মৌলভীবাজারের রহস্যের আগুনে পুড়ছে বন

প্রকাশ | ১৩ মার্চ ২০২৩, ১৩:৩১

নিজস্ব প্রতিবেদক, মৌলভীবাজার

রহস্যের আগুনে পুড়েছে বন। মৌলভীবাজারের জুড়ী এবং বড়লেখা উপজেলায় পাথারিয়া হিলস্ রিজার্ভ ফরেস্ট। বড়লেখা রেঞ্জের সমনভাগ নামক সংরক্ষিত বনের আয়তন প্রায়ে ১৮৫০ হেক্টর। ওই এলাকার ধলছড়ি ও মাকাল জোরায় প্রায় ৪০ হেক্টর বন আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বেশ কিছু দিন বনে আগুন জ্বলে। অথচ নেভানোর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে স্থানীয় বন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা রহস্যজনক কারণে নীরব। তাছাড়া প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো কয়েক হাজার গাছ আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে।
সমনভাগ বনাঞ্চলের এ অংশটি ইন্দো-বার্মা জীববৈচিত্র্য হটস্পটের একটি অংশ ও এটি ভারত-বাংলাদেশের আন্ত: সীমান্তবর্তী ছয়টি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মধ্যে একটি।
তথ্য অনুযায়ী এই সমনভাগ বনাঞ্চলে প্রায় ৬০৩ প্রজাতির উদ্ভিদ ও উভচর সরীসৃপ, পাখি ও স্তন্যপ্রায়ী প্রাণীর সমন্বয়ে মোট ২০৯ প্রজাতির মেরুদণ্ডী বন্যপ্রাণী রয়েছে। ২০ প্রজাতির উভচর, ৪৫ প্রজাতির সরীসৃপ, ১১৩ প্রজাতির পাখি এবং ৩১ প্রজাতির স্তন্যপায়ীসহ অসংখ্য বিরল ও বিপন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল। সমনভাগ বনাঞ্চলটি বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মধ্যে এই বনাঞ্চল এবং উদ্ভিদ ও প্রাণী বৈচিত্র্য রক্ষায় বাংলাদেশের মধ্যে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের স্থান অন্যত। কিছু অসাধু চক্র পরিকল্পিতভাবে দীর্ঘদিন যাবত  উঁচু উঁচু টিলার গাছ, বাঁশ, পাহাড় কেটে ধ্বংসের পাশাপাশি কয়েক হাজার গাছ ও বন্যপ্রাণীসহ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ছাই করেছে। নির্বাচনী এলাকায় প্রকাশ্যে বনের ভেতর এ ধরনের কর্মকান্ড ঘটতে থাকলে দেখার কেউ নেই।

সরেজমিনে দেখা যায়, সমনভাগ বিটের ধলছড়ি ও মাকাল জোরা এলাকায় প্রায় ৪০ হেক্টর বন ভূমি আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে। আগুনে পুড়ে অজগর সাপ, মায়া হরিণ, চশমাপরা হনুমান, কচ্চপ, বনরুই, বিভিন্ন প্রজাতির বিরল কীটপতঙ্গসহ বেশ কিছু প্রজাতির বৃক্ষের ক্ষতি হয়। সম্প্রতি এই বিটের প্রায় ১০০০ হেক্টর বনভূমি দখল করেছে খাসিয়ারা। তৈরি হয়েছে পানের জুম। তারা বাঁশ ও জঙ্গল পরিষ্কার করার ফলে ধ্বংস হচ্ছে বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল বন্যপ্রাণী এখন হুমকির মুখে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সমনভাগ বিট কর্মকর্তা নুরুল ইসলামের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

বড়লেখা রেঞ্জ কর্মকর্তা শেখর রঞ্জন দাস বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/১৩মার্চ/এসএ)