পদ্মায় দুই স্পিডবোর্ট সংঘর্ষ: ৫৫ ঘণ্টা পর আরও দুজনের মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশ | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২২:১২

ফরিদপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

ফরিদপুরের পদ্মা নদীতে দুই স্পিডবোটের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনার ৫৫ ঘণ্টা পর নিখোঁজ দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকালে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার চর ঝাউকবান্দা এলাকায় পদ্মা নদী থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে দমকল বাহিনীর ডুবরিরা।

ওই দুই ব্যক্তিরা হলেন- ফরিদপুর সদরের হাট গোবিন্দপুর এলাকার কাশেম মৃধার ছেলে দাউদ মৃধা (৪৬) ও চরভদ্রাসনের গাজিরটেক ইউনিয়নের তেলিডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দ কুদ্দুস খন্দকারের ছেলে রানা খন্দকার (২৩)।

চরভদ্রাসন উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহত দুই পরিবারের সদস্যদের হাতে মরদেহ দুটি হস্তান্তর করা হয়েছে।

এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট তিনজনের মৃত্যুর বিষয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। এছাড়া আরও তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন বলে তাদের স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে।

গত রবিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে  ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে পদ্মা নদীতে দুই স্পিডবোটের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে একটি স্পিডবোট মৈনট থেকে যাত্রী নিয়ে গোপালপুর ঘাটের দিকে আসছিল। পাশাপাশি গোপালপুর ঘাট থেকে একটি যাত্রীবিহীন স্পিডবোট মৈনট ঘাটের দিকে যাওয়ার পথে ঘন কুয়াশার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

দুর্ঘটনা কবলিত স্পিডবোটের বেঁচে যাওয়া যাত্রী ইমরান হোসেন বলেন, ‘স্পিডবোটে জীবন রক্ষকারী কোনো সরঞ্জাম ছিল না। স্পিডবোটের চালক তাদের লাইফ জ্যাকেটও দেননি’। 

দুর্ঘটনার দিন সুকুমার হালদার (৬৫) নামে এক যাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।

তিনি ফরিদপুর শহরের গুহ লক্ষীপুর এলাকার বাসিন্দা শিশির হালদারের ছেলে।

মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে ফরিদপুর দমকল বাহিনীর ছয় সদস্যের একটি দল উদ্ধার অভিযান শুরু করে। পরে তাদের সাথে ঢাকায় অবস্থিত দমকল বাহিনীর সদর দপ্তর থেকে আরও পাঁচ সদস্যের আরেকটি ডুবরি দল যোগ দেন।

ফরিদপুর দমকল বাহিনীর ডুবরি দলের দল প্রধান মো. হান্নান বলেন, মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। তৃতীয় দফার শেষ পর্যায়ে মঙ্গলবার বিকাল ৫টার দিকে যে এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে তার থেকে আনুমানিক ২০০ মিটার দূরে পানির নিচ থেকে মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়।

এ উদ্ধার কাজ পরিচালনার সময় চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানজিলা কবির, চরভদ্রাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিন্টু মন্ডল, চর ঝাউকান্দা ইউপি চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান মৃধা ও চরভদ্রাসন সদরের ইউপি চেয়ারম্যান আজাদ খান উপস্থিত ছিলেন।

এ দুর্ঘটনার শিকার হয়ে এখন পর্যন্ত আরও তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।

তারা হলেন, ফরিদপুর সদরের কাফুরা এলাকার জয় গোস্বামীর ছেলে গোপাল গোস্বামী (৩৩), চরভদ্রাসন সদর ইউনিয়নের ফাজেল খাঁর ডাঙ্গী গ্রামের চান মিয়ার ছেলে শহীদ শেখ (৩৬) ও সদরপুরের মনিকোঠা এলাকার মো. খোকন। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানজিলা কবির বলেন, মরদেহ দুটি নিহতের পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় আরও তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের সন্ধানে বুধবার সকাল ৯টা থেকে ডুবুরি দল আবার উদ্ধার অভিযান শুরু করবে।

চরভদ্রাসন থানার ভারপ্রপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিন্টু মন্ডল বলেন, এ ঘটনায় সিএনডবি ঘাট নৌপুলিশের এক কর্মকর্তা বাদী হয়ে চরভদ্রাসন থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন রবিবার রাতে।

(ঢাকাটাইমস/৭ফেব্রুয়ারি/এসএ)