মাদকের বিরুদ্ধে বলায় খতিবকে বিবস্ত্র করে ভিডিও! দুই দফা মারধর, টাকাও আদায়

প্রকাশ | ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৮:৪৯ | আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৮:৫৫

আনিসুর রহমান, ঢাকাটাইমস

মাদক নির্মূলে মসজিদের ইমামদের বেশি বেশি সচেতনতামূলক বক্তব্য দিতে সরকারের তরফে আহ্বান এলেও, এমন বক্তব্য দিয়ে মাদক কারবারির হাতে ন্যক্কারজনভাবে নাজেহাল হয়েছেন গাজীপুরের একটি মসজিদের খতিব।

এ ঘটনায় পর্নোগ্রাফি আইনে গাছা থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ মামলার আসামি গাছা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মশিউর রহমান মুকুলকে গ্রেপ্তার করেছে। মামলার প্রধান আসামি মুকুলের ছোট ভাই এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারি মফিজুর রহমান টুটুল পলাতক রয়েছে।

জানা গেছে, এর এক সপ্তাহ আগে মাদকের কুফল নিয়ে জুমার নামাজের আগে বয়ান করেন চান্দরা আল আকসা মসজিদের খতিব মুফতি শফিকুল ইসলাম তালুকদার। তার এই বয়ানে ক্ষুব্ধ হন এলাকার চিহ্নিত মাদককারবারি মফিজুর রহমান টুটুল।

২৬ জানুয়ারি টুটুল মুফতি শফিকুলকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের পাশাপাশি তাকে নির্যাতন করেন। লোকলজ্জার ভয়ে শফিকুল ঘটনাটি চেপে যান।

মাদক কারবারি টুটুলের ভাই গাছা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান মুকুলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মুকুলকে গ্রেপ্তারের পরই মসজিদের খতিব শফিকুলকে টুটুলের নির্যাতনের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।

এদিকে খতিব শফিকুল গাছা থানায় পর্নোগ্রাফি আইনে একটি মামলা করেছেন। তবে মামলার প্রধান আসামি মাদককারবারি টুটুল পলাতক রয়েছেন। তার বড় ভাই মুকুল এ মামলার দ্বিতীয় আসামি। 

মুফতি শফিকুল জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে মাদকের বিরুদ্ধে বয়ান করে আসছিলেন। আর সেজন্য টুটুল ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা তাকে হুমকি দিচ্ছিল। সবশেষ গত ২৬ জানুয়ারি মসজিদের হুজুরকক্ষে টুটুলের নেতৃত্বে এলাকার মাদককারবারিরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ঢুকে তার ওপর চড়াও হয়।

গাছা থানার ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের চান্দরা আল আকসা মসজিদের এ খতিব বলেন, ‘তারা আমাকে মারধর করে এবং বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারন করে। সেই ভিডিও ফেসবুকে ছাড়ার হুমকি দিয়ে ৫০ হাজার টাকাও নিয়েছে।’

৩১ জানুয়ারি তাকে দ্বিতীয় দফা মারধর করা হয়েছে অভিযোগ করে মুফতি শফিকুল বলেন, ‘আর না পেরে লজ্জা ভেঙে স্থানীয় আলেম-ওলামাদের কাছে এ বিষয়ে জানাই।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গাছা থানার ওসি মো. ইব্রাহিম হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মসজিদের ভুক্তভোগী ইমাম দুইজনকে আসামি করে পর্নোগ্রাফিসহ ফৌজদারি অপরাধের বিভিন্ন ধারায় থানায় মামলা দায়ের করেছেন। আমরা ইতোমধ্যে মশিউর রহমান মুকুল নামে একজন আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করেছি। মামলার প্রধান আসামি মফিজুর রহমান টুটুল পলাতক রয়েছে। আমরা তাকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি।

(ঢাকাটাইমস/৬ফেব্রুয়ারি/এআর/ ডিএম)