শিশু-কিশোরদের পদচারণায় মুখরিত বইমেলা, শিশুচত্বর আরও বড় করার দাবি

প্রকাশ | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৫:৩৩ | আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৫:৪৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

ক্রেতা দর্শনার্থীদের ভিড়ে জমে উঠেছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা। এছাড়া ছুটির দিন শিশু-কিশোরদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে বইমেলার শিশুচত্বর। মেলার ১৭তম দিনে শুক্রবার সকাল থেকেই শিশুদের পদচারণে মুখর ছিল শিশুচত্বর।

করোনা পরিস্থিতির কারণে বিগত বছরে তেমন জমে ওঠেনি বইমেলা। শিশুচত্ত্বরে ‘সিসিমপ‍ুর’ মঞ্চে হালুম, টুকটুকি আর ইকড়ির উপস্থিতি ছিল না। তখন সংক্রমণের কারণে শিশুদের আগমনও কম ছিল। তবে এবার শিশুদের আগমন বেড়েছে। এবারের বই মেলায় প্রায় সাড়ে ৫০০ স্টলের মধ্যে শিশু চত্বরের স্টলের সংখ্যা প্রায় ১০০টি। এর মধ্যে ঢাকা কমিক্স, তাকধুম, ঝিলমিল, টইটম্বুর, ঘাস্পফড়িং অন্যতম। এসব স্টল থেকে শিশু-কিশোররা পছন্দের কমিকস, রূপকথা, গল্প, সায়েন্স ফিকশন, অঙ্ক নিয়ে মজার খেলা ও ছড়ার বই সংগ্রহ করছে।

সরেজমিনে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টায় বইমেলার শিশুচত্ত্বরে গিয়ে দেখা যায়, সিসিমপুর দেখতে বাচ্চাদের ভিড়। তবে জায়গা ছোট হওয়ায় গাদাগাদি করে কেউবা বাবার ঘাড়ে চেপে সিসিমপুর উপভোগ করতে দেখা যায়। 

এদিকে সিসিমপুরের জায়গা বড় করার দাবি জানিয়েছেন অভিভাবকরা। ফারুক নামে এক অভিভাবক ঢাকা টাইমসকে বলেন, শিশু চত্বর ও সিসিমপুরের জায়গাটা বেশ ছোট হয়ে গেছে। বাচ্চাদের কথা বিবেচনা করে কতৃপক্ষের উচিৎ এই জায়গার পরিধি আরও বড় করা।

বইমেলার শিশুচত্ত্বরে কথা হয় ছোট্ট শিশু ইমতিয়াজ সজিবের সঙ্গে। বাবা-মায়ের সঙ্গে মেলায় এসেছে সে। জীবনের প্রথম বইমেলায় এসে উচ্ছ্বাসিত সজিব ঢাকাটাইমসকে বলে, মিনার কার্টুন, টম এন্ড জেরির বই কিনেছি। আরো অনেক বই কিনব।

আদিগন্ত প্রকাশনের বই বিক্রেতা নাইমা আফরোজ ঢাকাটাইমসকে বলেন, এবারের বইমেলায় বিজ্ঞানভিত্তিক বই বেশি বিক্রি হচ্ছে। বাচ্চাদেরকে তাদের পছন্দের বিজ্ঞানভিত্তিক বই কিনে দিচ্ছেন অভিভাবকরা।

আদিগন্ত স্টলের সামনে  সৈয়দ শাকিলুর রহমান নামে এক অভিভাবক বলেন, বিজ্ঞানের বিভিন্ন কার্যক্রম জানার আগ্রহ আছে বাচ্চাদের। আমার বাচ্চা তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ে। ও ছোটবেলা থেকেই আমাকে বলে সাইন্স নিয়ে পড়বে। মেলায় এসে ওর জন্য বেশকিছু বিজ্ঞানের বই কিনেছি।

জয়ন্ত শর্মা নামে আরেক অভিভাবক ঢাকাটাইমসকে বলেন, প্রতিবার ছেলেকে নিয়ে বইমেলায় আসা হয়। আমি নিজেও বই পড়তে পছন্দ করি। কিন্তু বইমেলায় আসলে শিশু চত্ত্বরেই পুরো সময় কেটে যায়। এই জায়গায় শিশুদের সব ধরনের বই পাওয়া যায়, পাশাপাশি সিসিমপুর দেখানো হয়। ছেলে এখান থেকে বের হতে চায় না। 

ফারুক আহমেদ চাকরি করেন রাজধানীর গোলাপবাগের একটি স্কুলে। এদিন স্ত্রীসহ দুই কন্যাকে নিয়ে বইমেলায় এসেছেন তিনি। ঢাকাটাইমসের প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপে তিনি বলেন, চাকরির জন্য ছুটির দিন ব্যতীত অন্য দিনে বইমেলায় আসা হয়না। এদিন পরিবারের সঙ্গে সাধারণত বাসাতেই সময় কাটে। তবে বইমেলা এলে সপরিবারে বইমেলায় আসা হয়।

তিনি বলেন, বাচ্চাদের পছন্দের বেশকিছু কার্টুনের বই কিনেছে। তাদের সঙ্গে সিসিমপুর দেখলাম। বাচ্চারা খুব উপভোগ করেছে।

অপরদিকে সিসিমপুরের জায়গা বড় করতে অভিভাবকদের দাবিতে সমর্থন জানিয়ে সিসিমপুরের মূল প্রতিষ্ঠান সিসেমি ওয়াকর্শপ বাংলাদেশের গবেষক রাইসুল ইসলাম সৈকত ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, জায়গাটা ছোট হওয়ার কারণে সিসিমপুরের আনন্দ অনেকটা কমে গেছে। আমরা টিভি প্রোগ্রামের ধারণা থেকে বের হয়ে শিশুদের সব কাজে সম্প্রসারণ করতে যাচ্ছি সিসিমপুরকে। পাঁচ বছর মেয়াদী কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আরো বেশি শিক্ষামূলক করতে এবং শহর থেকে গ্রাম পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে প্রস্তুত আমরা। এজন্য এবার বড় জায়গা পেলে আরও ভালো হতো।

(ঢাকাটাইমস/১৭ফেব্রুয়ারি/এলএম/এসএম)