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন– নিরাপত্তা বিশ্লেষক কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) আশরাফ আল দ্বীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক ও গবেষক ড. সাইফুদ্দিন আহমেদ, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান প্রমুখ।

কর্নেল (অব.) আশরাফ আল দ্বীন ভারতকে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় গণতন্ত্র চর্চার আহ্বান জানিয়ে ও কাশ্মীরিদের ন্যায্য অধিকারের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, আর্টিকেল ৩৭০ পুনঃপ্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে ভারতকে কাশ্মীরি জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। হিন্দুত্ববাদী পলিসির মাধ্যমে কাশ্মীর হতে পারে আগামীর ইসরায়েল। ফিলিস্তিনের ভাগ্য বরণ করতে হতে পারে কাশ্মিরিদের। ৩৭০ বাতিল করার মধ্য দিয়ে সব ভারতীয় কাশ্মীরে জমি ক্রয় করতে পারবে।

আশরাফ বলেন, এই নীতির কারণে অদূর ভবিষ্যতে নিজ ভূমে পরবাস হতে পারে কাশ্মিরের মুসলিম জনতা। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় শুধু পাকিস্তান ও ভারতকে সংযত থাকার অনুরোধ করে, কিন্তু কাশ্মীরের প্রকৃত সমস্যা সমাধানের জন্য কেউ কাজ করে না।

দক্ষিণ এশিয়ায় স্থিতিশীলতা রক্ষায় সংঘাতমুক্ত কাশ্মীর প্রতিষ্ঠার জন্য জাতিসংঘের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি মনে করেন।
 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, কাশ্মীর ভারত ও পাকিস্তানের উভয়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখানে অধিকাংশ মুসলিম এবং তারা নিয়মিত নির্যাতিত হচ্ছে। এই নির্যাতনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশসহ সকল রাষ্ট্রের জনগণের সোচ্চার হওয়া উচিত।

সার্ককে কার্যকর করা, কাশ্মীরের মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ এবং কাশ্মীরের অধিবাসীদের মানবাধিকার সংরক্ষণ এবং সংঘাতমুক্ত কাশ্মীর প্রতিষ্ঠার জন্য জাতিসংঘ এবং ভারতের ভূমিকার ওপর তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন।

কাশ্মীর সংকট দক্ষিণ এশিয়া তথা সারা বিশ্বের জন্য হুমকি স্বরূপ বলে মন্তব্য করেছেন লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডাক্তার মোস্তাফিজুর রহমান ইরান।

তিনি বলেন, কাশ্মীরিদের যে বিশেষ স্বায়ত্বশাসন (আর্টিকেল ৩৭০) তা রদ করে ভারত এই অঞ্চলকে আরো অস্থিতিশীল করে তুলেছে। ভারত সরকারকে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাম্প ছেড়ে কাশ্মীরের জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। বাংলাদেশ সরকার এবং জনগণের উচিৎ কাশ্মীরিদের পাশে দাঁড়ানো।

জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে গণভোট অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতা রক্ষায় কাশ্মীর সংকটের সমাধান করতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

(ঢাকাটাইমস/০৫ফেব্রুয়ারি/এসকে/ইএস)