বগুড়ার তৃণমূলের মানুষের দুর্ভোগ নিয়ে দুদকের গণশুনানি
‘রুখব দুর্নীতি, গড়ব দেশ, হবে সোনার বাংলাদেশ’ স্লোগানে বগুড়ায় বুধবার দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়ে গেল দুর্নীতিবিরোধী গণশুনানি। দুর্নীতি দমন কমিশনের আয়োজনে শহরের টিটু মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত গণশুনানিতে সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে ৩৪টি অভিযোগের সরাসরি শুনানি করেন দুদক প্রধান কার্যালয়ের কমিশনার (অনুসন্ধান) ড. মোজাম্মেল হক খান। এর আগে বগুড়া জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে গণশুনানির উদ্বোধনী আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুদক কমিশনার ড. মোজাম্মেল হক খান বলেন, শুধু আইন দিয়ে কিংবা দুদকের একার পক্ষে দুর্নীতি বন্ধ করা সম্ভব নয়। দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সকলকে নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখতে হবে। সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে হলে আগে নিজেকে সচেতন হতে হবে।
দিনব্যাপী এই গণশুনানিতে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ আসে বগুড়ার সেটেলমেন্ট অফিস, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখা, ইউনিয়ন ভূমি অফিস, এসিল্যান্ড কার্যালয়, সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়, নির্বাচন অফিস, বিআরটিএ, শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালসহ বেশ কয়েকটি দপ্তরের বিরুদ্ধে। যেখানে সাধারণ মানুষেরা অবৈধ পন্থায় ঘুষ গ্রহণ, সেবা প্রদানের নামে হয়রানি, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, সেবা নিতে গিয়ে দুর্ব্যবহারের শিকার হওয়াসহ নানা অভিযোগ করেন।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অভিযোগ ছিল বগুড়া সদরের ফাঁপোড় এলাকার রাবেয়া খাতুন জমি খারিজ করে খাজনা দিতে গিয়েছিলেন ভূমি অফিসে। সেখানে খারিজ করে দেয়ার জন্যে ৩০ হাজার টাকা দাবি করেন ইউনিয়ন ভূমি অফিসার শাহীন। দাবিকৃত টাকা না দেয়ায় এখনও তার কাজ হয়নি। এদিকে বিষয়টি প্রমাণ করতে পারলে সেই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেয়া হয় শুনানিতে। এছাড়াও বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সেবা নিতে গিয়ে ঘুষের শিকার হওয়ার অভিযোগ করেন বগুড়ার সদরের গোকুলের বাসিন্দা হেলাল। তিনি দু মাস আগে তার অসুস্থ মায়ের চিকিৎসা সেবা নিতে গিয়ে তাকে ঘুষ দিতে হয় বলে দুদক কমিশানের কাছে অভিযোগ করেন হেলাল। হেলাল জানান, তার মাকে ভর্তি করানোর সময় ২০০ টাকা দিতে হয় হাসপাতাল কর্মচারীকে। পরবর্তীতে ভর্তির পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় হুইল চেয়ারের প্রয়োজন হলে আরেক কর্মচারীকে ২০০ টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে। এ ছাড়াও নার্সদের দুর্ব্যবহার করার অভিযোগ করেন হেলাল।
এ বিষয়ে শজিমেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ওই সময় সুনির্দিষ্ট প্রমানসহ অভিযোগ করলে তারা তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতেন। তবে বিষয়টি খোঁজ করা হবে। এর বিপরীতে তিরস্কার করে দুদক কমিশনার বলেন, এসব অভিযোগের কারণে এমন গণশুনানিতে আপনাদের আসাটাই লজ্জার। আপনারা ব্যবস্থা নিবেন সেটা পরের বিষয়। কিন্তু হাসপাতালের সেবার মান নিয়ে অভিযোগ পুরোনো। এ জন্য আপনাদের লজ্জা হওয়া উচিত। সাধারণ মানুষ বিপদে পড়ে আপনাদের কাছে আসে। আপনারা নিজেদের সেবার মান উন্নত করবেন- এটাই আমাদের কাম্য।(ঢাকাটাইমস/০১মার্চ/এলএ)