জাপার সাবেক এমপির নির্দেশে যুদ্ধাপরাধ: সহযোগী ফখরুজ্জামান অবশেষে গ্রেপ্তার

প্রকাশ | ০১ মার্চ ২০২৩, ১৭:০০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে যাবজ্জবীন সাজাপ্রাপ্ত মো. ফখরুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি এম এ হান্নানের সহযোগী। মো. ফখরুজ্জামান জাপার এমপি এম এ হান্নানের নির্দেশে যুদ্ধাপরাধে জড়িত ছিলেন। সাত বছরের বেশি সময় পালিয়ে থাকার পর মঙ্গলবার রাত সাড়ে দশটার দিকে খিলগাঁও দক্ষিণ গোড়ান এলাকা থেকে তিনি গ্রেপ্তার হন।

বুধবার দুপুরে এ ব্যাপারে জানায় অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)।

অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট জানায়, ফখরুজ্জামান নিজের গ্রেপ্তার এড়াতে এতোদিন বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেছিলেন। গ্রেপ্তারের পর যুদ্ধাপরাধী ফখরুজ্জামানকে ময়মনসিংহের কোতয়ালি মডেল থানার নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। স্থানীয় পুলিশ পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ১৯৭১ সালের ২১ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তৎকালীন শান্তি কমিটির ময়মনসিংহ শহর শাখার আহ্বায়ক এম এ হান্নানের নির্দেশে পাক হানাদার বাহিনী এবং তাদের দোসররা ত্রিশালের কালির বাজার ও কানিহারী এলাকায় শতাধিক গণহত্যা, কয়েক কোটি টাকার সম্পদ লুণ্ঠন, ধর্ষণ, নির্যাতন ও অগ্নিসংযোগ করেন। এই অভিযোগে জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য এম এ হান্নান, তার ছেলে রফিক সাজ্জাদ এবং তাদের সহযোগী মো. ফখরুজ্জামানের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ১৯ মে ময়মনসিংহের ১ নম্বর আমলি আদালতে একটি মামলা করেন ত্রিশালের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রহমানের স্ত্রী রহিমা খাতুন। বিচারক মামলার এজাহারটি গ্রহণ করে সেটি ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর আদেশ দেন।

২০১৫ সালের ১০ অক্টোবর ট্রাইবুনাল আসামিদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বাংলাদেশ-১, মিস কেস নং-১১/২০১৫, ধারা-৩, আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন ১৯৭৩ মূলে পরোয়ানা জারি করলে হান্নানকে গুলশানের বাড়ি এবং ছেলে রফিক সাজ্জাদকে গুলশানের অফিস থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঘটনার পর এই মামলার অপর আসামি মো. ফখরুজ্জামান ও ছাব্বির আত্মগোপনে যান।

২০১৬ সালের ১১ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা আসামিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন শাখায় দাখিল করে। পরে ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর হরমুজ আলী, আব্দুস সাত্তার, খন্দকার গোলাম রাব্বানী, খন্দকার গোলাম সাব্বির আহমেদ ও মো. ফখরুজ্জামানসহ আটজনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ গঠন করে। এরই মধ্যে বিচার চলাকালে জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য এম এ হান্নান, তার ছেলে রফিক সাজ্জাত ও মিজানুর রহমান মিন্টু মৃত্যুবরণ করেছেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে তিন সদস্যের বেঞ্চ ২০ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহের গোলকীবাড়ী বাইলেনের প্রখ্যাত ভাস্কর আব্দুর রশিদকে অপহরণের পর জিপ গাড়ির পেছনে রশি দিয়ে বেঁধে টেনে হিঁছড়ে নির্মমভাবে হত্যা ও লাশ গুমের অপরাধে মো. ফখরুজ্জমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ভিন্ন ভিন্ন অপরাধে অন্যান্য আসামিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।

(ঢাকাটাইমস/০১মার্চ/এসএস/ইএস)