চাঁদপুরে ২৫০ যাত্রী নিয়ে লঞ্চডু্বির ১৮ বছর, আজও থামেনি স্বজন হারানোর কান্না

প্রকাশ | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৩:০৫ | আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৩:৫৭

চাঁদপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

চাঁদপুরের মতলবে এমভি মহারাজ লঞ্চ দুর্ঘটনার ১৮ বছর পূর্ণ হলো আজ (১৯ ফেব্রুয়ারি)। ২০০৫ সালের আজকের এ দিনে রাজধানীর সদরঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া মতলবগামী এমভি মহারাজ লঞ্চটি কালবৈশাখী ঝড়ে প্রায় আড়াই শতাধিক যাত্রী নিয়ে নারায়ণগঞ্জের পাগলা নামক স্থানে উল্টে যায়।

এতে লঞ্চে থাকা প্রায় দুই শতাধিক বিভিন্ন বয়সী মানুষ প্রাণ হারায়। লঞ্চটিতে মতলব দক্ষিণ ও উত্তর উপজেলার যাত্রী ছাড়াও চাঁদপুর, শরীয়তপুর ও ভোলাসহ বিভিন্ন জেলা-উপজেলার যাত্রী ছিল।

যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের মধ্যে ছিলেন নারায়ণপুর ডিগ্রি কলেজের অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী, তার কন্যা মতলব কচিকাঁচা প্রি-ক্যাডেট স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী শিলাত জাহান অর্থি, প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আব্দুল হাই মাস্টার, আইসিডিডিআরবির ডাক্তার মো. মাসুম, দগরপুরের প্রকৌশলী ফারুক দেওয়ান, মতলব বাজারের সার ব্যবসায়ী ইয়াসিন মৃধা, ডেফোডিল ইউনিভার্সিটির কর্মকর্তা ফারুক দেওয়ানসহ পরিবারবর্গ, দশপাড়া গ্রামের মফিজুল ইসলাম, বাইশপুর গ্রামের ছোট খোকন ও বড় খোকন, মতলব উত্তরের বারহাতিয়া গ্রামের ভাঙারি ব্যবসায়ী শাহ আলমসহ নাম না জানা অনেকে। উদ্ধার করা হয় অনেকের গলিত লাশ।

উদ্ধারকৃত লাশগুলো তখন মতলব দক্ষিণ থানার সামনে সারিবদ্ধভাবে তাঁবু টানিয়ে রাখা হয়েছিল। স্বজনদের আহাজারিতে পুরো মতলবে শোকের মাতম নেমে আসে। অধিকাংশ লাশের মুখমণ্ডল ও শরীর গলে যাওয়ায় তাদের চিনতে আত্মীয়স্বজনদের হিমশিম খেতে হয়েছিল। পরনে থাকা পোশাক এবং জন্মগত চিহ্ন দেখে অনেক লাশ শনাক্ত করেন স্বজনরা।

আর যেসকল লাশের কোনো পরিচয় পাওয়া যায়নি তাদের ছবি তুলে লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে ঢাকিরগাঁও রিয়াজুল জান্নাত কবরস্থানে দাফন করা হয়। প্রিয় মানুষের লাশ খুঁজে না পাওয়া স্বজনরা দূর-দূরান্ত থেকে এসে কবর জিয়ারত করেন। এ ছাড়া অন্য কোনো উপায় ছিল না তখন।

দুর্ঘটনায় নিহতের স্মরণে আজ বিভিন্ন মসজিদ ও এতিমখানায় মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেছে স্বজনরা। মতলব সূর্যমুখী কচিকাঁচা মেলার উদ্যোগে বিদ্যালয়ের ছাত্রী শিলাত জাহান অর্থিসহ সকল নিহতের রুহের মাগফেরাত কামনায় মিলাদ মাহফিল ও শোকসভার আয়োজন করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১৯ফেব্রুয়ারি/এআর)