শিশুকে শেকলে বেঁধে রাতভর নির্যাতন, গ্রেপ্তার ব্যবসায়ীকে কারাগারে প্রেরণ
ঝালকাঠির নলছিটিতে সুপারি চুরির অপবাদে ১১ বছরের এক শিশু ও তার বাবাকে শেকল দিয়ে গাছে বেঁধে টানা ১১ ঘণ্টা নির্যাতনের ঘটনায় লতিফ খান (৫৫) নামে এক ডেকোরেটর ব্যবসায়ীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
বুধবার দুপুরে তাকে আদালতে তোলা হলে শুনানি শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে উপজেলার তেতুলবাড়িয়া গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে সন্ধ্যায় ভুক্তভোগীর শিশুর বাবা বাবুল হাওলাদার বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন।
নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বুধবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত রবিবার রাত ১১দিকে উপজেলার রানাপাশা ইউনিয়নের তেতুলবাড়িয়া গ্রামের লতিফ খানের বাড়ির বাড়ির আঙিনায় শুকিয়ে মজুদ করে রাখা দুই কুড়ি (৪২০টি) সুপারি চুরির ঘটনা ঘটে। একই গ্রামের বাসিন্দা দিনমজুর মো. বাবুল হাওলাদার ও তার ১১ বছর বয়সী শিশু শিশু মো. ছাব্বির বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগে এনে তাদেরকে বাড়ি থেকে আটক করে নিজ বাড়িতে নিয়ে যায় লতিফ খান ও স্থানীয় কয়েকজন যুবক। পরবর্তীতে বাড়ির উঠানে আমড়া গাছের সঙ্গে শিকল দিয়ে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় ওই দুজনের উপর পাশবিক নির্যাতন চালায়। রাত ১২টার দিকে আব্বাস হাওলাদার নামে স্থানীয় এক মাংস বিক্রেতা কাঁচি দিয়ে ওই শিশুর মাথার চুল কেটে দেন। এরপর সারারাত গাছের সঙ্গে তাদেরকে বেঁধে রাখা হয়। সোমবার সকালে এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে এলাকাজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে মুচলেকা নিয়ে বাবুল হাওলাদার ও তার ছেলেকে ছেড়ে দেন লতিফ খান।
ঘটনাটি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ প্রশাসনের টনক নড়ে। এরপর অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত লতিফ খানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বুধবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হলে লতিফ খানকে জেল হাজতে পাঠায় আদালত।
নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, শিকলে বেঁধে শিশু নির্যাতনের ঘটনায় মামলা হয়েছে। ঘটনার মূলহোতা লতিফ খানকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।
(ঢাকাটাইমস/২২ফেব্রুয়ারি/এআর)
মন্তব্য করুন