দেশের জনসংখ্যা বেড়ে ১৬ কোটি ৯৮ লাখ

প্রকাশ | ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২৩:২২

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

বাংলাদেশের জনসংখ্যা বেড়ে ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১ জনে দাঁড়িয়েছে। জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২-এর প্রাথমিক প্রতিবেদন জনসংখ্যা ছিল ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৬১৬ জন। চূড়ান্ত ফলাফলে ৪৬ লাখ ৭০ হাজার ২৯৫ জন যোগ হয়েছে। চূড়ান্ত হিসাবে ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ যোগ হয়েছে।

জনশুমারি ও গৃহগণনার চূড়ান্ত রিপোর্টে এ তথ্য জানা গেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত সাময়িক প্রতিবেদনের ওপর ‘পোস্ট ইনিউমেরেশন চেক (পিইসি) অব দ্য পপুলেশন অ্যান্ড হাউজিং সেন্সাস ২০২২’ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস)।

সোমবার শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ প্রতিবেদনের ওপর সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেনের সভাপতিত্বে সেমিনারে অংশ নেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, পরিকল্পনা বিভাগের সচিব সত্যজিত কর্মকার, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন।

জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২ প্রকল্পের পরিচালক মো. দিলদার হোসেন বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি বলেন, জনশুমারির কাজ কিন্তু থেমে নেই। এর ধারাবাহিকতায় পিইসি প্রতিবেদন প্রকাশ পেলো। এখানে যেভাবে ফলাফল এসেছে সেভাবে হয়েছে। শুমারি করতে আমরা চেষ্টার কমতি করিনি। ধাপে ধাপে দেশের প্রতিটি কোনায় আমরা পৌঁছে গেছি। সবার সহায়তায় এটা করতে সক্ষম হয়েছি। গত বছরের ২৭ জুলাই বিবিএসের মাধ্যমে বাস্তবায়িত প্রথম ডিজিটাল জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২ এর প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

বিবিএস প্রতিবেদনের সে সময় বলা হয়, বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৬১৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ আট কোটি ১৭ লাখ ১২ হাজার ৮২৪, নারী আট কোটি ৩৩ লাখ ৪৭ হাজার ২০৬ এবং তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী ১২ হাজার ৬২৯ জন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, স্বাধীনতার পর ১৯৭৪ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম শুমারিতে দেশের জনসংখ্যা ছিল ৭ কোটি ১৫ লাখ। এরপর ১৯৮১ সালে জনশুমারি অনুষ্ঠিত হয়। ওই সময় মোট জনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় আট কোটি ৭১ লাখ ১৯ হাজার ৯৬৫ জনে। ১৯৯১ সালে দেশে মোট জনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১০ কোটি ৬৩ লাখে। ২০০১ সালে চতুর্থ আদমশুমারি ও গৃহগণনা করা হয়, সে সময় জনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১২ কোটি ২৪ লাখ। ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত পঞ্চম জনশুমারিতে দেখা যায়, দেশের জনসংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৪ কোটি ৪০ লাখ। ষষ্ঠ ডিজিটাল জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২ এ বাংলাদেশের জনসংখ্যা এখন ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৬১৬ জন। প্রাথমিক গণনায় বাদ পড়েছিলেন ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ বা ৪৬ লাখ ৭০ হাজার ২৯৫ জন। তাদের যুক্ত করে চূড়ান্ত ফলাফলে দেশের জনসংখ্যা বেড়ে ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১ জনে দাঁড়িয়েছে।

বিআইডিএস প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, গণনায় সব থেকে বেশি বাদ পড়েছিল সিলেট বিভাগে ৩ দশমিক ২৮ শতাংশ এবং ময়মনসিংহে ২ দশমিক ৯৬ শতাংশ। এ ছাড়া বরিশালে ২ দশমিক ৬১, চট্টগ্রামে ২ দশমিক ৭৩, ঢাকায় ২ দশমিক ৭৭, রাজশাহীতে ২ দশমিক ০৬ এবং রংপুরে ২ দশমিক ১৪ শতাংশ মানুষ প্রাথমিক গণনায় বাদ পড়েছিলেন। বন্যার কারণে সিলেট ও ময়মনসিংহে বেশি মানুষ গণনার বাইরে ছিলেন।

এ ছাড়া প্রাথমিক জনগণনার সময় শহরে ৩ দশমিক ১৯ শতাংশ এবং গ্রামে ২ দশমিক ৫৪ শতাংশ মানুষ বাদ পড়েছিলেন। উপজেলা সদরে ২ দশমিক ৬২, পৌরসভায় ২ দশমিক ৯৯ এবং সিটি করপোরেশন এলাকায় ৩ দশমিক ৭০ শতাংশ মানুষ বাদ পড়েছিলেন।

প্রতিবেদনে আরও উঠে এসেছে, এবারের জনশুমারিতে সব থেকে কম মানুষ বাদ পড়েছেন। সব থেকে বেশি বাদ পড়েছিলেন ২০০১ সালের জনশুমারিতে ৪ দশমিক ৯৮ শতাংশ এবং ২০১১ সালের জনশুমারিতে ৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ। তবে ২০২২ সালের জনশুমারিতে মাত্র ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ মানুষ বাদ পড়েছেন।

এ বিষয়ে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব সত্যজিত কর্মকার বলেন, প্রাথমিক গণনায় যারা বাদ পড়েছিলেন তাদের সবাইকে গণনার মধ্যে নেওয়া হয়েছে। এজন্যই আমরা এই কাজ সম্পাদন করেছি। এখন কেউ বলতে পারবেন না যে কেউ বাদ পড়েছেন। মূলত বন্যার কারণে সিলেট এলাকায় বেশি মানুষ গণনার বাইরে ছিলেন।

‘এ ছাড়া শহর এলাকায় বেশি মানুষ গণনার বাইরে ছিলেন। কারণ দেখা যায়, শহরে অনেকের বাসায় প্রবেশ করা যায় না। এ ছাড়া অনেকে কাজের জন্য সকাল সকাল বাসার বাইরে চলে যান’— যোগ করেন তিনি।

ঢাকাটাইমস/০৬ফেব্রুয়ারি/আরকেএইচ